Advertisement
Advertisement
BJP

বিদ্যুৎ মন্ত্রীর তৎপরতায় আলো পেয়ে উচ্ছ্বসিত হলদিয়ার বিজেপি নেত্রী, বিলি করলেন লজেন্স

আনন্দে মাতলেন এলাকার বাসিন্দারা।

BJP leader happy for electric connection initiated by electricity minister | Sangbad Pratidin
Published by: Tiyasha Sarkar
  • Posted:January 24, 2023 12:11 pm
  • Updated:January 24, 2023 12:43 pm  

সংবাদ প্রতিদিন ব্যুরো: ব‌্যান্ডপার্টি বাজিয়ে গ্রামের রাস্তায় চলেছে উৎসবমুখর মানুষের মহামিছিল। সেই মিছিল আসতেই গ্রামের মহিলারা যেমন শঙ্খধ্বনি করেছেন, তেমনই বিভিন্ন বাড়ি থেকে পুষ্পবৃষ্টি করেছেন বাসিন্দারাও। আন্দোৎসবের বর্ণময় শোভাযাত্রায় ফাটছে পটকাও। মাঝে মাঝেই মিছিলে আওয়াজ উঠছে, মমতা বন্দ্যোপাধ‌্যায় (Mamata Banerjee) জিন্দাবাদ, অভিষেক বন্দ্যোপাধ‌্যায় জিন্দাবাদ, অরূপ বিশ্বাস জিন্দাবাদ। চলতে চলতে মিছিল থেকে এগিয়ে বিভিন্ন বাড়ির দরজায় গিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ জেনে নিচ্ছেন, বাড়িতে বিদ্যুতের আলো জ্বলেছে কি না? উত্তর জানাতে এসে পুষ্পবৃষ্টির পাশাপাশি মিছিলের অংশগ্রহণকারীদের প্রবল উৎসাহে মিষ্টিমুখ করাচ্ছেন গৃহস্থরা। আনন্দে লজেন্স বিলি করলেন পুরভোটের বিজেপি প্রার্থী। 

স্বাধীনতার পর এই প্রথম বিদ্যুতের আলো জ্বলায় সোমবার নেতাজিজয়ন্তীর দুপুরে এটাই ছিল হলদিয়ার দুই গ্রাম বিষ্ণুরাম চক ও সৌতনচকের উৎসবমুখর ছবি। হলদিয়ার পাশাপাশি এদিন নন্দীগ্রামে মোহানার কাছে প্রত‌্যন্ত নাকচিরাচক গ্রামেও বিদ্যুৎ পৌঁছে গেল তৃণমূল মুখ‌পাত্রর উদ্যোগে। কুণালের কাছ থেকে শুনেই এখানেও মাত্র কয়েকদিনের ব‌্যবধানে একসঙ্গে ৪২টি বিদ্যুতের খুঁটি মঞ্জুর করে জমি আন্দোলনের গর্ভগৃহে বিদ্যুতের পৌঁছে দিলেন বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। এখানেও সন্ধ‌্যার পর বাড়ি বাড়ি ঘুরে বাসিন্দাদের কাছে গিয়ে আলো জ্বলার খবর নেন তৃণমূল মুখপাত্র।

Advertisement

বন্দরনগরী হলদিয়ার মাখনবাবুর বাজারে চায়ের দোকানে বসে গত ৪ ডিসেম্বর বিদ‍্যুৎহীন গ্রামদু’টির কথা শুনেই সটান বিষ্ণুরামচকে যান কুণাল। বন্দরের জমিতে গড়ে ওঠা গ্রামদু’টিতে নানা অজুহাতে গত তিন দশকের বেশি বিদ্যুৎ সংযোগের নামে টালবাহানা করেছেন বামফ্রন্ট ও শুভেন্দু অধিকারীরা। কিন্তু সেদিন ওই গ্রামে দাঁড়িয়ে বিদ‍্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের সঙ্গেই যোগাযোগ করে বিদ‍্যুদয়নের প্রক্রিয়া শুরু করেন তৃণমূল মুখপাত্র। মাত্র ২৭ দিন পরে বিদ্যুৎমন্ত্রীর তৎপরতায় ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারিতেই বিষ্ণুরামচকে বিদ্যুৎ পৌঁছনোর মুহূর্তে হাজির ছিলেন কুণাল। আর এদিন বিষ্ণুরাম চক ও সৌতনচকের পাঁচ শতাধিক বাড়িতে ঘরে ঘরে আলো জ্বলার মুহূর্তেও ছিলেন তিনি।

[আরও পড়ুন: ‘কুলদেবতা’ নেতাজি, জন্মবার্ষিকীতে দেওয়া হয় সিঙারা ভোগ, জানেন পূর্বস্থলীতেও গিয়েছেন সুভাষ বসু?]

