ছবি: প্রতীকী
শান্তনু সেন, জলপাইগুড়ি: কৃষি ঋণ নিয়ে পরিশোধ করেননি বিজেপি বিধায়ক। তাই এবার নোটিশ পাঠাল সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতি। ১০ মে-র মধ্যে ঋণ পরিশোধ করার জন্য সময়সীমা চূড়ান্ত করে দেওয়া হয়েছে। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে রাজনৈতিক মহলে। তৃণমূলের দাবি, কৃষক না হয়েও চাষ আবাদের জন্য ঋণ নিয়ে টাকা আটকে রেখেছেন ময়নাগুড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক কৌশিক রায়। যদিও কৌশিকবাবুর দাবি, নোটিসর কপি তিনি হাতে পাননি। তবে যে সময় ঋণ নিয়ে ছিলেন সেই সময় কৃষি কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। সূত্রের খবর, শেষপর্যন্ত মঙ্গলসূত্র, গয়না বন্ধক দিয়ে স্বামীর ব্যাংক ঋণ মিটিয়েছেন বিজেপি বিধায়কের স্ত্রী।
জানা গিয়েছে, ২০১০ সালের ৪ নভেম্বর ময়নাগুড়ির চুকানী পাড়া সমবায় উন্নয়ন সমিতি থেকে ২৩ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে ছিলেন কৌশিক রায়। পরবর্তী সময় একটি টাকাও পরিশোধ করেননি তিনি।সুদ সমেত তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৯ হাজার ৪৭৫ টাকা। পেশায় শিক্ষক কৌশিকবাবু গত বিধানসভা নির্বাচনে ময়নাগুড়ি বিধানসভা আসনে বিজেপির প্রতীকে নির্বাচিত হন। তবে ভোটে জেতার পর থেকে কাজকর্ম নিয়ে দলের জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয় তাঁর। স্বাভাবিকভাবেই বিধায়কের ঋণখেলাপির বিষয়টি নিয়ে চর্চা শুরু হলেও ‘ওটা ওঁর ব্যক্তিগত বিষয়’ বলে এড়িয়ে গিয়েছেন বিজেপির জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি বাপি গোস্বামী।
এদিকে ঋণ নিয়ে পরিশোধ না করার বিষয়টি নিয়ে বিজেপির বিধায়ক কৌশিক রায়কে আক্রমণ করতে ছাড়েননি সেন্ট্রাল কোঅপারেটিভ ব্যাংকের চেয়ারম্যান তথা তৃণমূল নেতা সৌরভ চক্রবর্তী। তাঁর অভিযোগ, “বিজেপির বিধায়ক কৌশিক রায় কোনওদিন কৃষি কাজ করেননি। কার্যত মিথ্যে পরিচয় দিয়ে বাম আমলে ঋণ নিয়েছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে একটি টাকাও পরিশোধ না করায় আজ তাকে ঋণখেলাপির নোটিস ধরানো হয়েছে। নির্দিষ্ট দিনের মধ্যে টাকা পরিশোধ না করলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
ঋণ নিয়েছিলেন এবং সময় মতো তা পরিশোধ করতে না পারেননি সেকথা স্বীকার করে নিয়েছেন বিধায়ক। তবে তিনি কৃষিকাজ না করে পরিচয় ভাঙিয়ে ঋণ নিয়েছিলেন এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে তাঁর দাবি, ২০১০ সালে চাকরি পাননি তিনি। সংসারের হাল ধরতে ঋণ নিয়ে ধান চাষ করেছিলেন। পরে প্রাথমিকে শিক্ষকতার চাকরি পান। কিন্তু আর্থিক সমস্যার কারণে সময়মতো ঋণশোধ করতে পারেনি। তাঁকে মৌখিকভাবে জানালে আগেই ধার মেটানোর চেষ্টা চালাতেন। একইসঙ্গে বিজেপি বিধায়কের অভিযোগ, রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়েই তাঁকে এবং তার দলকে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বদনাম করার জন্যই নোটিস ধরানো হচ্ছে। তবে এই ভাবে তৃণমূল কোনও সুবিধা করতে পারবেনা বলে দাবি তাঁর।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.