Advertisement
Advertisement
Madarihat By polls

এই প্রথম জোড়াফুল ফুটল মাদারিহাটে! ‘বার্লা কাঁটা’য় বিদ্ধ পদ্ম?

এবার বিধানসভা উপনির্বাচনের আগে ভিন্ন সুর ছিল এই চা বলয়ে।

BJP losses Madarihat to TMC in WB By polls
Published by: Paramita Paul
  • Posted:November 23, 2024 2:40 pm
  • Updated:November 23, 2024 7:03 pm  

রাজ কুমার, আলিপুরদুয়ার: ‘উত্তাপহীন’ উপনির্বাচনে সব রাজনৈতিক দলের নজর ছিল মাদারিহাট কেন্দ্রে। কারণ, ছয় বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে একমাত্র এই কেন্দ্রটিই ছিল বিজেপির দখলে। ‘বার্লা’ কাঁটা উপরে এখানে ফের পদ্ম ফোটে না কি উন্নয়নে ভর কর সবুজ ঝড় ওঠে, সেদিকে নজর ছিল সকলের। কিন্তু ভোটবাক্স খুলতেই বোঝা গেল প্রার্থী নির্বাচনের ‘গেরো’ আর ‘বার্লা কাঁটা’য় বিদ্ধ পদ্ম। বাংলার নির্বাচনী রাজনীতির ইতিহাসে প্রথমবার মাদারিহাট বিধানসভাটি জিতে নিল তৃণমূল।

চা বলয়ে গোটা বীরপাড়া-মাদারিহাট ব্লক ছাড়াও জলপাইগুড়ি জেলার সাকোয়াঝোরা ও বিন্নাগুড়ি – এই দুটি গ্রাম পঞ্চায়েত মাদারিহাট বিধানসভার অন্তর্ভূক্ত। এর আওতায় রয়েছে টোটোপাড়াও। ২০১৪ সালের প্রবল ‘মোদি ঝড়ে’ও লোকসভা ভোটে আলিপুরদুয়ার কেন্দ্রটি জিতেছিল তৃণমূল। তবে মাদারিহাট বিধানসভায় এগিয়ে ছিল বিজেপি। সেই ট্রেন্ড ধরে রেখেই ২০১৬-র বিধানসভাটি জিতে নিয়েছিল গেরুয়া শিবির। এর পর ২০১৯-এর লোকসভা, ২০২১-এর বিধানসভা এমনকী, ২০২৪ সালের লোকসভাতেও এখানে পদ্ম ফুটেছে। কিন্তু এবার বিধানসভা উপনির্বাচনের আগে ভিন্ন সুর ছিল এই চা বলয়ে।

Advertisement

চব্বিশের লোকসভা ভোটের সময় থেকে বিজেপির মাথাব্যথা বাড়িয়েছেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জন বার্লা। তবু কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের হস্তক্ষেপে লোকসভা ভোটে জয় এসেছিল। কিন্তু উপনির্বাচনের আগে থেকেই ‘বেসুরো’ ছিলেন তিনি। বার বার তোপ দেগেছেন দলের বিরুদ্ধেই। বিজেপি প্রার্থীর প্রচারে দেখা যায়নি জন বার্লাকে। এমনকী, স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গেও তাঁকে ওঠাবসা করতে দেখা গিয়েছিল। রাজনৈতিক মহলের একাংশের দাবি, বার্লা তলায়-তলায় ঘাসফুল শিবিরকে সাহায্য করেছেন। শুধু ‘বার্লা ফ্যাক্টর’ নয়, বিজেপির বিরুদ্ধে গিয়েছে প্রার্থী বাছাইও। উপনির্বাচনের লড়াইয়ে মাঠে নামিয়েছিল ভূমিপুত্র রাহুল লোহারকে। বিজেপি প্রার্থী রাহুল লোহারের বাবা তারকেশ্বর লোহার সিটু নেতা ছিলেন। বীরপাড়ার দলগাঁও চাবাগানের এই সিটু নেতার বিরুদ্ধে শ্রমিকদের অত্যাচার করার অভিযোগ ছিল। ২০০৩ সালের ৬ নভেম্বর ক্ষুব্ধ চাবাগানের শ্রমিকরা দলবদ্ধভাবে তারকেশ্বর লোহারের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। সেদিন তারকেশ্বর লোহারের বাড়িতে থাকা ১৯ জন আগুনে পুড়ে মারা যান। কোনওক্রমে পালিয়ে প্রাণে বাঁচেন তিনি। তাঁর ছেলেকে প্রার্থী করার বিষয়টি ভালোভাবে নেয়নি এলাকাবাসী।

প্রায় ২৮ হাজার ভোটে তৃণমূল প্রার্থী জয়প্রকাশ টোপ্পোর কাছে হেরে বিজেপি প্রার্থী রাহুল লোহার এবং আলিপুরদুয়ারে সাংসদ মনোজ টিগ্গা মেনে নিয়েছেনস এলাকায় রাজ্য সরকারের উন্নয়ন বড় ব্যবধান গড়ে দিয়েছে। চা বাগানের শ্রমিকদের পাট্টা দেওয়া থেকে শুরু করে, শ্রমিকদের সন্তানদের জন্য ক্রেস তৈরি, চা শ্রমিকদের পিএফের জন্য আন্দোলনের মতো বিষয়গুলিও ঘাসফুলকে অক্সিজেন জুগিয়েছে। ডলোমাইট দূষণ থেকে রেলের ওভার ব্রিজ তৈরিতে রেলের গাছাড়া মনোভাব নিয়েও তারা লাগাতার আন্দোলন করেছে। তা মাদারিহাটের মানুষের মধ্যে প্রভাবও ফেলেচে। তা স্পষ্ট প্রতিফলিত হয়েছে ভোটবাক্সে। আর এই তিন কারণের যোগফলেই প্রথমবার ঘাসফুল ফুটল মাদারিহাটে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement