ব্রতদীপ ভট্টাচার্য, বারাসত: অযোধ্যায় (Ayodhya) রাম মন্দিরের ভূমিপুজো। দেশের ইতিহাসের এক অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিন। করোনা আবহে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই সকাল থেকে সরযূর তীরে মহা ব্যস্ততা। আর এমন দিনে বাংলায় সম্পূর্ণ লকডাউন। তবে রাম মন্দিরের আবেগ লকডাউন উপেক্ষা করেই পুজোর আয়োজন দেখা গেল বারাসতের বিভিন্ন জায়গায়। বিজেপি কার্যালয়গুলির সামনে রীতিমত লাউডস্পিকার বাজিয়ে চলল রাম পুজো। এমন বিধিভঙ্গে পুলিশও কার্যত নীরব।
রাজ্যজুড়ে সম্পূর্ণ লকডাউনের (Complete Lockdown) মধ্যেই বারাসাতে টাকি রোডের পাশে বিজেপির কার্যালয়ের সামনে সকাল সকালই দেখা গেল তুমুল ব্যস্ততা। লাউডস্পিকার চালিয়ে চলছে পুজোর আয়োজন। খোঁজখবর নিয়ে জানা গেল, এখানে বেলা এগারোটা নাগাদ রাম পুজো হবে। কার্যালয়ের নামের ছবিতে ফুল, মালা দিয়ে সাজিয়ে মন্ত্রোচ্চারণে হয়ে গেল পুজো। আয়োজনকারীদের বেশিরভাগের পরনে ছিল গেরুয়া। এদিন রামের পুজো উপলক্ষে জনতার ভিড়ও দেখা গেল ভালই। কারও কারও মুখে আবারও মাস্কও নেই। সামাজিক দূরত্ববিধিও শিকেয় উঠল। শুধু টাকি রোডের পাশেই নয়, বারাসতের বিভিন্ন বিজেপি পার্টি অফিসের বাইরে প্রায় একই ছবি। বারাসত পুরসবার বিভিন্ন ওয়ার্ডে পুজো উপলক্ষে লাড্ডু বিতরণও হল। অথচ আজ সম্পূর্ণ লকডাউন। অত্যন্ত প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে কারও পা রাখা বারণ সাধারণভাবে। কিন্তু সকাল থেকে বারাসতের ছবিটা তা বলছে না। মনে হল, লকডাউনে যেন এই এলাকায় ছাড়।
রাম মন্দিরের ভূমিপুজোকে কেন্দ্র করে সারা দেশে উৎসবের আবহের মধ্যেই রাজ্যে করোনার রুখতে ‘ব্রেক দ্য চেন’ ফর্মুলায় সপ্তাহে দু’দিন করে পূ্র্ণ লকডাউন চলছে। যদিও আজকের দিনে লকডাউনের সিদ্ধান্তে তীব্র বিরোধিতা করেছিল বিজেপি। বারবার আবেদন জানানো হয়েছিল, এই দিনটিতে যাতে লকডাউন প্রত্যাহার করা হয়। বিজেপির সেই আবেদন মঞ্জুর হয়নি। কোনওভাবেই সম্পূর্ণ লকডাউনের এই দিনটি বদল করেনি নবান্ন।
আর তাই একে ‘রাজনৈতিক লকডাউন’ বলে মনে করছেন বারাসত সাংগঠিক জেলা বিজেপির সভাপতি শংকর চট্টোপাধ্যায়। তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য, ”এটা তো রাজনৈতিক লকডাউন। আজ ৫০০ বছরের লড়াইয়ের সাফল্যের দিন। তাই ইচ্ছে করেই লকডাউন করা হচ্ছে, যাতে মানুষ একটু আনন্দ-উৎসব না করতে পারে, যাতে রামের আরাধনা করতে না পারে। আর আমরা যে আয়োজন করেছি, তা কোনও দলের তরফে নয়। সম্পূর্ণ মানুষের জন্য। আজকের আনন্দের দিন সবাই একসঙ্গে পালন করতে চাই।” বারাসত শহর তৃণমূল সভাপতি অশনি মুখোপাধ্যায়ের পালটা বক্তব্য, ”আজকের ধর্মীয় উদযাপন ছোট করা উচিত ছিল। যাঁরা দূরত্ব মানা ও করোনা মোকাবিলার কথা বলছেন তাঁরাই জমায়েত করছেন। এই দ্বিচারিতা মানুষ লক্ষ্য করছেন, বিজেপির মত উশৃঙ্খল দলের থেকে এর বেশি কিছু আশা করা যায় না।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.