সুনীপা চক্রবর্তী, ঝাড়গ্রাম: এবার কীর্তনের অনুষ্ঠানে বিজেপি নেতার উপর হামলা চালাল দুষ্কৃতীরা৷ পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে ঝাড়গ্রামের জামবনি থানার বগুয়া গ্রামের বিজেপির বুথ সহ-সভাপতিকে লক্ষ্য করে গুলি চালাল দুষ্কৃতীরা৷ গুলিতে গুরুতর জখম হলেন খগপতি মাহাতো৷ অভিযোগের তির তৃণমূলের দিকে৷ স্থানীয় তৃণমূল নেতারাই গুলি চালিয়েছে বলে বিজেপির অভিযোগ৷ যা অস্বীকারও করেছে শাসকদল৷ ইতিমধ্যে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ৷ এখনও কেউ আটক হয়নি৷
[ আরও পড়ুন: নাবালিকা স্কুলছাত্রীকে যৌন নিগ্রহ পুরোহিতের! চাঞ্চল্য নদিয়ার তেহট্টে]
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, শনিবার রাতে বগুয়া গ্রামেই একটি কীর্তনের অনুষ্ঠান দেখতে গিয়েছিলেন জখম বিজেপি বুথ সভাপতি খগপতি মাহাতো৷ রাত একটা নাগাদ ওই অনুষ্ঠানের মাঝেই তাঁর উপর হামলা চালায় তিন দুষ্কৃতী৷ অভিযোগ, দুষ্কৃতীদের মধ্যে দু’জন স্থানীয় তৃণমূল নেতা৷ এদের নাম শান্তনু মাহাতো ও কবি মাহাতো৷ এবং একজন বহিরাগত৷ জানা গিয়েছে, গুলি চালানোর পরেই ঘটনাস্থল থেকে চম্পট দেয় তিন দুষ্কৃতী৷ এরপরই এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে৷ শনিবার রাতেই জখম খগপতি মাহাতোকে প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয় ঝাড়গ্রাম সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে৷ সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয় মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে৷ সূত্রের খবর, রবিবার জখম বিজেপি বুথ সহ-সভাপতিকে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে আসা হবে৷
[ আরও পড়ুন: বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপের জের, রবিবার থেকে তিনদিন ভারী বৃষ্টি দক্ষিণবঙ্গে ]
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঝাড়গ্রাম জেলার রাজনৈতিক মহলে তৈরি হয়েছে তীব্র উত্তেজনা৷ ঘটনায় তৃণমূলকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন ঝাড়গ্রাম জেলা বিজেপি সভাপতি সুকুমার সৎপতি৷ তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূলের পায়ের তলার রাজনৈতিক জমি হারিয়ে গিয়েছে৷ তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা এখন প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে ঘুরছে৷ বিজেপি কর্মীদের উপর আক্রমণ করছে৷ এবং এলাকায় আতঙ্ক তৈরির চেষ্টা করছে৷ আমরা পুলিশকে আগেই অস্ত্র উদ্ধার করতে বলেছিলাম৷কিন্তু তাতে কাজ হয়নি৷ যার প্রমাণ এই ঘটনা৷’’ এখানেই শেষ নয় তাঁর আরও দাবি, শাসকদলের মদতে এলাকায় অস্ত্র নিয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে মাওবাদীরা৷ নিষ্ক্রিয় রয়েছে পুলিশ ও প্রশাসন৷ বিজেপি দাবি করলেও, এই ঘটনায় দলের কারও যুক্ত থাকার কথা সরাসরি অস্বীকার করেছেন জামবনি ব্লক তৃণমূলের সভাপতি নিশীথ মাহাতো৷ তাঁর পালটা দাবি, শাসকদলের কেউ এই ঘটনার সঙ্গে নয় যুক্ত নয়৷ তিনি জানান, ‘‘পুলিশকে ঘটনার সঠিক তদন্ত করতে বলেছই৷ দোষীদের গ্রেপ্তার করে যথাযথ শাস্তি দেওয়া কথাও আমরা বলেছি৷ এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই, ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকেই হামলা৷’’ ইতিমধ্যে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে জামবনি থানার পুলিশ৷ জেলার অ্যাডিশনাল এসপি জানান, হামলার পিছনে কোনও রাজনৈতিক কারণ রয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে৷ এই হামলার পিছনে চারজন সন্দেহভাজনের নাম উঠে এসেছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর৷ যাদের খোঁজও শুরু হয়েছে৷
ছবি: প্রতিম মৈত্র
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.