রাজা দাস, বালুরঘাট: পাওনা টাকা চাইতে গিয়ে দলীয় নেতৃত্বের হাতে আক্রান্ত বিজেপি মহিলা মোর্চার গঙ্গারামপুর শহর মণ্ডলের সাধারণ সম্পাদিকা সাগরী কর্মকার। মারধর করার অভিযোগ উঠেছে বিজেপির জেলা সম্পাদক কানাই বিশ্বাসের বিরুদ্ধে। বর্তমানে গঙ্গারামপুর সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই শহর মণ্ডল নেত্রী। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই অস্বস্তিতে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা বিজেপি শিবির।
দু’জনের মধ্যে ৭ বছরের সম্পর্ক। নেত্রী বিবাহিত হলও স্বামী সঙ্গে থাকতেন না। অন্যদিকে দুজনের সম্পর্ক আর্থিক লেনদেন পর্যন্ত গড়িয়ে ছিল। প্রায় ৫ লক্ষ টাকা ধার দিয়েছিলেন বলে দাবি আক্রান্ত বিজেপি নেত্রী সাগরী। আপাতত দুজনকেই দলীয় কর্মসূচি থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন বিজেপি জেলা সভাপতি স্বরূপ চৌধুরী। ঘটনাকে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল।
তবে পুরো ঘটনা মিথ্যা বলে দাবি করেছেন অভিযুক্ত জেলা বিজেপি নেতা কানাই বিশ্বাস। তিনি জানান, রাতে কালিতলা পার্টি অফিসে একটি বৈঠক ছিল। সেটি শেষ করে তিনি চলে গিয়েছিলেন। পরে সেখানে নাকি একটি বিবাদ হয়। বিষয়টি তার জানা নেই। টাকা পয়সা নেওয়া বা সম্পর্কর অভিযোগ মিথ্যা। পিছনে কেউ মদত দিয়ে তাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছেন।
জানা গিয়েছে, দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার গঙ্গারামপুর কালিতলা বিজেপি কার্যালয়ে ঘটনাটি ঘটে রবিবার রাতে। অন্যান্য দিনের মত এদিন রাতে ওই পার্টি অফিসে ছিলেন বিজেপি জেলা সম্পাদক কানাই বিশ্বাস। আনাগোনা চলছিল দলের নেতা কর্মীদের। সেখানে গিয়েছিলেন গঙ্গারামপুর শহর মণ্ডলের সাধারণ সম্পাদিকা সাগরী কর্মকার। টাকা নিয়ে কানাই ও সাগরীর মধ্যে বিবাদ শুরু হয়। অভিযোগ, সেসময় দরজা আটকে নেত্রী সাগরী কর্মকারকে বেদম মারধর করেছেন কানাই।
বিজেপি মহিলা মোর্চার গঙ্গারামপুর শহর মণ্ডল সাধারণ সম্পাদিকা সাগরী কর্মকার বলেন, “আমি স্বামী ছাড়া থাকি। কানাই বিশ্বাসের সঙ্গে আমার দীর্ঘদিনের সম্পর্ক। কানাই কখন রাতের বেলা আবার কখনও দিনের বেলা কাটান আমার বাড়িতেই। মাইক্রো ফিনান্স থেকে শুরু করে বিভিন খাতে অন্তত ৫ লক্ষ টাকা আমার কাছ থেকে নিয়েছে সে। সুদ এবং কিস্তির কোনও টাকা দেয় না। গত একমাস ধরে কানাইয়ের সঙ্গে আমার কথাবার্তা নেই এই কারণে। এদিন আমাকে সুদের ১৭ হাজার টাকা দেবে বলেছিল। কিন্ত পার্টি অফিসে যেতে সে ওই টাকা দিতে অস্বীকার করে। সকলের সামনে বেধরক মারধোর করেছে। কানাইয়ের শাস্তির দাবি জানাচ্ছি আমি। তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করছি।”
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা বিজেপির সভাপতি স্বরূপ চৌধুরী বলেন, ওই দুজনকেই আপাতত দলীয় কর্মসূচি থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। দল এই ধরনের কোনও ঘটনাকে সমর্থন করে না। রো বিষয়টি খতিয়ে দেখে পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেওয়া হয় দলীয়ভাবে। বিজেপির এই ঘটনাকে মধ্যযুগীয় বর্বরতার সঙ্গে তুলনা করে তৃণমূলের জেলা সভাপতি মৃণাল সরকার জানান, “বিজেপি পুরো নাম ভারতীয় জঞ্জাল পার্টি। সাধারণ সম্পাদিকাকে পার্টি অফিসের ডেকে নিয়ে গিয়ে মারধর করা হয়েছে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.