রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় ও সৌরভ মাজি: শুধু অসম নয়, পশ্চিমবঙ্গ-সহ সারা দেশেই এনআরসি চালু হবে। মন্তব্য রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়র। আর যেদিন বাংলাতেও এনআরসির হুঁশিয়ারি দিলেন কৈলাস সেদিনই অসমের জাতীয় নাগরিকপঞ্জির চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ হয়েছে। তালিকায় নাম নেই ১৯ লক্ষ মানুষের।
ইন্দোর যাওয়ার আগে শনিবার দমদম বিমানবন্দরে অসমে এনআরসি প্রসঙ্গে বিজয়বর্গীয়র বক্তব্য, এনআরসিতে যাদের নাম বাদ গিয়েছে অথচ তারা ভারতীয় তাদের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে। কিন্তু যারা ভারতীয় নন বহিরাগত, সেটাও গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে। পশ্চিমবঙ্গ-সহ সারা দেশেই এনআরসি চালু হবে বলে জানান বিজেপির এই সর্বভারতীয় নেতা। কৈলাসের এই এনআরসি মন্তব্যের পালটা মুখ খুলেছেন রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। ফিরহাদ বলেন, “এনআরসির নামে প্রকৃত ভারতীয়দের দেশ ছাড়া করার চক্রান্ত হলে গোটা বাংলা রুখে দাঁড়াবে। বাংলার মানুষ ভীত নয়, অসহায় নয়। কেউ যদি বাইরে থেকে গায়ের জোরে অশান্তি করতে আসে, বাংলা দখল করতে আসে তাহলে বাংলার মানুষ প্রতিবাদ করবে।”
অসমের নাগরিকপঞ্জির তালিকা প্রকাশ নিয়ে তৃণমূল অসন্তুষ্ট এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে উদ্বিগ্ন তাও এদিন স্পষ্ট করে দেন ফিরহাদ হাকিম। বিজয়বর্গীয়র সুরেই পশ্চিমবঙ্গেও এনআরসি চালুর ব্যাপারে ইঙ্গিত দিয়েছেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষও। বর্ধমানে তিনি বলেন, “সুযোগ পেলেই পশ্চিমবঙ্গে এনআরসি চালু করা হবে। সব থেকে বেশি এখানে এনআরসি করার প্রয়োজন রয়েছে। সব থেকে বেশি অনুপ্রবেশকারী এই রাজ্যে রয়েছে। সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ক্ষেত্রে বিদেশিরা এসে লুঠ করছে রাজ্যকে। বিদেশিদের চিহ্নিত করে ফেরত পাঠানো হবে।” বিদেশি অনুপ্রবেশকারী বলতে বাংলাদেশি মুসলিম অনুপ্রবেশকারীদের কথাই যে তিনি বলছেন সেটাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন দিলীপবাবু। বলেন, “হাজার বার বলছি ওদের (বাংলাদেশি মুসলিম অনুপ্রবেশকারী) ভারতে থাকার কোনও অধিকার নেই। তবে বাংলাদেশি হিন্দুদের এখানকার নাগরিক করা হবে। যেখান থেকেই হিন্দুরা আসবেন তাঁদের এখানকার নাগরিকত্ব দেওয়া হবে।”
এদিকে, রাজ্যের শাসকদল ও মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধেও এদিন তোপ দেগেছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়। বলেন, বাংলায় হিংসার রাজনীতি চলছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের আমলে। গণতন্ত্রের কন্ঠরোধ করার চেষ্টা হচ্ছে। গণতান্ত্রিকভাবেই এর প্রতিবাদ করবে বিজেপি। দক্ষিণ কলকাতা শহরতলি জেলা বিজেপির এক সাংগঠনিক বৈঠকেও এদিন উপস্থিত ছিলেন বিজয়বর্গীয়। ছিলেন জেলার সভাপতি সোমনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে কৈলাসের পরামর্শ, অন্য দল থেকে যাঁরা আসবেন তাঁদের সন্মান দিয়ে সাদরে বিজেপিতে নিতে হবে। কাওকে দলে নেওয়ার ক্ষেত্রে কোনও মতবিরোধ যেন না থাকে। ১৪৩ নম্বর ওয়ার্ডে দলীয় কার্যালয়ে তৃণমূল হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ বিজেপি নেতৃত্বের। ঘটনার প্রতিবাদে হরিদেবপুর থানায় বিক্ষোভও দেখায় বিজেপি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.