Advertisement
Advertisement
করিমপুর

লাফিয়ে বাড়ছে বিজেপির সদস্য সংখ্যা, মহুয়ার গড়ে চিন্তায় তৃণমূল

করিমপুরে বিধানসভা উপনির্বাচনের আগে বিজেপির চমকপ্রদ উত্থান।

BJP Membership drive huge success at Karimpur before bypoll
Published by: Subhamay Mandal
  • Posted:September 3, 2019 12:38 pm
  • Updated:September 3, 2019 12:38 pm  

পলাশ পাত্র, তেহট্ট: গত লোকসভা ভোটে পিছিয়ে থাকা বিজেপির করিমপুরের উপনির্বাচনের আগে সদস্য সংখ্যা ব্যাপক ভাবে বেড়ে যাওয়ায় শাসকদল চিন্তিত। লোকসভা ভোটের পর বিজেপির সদস্য সংগ্রহ অভিযানে দুই ব্লক মিলিয়ে করিমপুর বিধানসভা কেন্দ্রে সদস্য সংখ্যা ৫০৭৭৬। ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত চলবে এই সদস্য অভিযান। সেক্ষেত্রে সদস্য সংখ্যা অনেকটা বেড়ে যাবে বলে আশাবাদী বিজেপি নেতৃত্ব। যা ২০১৫ সালের সদস্য সংখ্যার তুলনায় অনেক বেশি।

তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল করিমপুর দুই ব্লকটি সংখ্যালঘু অধ্যুষিত হলেও এখানে বিজেপির সদস্য সংগ্রহ হয়েছে ১৯,৫৪৫। অথচ লোকসভা ভোটে সংখ্যালঘু অধ্যুষিত করিমপুর দুই ব্লকে ছ’টি পঞ্চায়েতে তৃণমূল বিজেপির থেকে বাইশ হাজার লিড পেয়ে ৩৯০০০ ভোট পায়। জেড পি ১ ও ২ নিয়ে করিমপুর দুই ব্লক। জেড পি ১-এ বিজেপির সদস্য সংখ্যা ৯৯৯৬। জেড পি ২-এ হয়েছে ৯৫৪৯। করিমপুর ১ ব্লক জেড পি ৪, ৫, ৬ নিয়ে বিজেপির সদস্য হয়েছে ৩১২৩১। এই ব্যাপক হারে বিজেপির সদস্যসংখ্যা বৃদ্ধি নিঃসন্দেহে তৃণমূলকে ভাবাবে।

১৯৭২ সালে কংগ্রেস নেতা অরবিন্দ মণ্ডল বিধায়ক হন। এরপর করিমপুর বিধানসভা কেন্দ্রে দীর্ঘ চুয়াল্লিশ বছর পর ২০১৬ সালে কোনও ডানপন্থী বিধায়ক জয়লাভ করেন। তৃণমূল নেত্রী মহুয়া মৈত্র ষোলো হাজারের বেশি ভোটে সিপিএম প্রার্থীকে পরাজিত করেন। ২০১৬ সালে বিধায়ক হওয়া মহুয়া মৈত্র এবছর লোকসভা ভোটে কৃষ্ণনগর কেন্দ্রের সাংসদ হয়েছেন। তাই করিমপুর বিধানসভা কেন্দ্রটিতে উপনির্বাচন আসন্ন। এই কেন্দ্রে প্রার্থীকে হবে – তা নিয়েও শাসকদল তৃণমূল ও বিরোধী বিজেপির মধ্যে জল্পনা তুঙ্গে।

Advertisement

শুক্রবারই করিমপুর দুই ব্লকের দোগাছি গ্রামে বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদারের সামনে এ নিয়ে মারামারি, মাথা ফাটাফাটি, থানা পুলিশ হয়েছে। করিমপুর থেকে স্থানীয় প্রার্থীর দাবিতে নব্য ও পুরাতনদের মধ্যে গন্ডগোলে বিজেপির সভা পণ্ডও হয়েছে। করিমপুর বিধানসভা কেন্দ্রে ভোটার রয়েছে দু লক্ষ চল্লিশ হাজারের কাছাকাছি। গত লোকসভা ভোটে তৃণমূলের প্রাপ্ত ভোট ৮৭৫১৩। বিজেপির ৭৩১৭৩, কংগ্রেসের ২২০৯৭ ও সিপিএমের ১৭৬০৯। অর্থাৎ কংগ্রেস-সিপিএমের মিলিত ভোট ৩৯৭০৬।

প্রসঙ্গত, গত বিধানসভায় সিপিএম প্রার্থীকে প্রায় ষোলো হাজার ভোটে পরাজিত করে বিধায়ক হন মহুয়া মৈত্র। কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করে সিপিএম পেয়েছিল ৭৫০০০ ভোট। গত বিধানসভায় বিজেপির এই কেন্দ্রে ভোট ছিল ২৩৩০২। অর্থাৎ গত বিধানসভা ভোটের থেকে প্রায় পঞ্চাশ হাজার ভোট বাড়িয়ে নেয় বিজেপি। গত বিধানসভা ভোটের নিরিখে কংগ্রেস-সিপিএম জোটের ৩৭৩০০ ভোট কমেছে। আর শুধু সিপিএম ধরলে প্রায় ৫৮ হাজার ভোট কমেছে তাদের। করিমপুর দুই পঞ্চায়েতে বিজেপির আসনসংখ্যা বেশি হলেও পঞ্চায়েত গঠন করতে প্রায় এক বছর চার মাস অপেক্ষা করতে হয়। ক্ষুব্ধ হন সাধারণ মানুষ।

গত পঞ্চায়েতে ভোট দিতে পারেনি বহু মানুষ। সুদে আসলে লোকসভায় আটটি পঞ্চায়েতের করিমপুর এক ব্লকে মানুষ উজাড় করে বিজেপিকে ভোট দিয়েছেন। এখানে তৃণমূল চল্লিশ হাজার ভোট পেলেও বিজেপির থেকে দশ হাজার ভোটে পিছিয়ে থাকে। কিছুদিন আগে করিমপুরে তৃণমূল, সিপিএম, কংগ্রেসের কয়েক হাজার কর্মী-সমর্থক বিজেপিতে যোগদান করেন। যোগদান করেছেন সিপিএমের প্রাক্তন বিধায়ক সমর ঘোষও। ঠিক এই অবস্থায় করিমপুর বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে আগে একের পর এক হেভিওয়েট বিজেপি নেতাদের আনাগোনা শুরু হয়েছে। প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়, জয়প্রকাশ মজুমদারের পর মঙ্গলবার করিমপুরে আসছে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। এছাড়া একের পর এক কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের আসার কথা রয়েছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে।

করিমপুর আসনটিকে পাখির চোখ করা ও সদস্য বেড়ে যাওয়া নিয়ে তৃণমূলের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকেই চিন্তিত। এ প্রসঙ্গে সংখ্যালঘু অধ্যুষিত করিমপুর ২ ব্লকের তৃণমূলের সভাপতি রাজু মল্লিক অবশ্য অন্য কথা বলছেন। তিনি বলেন, বিজেপির লোকজন বাড়ি বাড়ি গিয়ে শৌচাগার, লোন বা আরও অনেক কিছু পাইয়ে দেওয়ার লোভ দেখিয়ে সদস্য করছে। তাতে সদস্য বাড়ছে। এসব করে করিমপুরে জেতা যাবে না।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement