ধীমান রায়, কাটোয়া: ১৭তম লোকসভা ভোট শুরু হতে না হতেই রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় শুরু হয়েছে রাজনৈতিক সংঘর্ষের ঘটনা। এবার বর্ধমানে গুলিবিদ্ধ হলেন স্থানীয় এক বিজেপি নেতা। শনিবার রাত ১১টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে বর্ধমান জেলার ভাতার থানার অন্তর্গত আমারুন বাজার এলাকায়। গুলিবিদ্ধ ওই বিজেপি নেতার নাম কৃষ্ণকালী সামন্ত। তাঁর পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে ভাতার থানার পুলিশ তদন্তে নামলেও এখনও পর্যন্ত কেউ গ্রেপ্তার হয়নি।
বিজেপির অভিযোগ, ভাতারের ৩৪ নম্বর মণ্ডলের বিজেপি সম্পাদক ৫৩ বছরের কৃষ্ণকালী সামন্ত ভাতার থানার অন্তর্গত আড়া গ্রামের বাসিন্দা। তবে আড়া থেকে আড়াই কিলোমিটার দূরে আমারুন বাজার এলাকাতেও তাঁর একটি বাড়ি আছে। শনিবার রাতে খাওয়া সেরে তিনি আমারুন বাজারে অবস্থিত বাড়ির বারান্দায় বসেছিলেন। আচমকা কয়েকজন দুষ্কৃতী এসে তাঁকে লক্ষ্য করে দু’রাউন্ড গুলি চালায়। সেই গুলি এসে লাগে কৃষ্ণকালীবাবুর বাঁ হাতে। রাতের বেলায় আচমকা গুলি চালানোর শব্দ ও কৃষ্ণকালীবাবুর চেঁচামেচি শুনে জেগে ওঠেন প্রতিবেশীরা। সঙ্গে সঙ্গে ছুটে আসেন ওই বিজেপি নেতার বাড়িতে।
গুলিবিদ্ধ বিজেপি নেতার মা ও স্ত্রী
তারপর তাঁর অবস্থা দেখে চিকিৎসার জন্য প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয় ভাতার ব্লক হাসপাতালে। কিন্তু, পরে আরও ভাল চিকিৎসার প্রয়োজনে তাঁকে নিয়ে গিয়ে ভরতি করা হয় বর্ধমান জেলা হাসপাতালে। খবর পেয়ে রবিবার সকালে গুলিবিদ্ধ নেতার বাড়িতে গিয়ে তাঁর স্ত্রী ও মায়ের সঙ্গে দেখা করেন বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য গোলাম জর্জিস। দলের তরফে তাঁদের সবরকম সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পাশাপাশি এই ঘটনায় জড়িত দুষ্কৃতীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করা দাবিও জানান। পরে বর্ধমান হাসপাতলে গিয়ে কৃষ্ণকালীবাবুর সঙ্গে দেখা দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করার দাবি করেন বর্ধমান-দুর্গাপুরের বিজেপি প্রার্থী সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়াও।
স্থানীয় বিজেপি নেতা সঞ্জীব ঘোষ জানান, কৃষ্ণকালী সামন্ত এলাকায় বিজেপি নেতা হিসেবে যথেষ্ট জনপ্রিয় ছিলেন। শাসকদলের বিরুদ্ধে জনমত সংগঠিত করার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছিলেন। তাই ভয় পেয়ে তাঁকে খুন করার চক্রান্ত করছিল তৃণমূল। শনিবার রাতের ঘটনা তার প্রমাণ।
কৃষ্ণকালীবাবুর স্ত্রী লতাদেবী এবং মা শান্তিদেবীর অভিযোগের তিরও তৃণমূলের দিকে। এপ্রসঙ্গে একমাস আগে দেওয়াল লিখন নিয়ে তৈরি হওয়া একটি গন্ডগোলের কথাও উল্লেখ করছেন তাঁরা। বলছেন, “মাসখানেক আগে ভাতারের নওদা গ্রামে স্থানীয় তৃণূমূল নেতৃত্বের সঙ্গে দেওয়াল লিখন নিয়ে অশান্তি হয়েছিল কৃষ্ণকালীবাবুর। তারপর থেকেই তাঁর উপর হামলা হতে পারে আশঙ্কা করছিলেন। শনিবার ওই আশঙ্কাই সত্যি হল।” এক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কারোর নাম করে অভিযোগ না জানালেও এই ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করে কড়া শাস্তি দেওয়া হোক বলে পুলিশের কাছে দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
ছবি: জয়ন্ত দাস
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.