ফাইল চিত্র
অরিজিৎ গুপ্ত, হাওড়া: নাবালিকাদের দিয়ে হোটেলে দেহব্যবসা। মধুচক্র চালানোর অভিযোগে হাওড়ার সাঁকরাইলে গ্রেপ্তার হোটেল মালিক। পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃত সব্যসাচী ঘোষ (৫৫) বিজেপি নেতা। যদিও গেরুয়া শিবিরের দাবি, তিনি দলের কেউ নয়। এছাড়া এই ঘটনায় আরও ১১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মধুচক্র চালানোর অভিযোগে বুধবার বিকেলেই তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। বৃহস্পতিবার ধৃতদের হাওড়া জেলা আদালতে তোলা হয়। তাদের ৭ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।
সব্যসাচী ঘোষ নামে হোটেল মালিক যে বিজেপি নেতা তা ধৃতকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে গিয়েই জানতে পারে পুলিশ। বিজেপির তরফে জানা গিয়েছে, সব্যসাচী বর্তমানে সাঁকরাইলের শ্রমিক নেতা। ২০১৬ সাল থেকে হাওড়া জেলায় বিজেপির সক্রিয় নেতা। এর আগে দলের নানা পদেও ছিল ওই বিজেপি নেতা। সম্প্রতি সব্যসাচীকে শ্রমিক সংগঠনের দায়িত্ব দেওয়া হয়। যদিও বিজেপির একাংশের দাবি, এই ঘটনায় গ্রেপ্তারির পর থেকে ধৃত সব্যসাচী আর এখন গেরুয়া শিবিরের কেউ নয়।
নেতার গ্রেপ্তারি প্রসঙ্গে অবশ্য আগে বিজেপির হাওড়া সদরের জেলা সম্পাদক ওমপ্রকাশ সিং বলেন, ‘‘সন্দেশখালির ঘটনা থেকে মোড় ঘোরাতেই সরকার ও পুলিশ বেছে বেছে বিজেপি নেতাদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসাচ্ছে। তবে এক্ষেত্রে দল তদন্ত করে দেখবে সত্যিই সব্যসাচী মধুচক্র চালানোর সঙ্গে যুক্ত কিনা। যদি তা হয় তাহলে সব্যসাচীর বিরুদ্ধে দলের তরফে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ এই প্রসঙ্গে রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূল নেতা অরূপ রায় বলেন, ‘‘বিজেপির নেতা মানেই নানা অসামাজিক কাজে তারা যুক্ত। এই ঘটনায় ফের একবার তা প্রমাণিত হল। এর আগেও বিজেপি নেতাদের সঙ্গে অসামাজিক কাজে যুক্ত থাকার অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে।’’
গোপন সূত্রে খবর পাওয়ার পরই বুধবার বিকেলে সাঁকরাইলের ধূলাগড়ের একটি হোটেলে হানা দেয় হাওড়া সিটি পুলিশ। হোটেলে হানা দিয়ে মধুচক্রটিকে হাতেনাতে ধরে তারা। মধুচক্র চালানোর অভিযোগে ওই হোটেল থেকে ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পাশাপাশি ২ নাবালিকা এবং ৪ তরুণীকে উদ্ধার করে সাঁকরাইল থানার পুলিশ। পুলিশ জানায়, হোটেল মালিক তথা বিজেপি নেতা সব্যসাচী ঘোষ (৫৫) ও হোটেলের ম্যানেজার-সহ ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। উদ্ধার হওয়া নাবালিকা ও তরুণীদের হোমে পাঠানো হয়। মধুচক্র চালানোর জন্য মামলা করার পাশাপাশি ধৃতদের বিরুদ্ধে পকসো আইনেও মামলা রুজু করে পুলিশ। হাওড়া সিটি পুলিশের ডিসি সাউথ বিশ্বজিৎ মাহাতো বলেন, ‘‘ধৃতরা নাবালিকা ও তরুণীদের নিয়ে এসে হোটেলের ভিতরে দেহব্যবসা চালাচ্ছিল। পুরো বিষয়টিই তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’’ উল্লেখ্য, এই সাঁকরাইলেই এর আগে এক বিজেপি নেতার বাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণ গাঁজা উদ্ধার হয়। ওই বিজেপি নেতা নিষিদ্ধ মাদকের ব্যবসা চালাত।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.