সংবাদ প্রতিদিন ব্যুরো: নতুন রাজনৈতিক কেরিয়ারে পা রেখেই ঝাঁজ টের পাওয়ালেন শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikary)। আর তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বকে নিজের মূল প্রতিপক্ষ বলে চিহ্নিত করে নাম না করেই গর্জে উঠলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। মেদিনীপুর কলেজ মাঠের মঞ্চ থেকে বিজেপি (BJP) নেতার হুঙ্কার, ”তোলাবাজ ভাইপো হঠাও।” এতদিন যা চাপা ছিল, সেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে যাবতীয় ক্ষোভ এদিন উগরে দিলেন এই সভামঞ্চ থেকেই। অমিত শাহকে ‘দাদা’ বলে সম্বোধন করে বললেন, ”আমার যখন কোভিড হয়েছিল, দলের কেউ খোঁজ নেননি। অমিতজি খোঁজ নিয়েছেন।” যদিও তাঁর এই মন্তব্য়ের পরই পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের পালটা দাবি, ”শুভেন্দু মিথ্যে বলছেন। কোভিডের সময় আমরা ওঁর খোঁজ নিয়েছিলাম, দিদিও ফোনে খোঁজ নিয়েছিলেন।”
শুভেন্দুর দলবদলের জল্পনার গোড়া থেকেই গুঞ্জন চলছিল, তিনি গেরুয়া শিবির মুখ্যমন্ত্রীর পদপ্রার্থী হতে পারেন। অমিত শাহ নিজেও এদিন এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্য়মকে জানান যে বাংলার নেত্রীকে হারিয়ে বাংলার নেতাই হবেন মুখ্যমন্ত্রী। এই ইঙ্গিত ঠিক কার দিকে, তা বেশ টের পাচ্ছিলেন সকলে। কিন্তু শনিবার শুভেন্দু নিজেই তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্যে তা খারিজ করে দিলেন। বললেন, ”আপনাদের সকলকে আশ্বস্ত করছি, শুভেন্দু কারও উপর মাতব্বরি করবে না, কর্মী হিসেবে কাজ করবে। পতাকা লাগাতে বললে, তাইই লাগাব। পার্টি যা নির্দেশ দেবে, সেটাই করব। আমি ছাত্র রাজনীতি করে এসেছি, সব কাজই গুরুত্বপূর্ণ কাজ বলে মনে করি।” কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন দলের প্রতি সর্বোচ্চ আস্থা রেখে তিনি আশা প্রকাশ করেন যে রাজ্য যে আর্থিক সমস্যার মধ্যে দিয়ে চলছে, তা থেকে একমাত্র উদ্ধার করতে পারবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
বিজেপিতে পা দেওয়ার ঠিক আগের মুহূর্তে অবশ্য তিনি এতদিনকার দলের প্রতি খোলা চিঠি লিখে যাবতীয় অনুভূতির কথা প্রকাশ করেছেন। ৬ পাতার খোলা চিঠিতে ‘আমার প্রিয় অনুগামী’ সম্বোধন করে তিনি স্পষ্ট লিখেছেন, ”নিজেদের রক্ত, ঘাম দিয়ে তৃণমূল যাঁরা তৈরি করেছিলেন, তাঁরাই দলে সবচেয়ে কোণঠাসা, গুরুত্বই পাননি। গত ১০ বছরের দলীয় স্বার্থের ঊর্ধ্বে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে ব্যক্তিস্বার্থকে।” দলে পচন ধরেছে বলেও চিঠিতে উল্লেখ করেছেন তিনি।
এরপর নন্দীগ্রামের নেতা তাঁর একদা সহকর্মীদের জানিয়েছেন, ”আমি তৃণমূল ছাড়ছি না। আমি সেই একই ব্যক্তি যে নিজের বিশ্বাসের উপর দাঁড়িয়ে আরও লড়াইয়ের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। তৃণমূল তার নিজের আদর্শচ্যুত হতে পারে, জনসেবার বদলে ক্ষমতায়নে জোর দিতে পারে। কিন্তু আমি আমার বিবেক থেকে সে পথে হাঁটতে পারব না।” বিজেপির মঞ্চে দাঁড়িয়েও দলের সঙ্গে এই সংঘাতের ছবি তুলে ধরেন তিনি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.