রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: উপনির্বাচনে (WB By-Elections) এই প্রথমবার গেরুয়া শিবিরের হাতছাড়া হয়েছে আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রেটি। রেকর্ড ব্যবধানে তা বিজেপির থেকে ছিনিয়ে নিয়েছেন তৃণমূলের তারকা প্রার্থী শত্রুঘ্ন সিনহা। হার কেন? বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্বের কাছে সেই কৈফিয়ৎ তলব করেছিলেন ক্ষুব্ধ অমিত শাহ, জেপি নাড্ডা। দিল্লিতে তলব করা হয়েছিল বঙ্গ বিজেপির সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তীকে। এবার হারের অন্তর্তদন্ত করে উঠে আসছে ‘বিস্ফোরক’ তথ্য। অভিযোগ, হারের নেপথ্যে দলীয় অন্তর্দ্বন্দ্ব। যদিও বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে চাননি পরাজিত প্রার্থী অগ্নিমিত্রা পল। জানিয়েছেন, যা বলার দিল্লিতে রিপোর্ট পাঠিয়েই বলবেন।
সূত্রের খবর, দলের অন্দরে নাকি অগ্নিমিত্রা নিজের মত প্রকাশ করতে গিয়ে জানিয়েছেন, রাজ্য শীর্ষনেতৃত্বের একাংশ চায়নি যে আসানসোলে (Asansol) বিজেপি জিতুক। তাই বিভিন্ন ক্ষেত্রে অসহযোগিতা করা হয়েছে। এমনকী রাজ্য বিজেপির (BJP) সাধারণ সম্পাদক হওয়া সত্ত্বেও অগ্নিমিত্রাকেও বৈঠকে ডাকা হয়নি। তা নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন অগ্নিমিত্রা। এসব কথা জানিয়ে দিল্লিতে বিজেপি শীর্ষ নেতাদের কাছে রিপোর্টও পাঠাতে চলেছেন অগ্নিমিত্রা, সূত্রের খবর এমনই।
উপনির্বাচনের আগেই রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন উঠেছিল, দিলীপ ঘোষ-লকেট চট্টোপাধ্যায়রা চান না যে আসানসোল উপনির্বাচনে জয়ী হোক বিজেপি। দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে তাঁদের তীব্র মতানৈক্যের প্রভাব যে ভোটযুদ্ধেও পড়বে, সেই আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল দলের অন্দরেই। এমনকী ১৬ তারিখ উপনির্বাচনের ফলপ্রকাশের পর যখন অগ্নিমিত্রা পল (Agnimitra Paul) সাড়ে তিন লক্ষ ভোটের ব্যবধানে শত্রুঘ্ন সিনহার কাছে হারলেন, সেদিনও এই গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল কান পাতলেই। তবে শীর্ষ নেতৃত্বকে অন্তর্ঘাতের তত্ত্বে রিপোর্ট দেওয়ার বিষয়টি দলে তো বটেই, দলের বাইরেও যথেষ্ট আলোড়ন ফেলবে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
আসানসোল উপনির্বাচনে হারের পর থেকে বিজেপির অন্দরে ক্ষোভ আরও বেড়েছে। একের পর এক নেতারা রাজ্যের শীর্ষ নেতৃত্বকে তোপ দেগে পদত্য়াগ করছেন। কার্যত বঙ্গ বিজেপির অন্দরের বিদ্রোহ প্রকাশ্যে এসে গিয়েছে। ড্যামেজ কন্ট্রোলেরও আর তেমন রাস্তা নেই। এই অবস্থায় রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদারও সমালোচনার মুখে। এরপর হারের নেপথ্যে অন্তর্দ্বন্দ্বের রিপোর্টই যদি অগ্নিমিত্রা দিল্লিতে পাঠান, তাহলে তা নিয়ে অশান্তি চরমে ওঠার আশঙ্কা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.