চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল: ফের বেফাঁস মন্তব্য রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক তথা রাঢ়বঙ্গের পর্যবেক্ষক রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Raju Banerjee)। এদিন সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কুকথা বলেন তিনি। রাজু বলেন, “বাংলায় জামতাড়া গ্যাং চলছে। নেতৃত্ব দিচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলায় এখন তৃণমূল কংগ্রেসের মাফিয়া, গুন্ডা, বড় বড় অপরাধী ও সিন্ডিকেট রাজের মাস্টারমাইন্ডদের দৌরাত্ম্য। আসানসোলের জিতেন্দ্র তেওয়ারি, বীরভূমের অনুব্রত মণ্ডল, পূর্ব বর্ধমানের স্বপন দেবনাথ ও ববি হাকিমরা হলেন সেই মাফিয়া। এরা রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে।” উল্লেখ্য, সাইবার অপরাধের জন্য সারাদেশে কুখ্যাত ঝাড়খণ্ডের জামতাড়া গ্যাং। সেই গ্যাংয়ের প্রসঙ্গ টেনে রাজু সরাসরি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করেন। পুরোহিতদের ভাতা প্রসঙ্গে কটাক্ষ করেন তিনি। বলেন, “ব্রাহ্মণরা দান নেয়। ভিক্ষা নেয় না। তাঁদের ভিক্ষা দেওয়া হচ্ছে।”
আগষ্ট ও চলতি মাসে জামুড়িয়া ও আসানসোলের (Asansol) দু’টি দলীয় সভা থেকে পুলিশকে জুতো চাটানোর ও পুলিশের পরিবারকে দেখে নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন রাজ্য বিজেপি নেতা রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়। এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে জামুড়িয়া ও আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ আলাদা তাঁর নামে ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় স্বতঃপ্রণোদিত মামলা করে। বুধবার সেই দুটি মামলায় জামিন নিতে আসানসোল আদালতে আত্মসমর্পণ করেন বিজেপির ওই রাজ্য নেতা। এদিন তার হয়ে আদালতের বিচারকের কাছে সওয়াল করেন আইনজীবী শেখর কুণ্ডু। তিনি বলেন, “দু’টি মামলাতেই রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ অন্যান্যরা জামিন পেয়েছেন।”
বিজেপি (BJP) নেতা যে মামলাতে একটুও দমে যাননি, এদিন আবারও তার প্রমাণ পাওয়া গেল আসানসোলে। বিজেপি কর্মীদের উপর অত্যাচার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তাঁর। দাবি, “গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে রাজ্য সরকারের ব্যর্থতা নিয়ে আন্দোলন করলে আমাদের নামে মিথ্যা মামলা করা হচ্ছে। জেলে ভরে দেওয়া হচ্ছে। আদালতে হাজিরা দিয়ে জামিন নিতে হচ্ছে।” হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “আগামী বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী হয়ে বিজেপি রাজ্যে ক্ষমতায় আসছে। তখন তৃণমুল কংগ্রেসের এইসব নেতারা জামিন পাবেন না। জেলে পাঠানো হবে।” অন্যদিকে, রাজুকে এদিন পালটা আক্রমণ করেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক তথা আসানসোল শহরের আহ্বায়ক ভি শিবদাসন ওরফে দাশু। তিনি বলেন, “ওই ব্যক্তি যে ভাষায় কথা বলেন তাতে তাঁর রাজনীতি করার কোন যোগ্যতা নেই। আমরা তাঁর দলের নেতাদের নামে ওর থেকে চারগুণ খারাপ ভাষায় কথা বলতে পারি। তবে বলি না। কারণ, তা আমাদের রুচিতে বাঁধে। তবে, এবার থেকে এই নেতা আসানসোলে এসে এমন কথা বললে, মেরে পা ভেঙে দেব। তখন দেখব কে তাঁকে বাঁচায়।”
দেখুন ভিডিও:
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.