সরকারি কর্মসূচিতে উত্তরবঙ্গে থাকায় হলদিয়ায় না আসতে পারলেও কুণাল ঘোষের ফোনের মাধ‌্যমে দুই গ্রামের বাসিন্দাদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। বলেন, “নেতাজির জন্মদিনে ঐতিহাসিক মুহূর্ত তৈরি হল বিষ্ণুরামচক, সৌতনচকে। নেতাজি বলেছিলেন, অধিকার কেউ কাউকে দেয় না। অধিকার কেড়ে নিতে হয়।’’ কুণালবাবুর চেষ্টাতেই স্বাধীনতার পর এই প্রথম দুই গ্রামে বিদ‍্যুদয়ন সম্ভব হল বলে তৃণমূল মুখপাত্রর ভূয়সী প্রশংসা করেন বিদ্যুৎমন্ত্রী। আগে থেকেই ট্রান্সফরমার ও বিদ্যুতের যাবতীয় যন্ত্রাংশ বসানো ছিল। এদিন কুণাল দাঁড়িয়ে থেকেই ‘জাম্পার’ তুলে ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে যাওয়ার শুভসূচনা করেন। পাশে ছিলেন প্রাক্তন পুরপ্রধান দেবপ্রসাদ মণ্ডল।

গ্রামের নানা বাড়িতে বিদ্যুতের আলো এসেছে কি না তার খবর নিতে গিয়ে আচমকাই স্থানীয় ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে পুরভোটে বিজেপির প্রার্থী জোৎস্না মণ্ডলের বাড়ির দরজায় পৌঁছন কুণাল। জানতে চান, ‘খুশি তো?’ আবেগাপ্লুত জোৎস্না জানান, ‘‘ভিতরে আসুন।’’ উচ্ছ্বসিত হয়ে বিজেপির প্রার্থী খুশি হওয়ার কথা জানিয়ে বেরিয়ে এসে গ্রামে সাধারণ মানুষের মধ্যে লজেন্স বিলি করেন। জোৎস্না বলেন, ‘‘উন্নয়নে রাজ্যের তৃণমূল সরকার যে রাজনীতি করে না, আমি তার জ্বলন্ত উদাহরণ। এলাকায় সিপিএম কর্মীদের বাড়িতেও বিদ‍্যুৎ এসেছে এদিন।’’ পরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে কুণাল জানান, ‘‘হলদিয়ার এই দুই গ্রামে বামেরা চৌত্রিশ বছরে বিদ্যুৎ এনে দিতে পারেনি। শুভেন্দু অধিকারী ভুয়ো কাগজ দেখিয়ে বিদ‍্যুতের নামে মিথ‍্যাচার করেছে। এবার বিদ‍্যুৎ আনতে গিয়ে বন্দর কর্তৃপক্ষের বাধা ছিল। কিন্তু আধিকারিকদের একাংশের সদিচ্ছা এবার এই উদ্যোগের পিছনে ছিল। মমতা বন্দ্যোপাধ‌্যায়ের সরকার মানুষের পাশে আছে বলেই বিদ‍্যুৎহীন তিনটি গ্রামে দ্রুত বিদ‍্যুৎ পৌঁছে দিয়েছে।’’

[আরও পড়ুন: ঐতিহাসিক মুহূর্ত, স্বাধীনতার ৭৫ বছর পর কুণাল ঘোষের হাত ধরে বিদ্যুৎ পেল হলদিয়ার ২ গ্রাম]

নন্দীগ্রামের নাকচিরাচকে বিদ্যুৎ পৌঁছনোর পর তৃণমূল মুখপাত্র যান পল্লি উৎসব নামের এক বিশাল মেলার উদ্বোধনে। প্রবীণ তৃণমূল নেতা শেখ সুফিয়ান এই উৎসব কমিটির প্রধান। কিন্তু এদিন মেলার সূচনা ঘিরে আদতে তৃণমূলের মহামিলন উৎসবের চেহারা নেয়। ছিলেন মন্ত্রী অখিল গিরি, জে‌্যাতির্ময় কর, মন্ত্রী শিউলি সাহা, উত্তম বারিক, বিধায়ক তিলক চক্রবর্তী, বাপ্পাদিত‌্য গর্গ ছাড়াও জেলাশাসক ও মহকুমাশাসক। জেলার সমস্ত নেতাই প্রকাশে‌্য জানিয়ে দেন, ঐক‌্যবদ্ধভাবে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কথা।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement