অর্ণব দাস, বারাসত: বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জেলা সদর বারাসতের রাস্তায় হাতাহাতিতে জড়াল দু’পক্ষ। সেখানের সাংগঠনিক জেলা পার্টি অফিসে ঝুলল তালা। বুধবার সন্ধেয় এই ঘটনার জেরে উত্তেজনা ছড়াল বারাসতের হরিহরতলায়।
বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, পঞ্চায়েত নিবার্চনের পর বারাসত সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সভাপতি তাপস মিত্রকে পরিবর্তন করে তরুণকান্তি ঘোষকে পদে আনা হয়। এরপরই প্রাক্তন জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রার্থীর জন্য বরাদ্দ টাকা নয়ছয় করার অভিযোগ উঠলে দলের অন্দরেই চাঞ্চল্য ছড়ায়। রাজ্য নেতৃত্বর কাছে বিষয়টি নিয়ে তদন্তেরও দাবি জানানো হয়। তারপর থেকেই প্রাক্তন এবং বর্তমান জেলা সভাপতি অনুগামীদের মধ্যে ছোটখাটো গন্ডগোল লেগেই ছিল। মঙ্গলবার রাতে সাংগঠনিক জেলার অন্তর্গত একাধিক মণ্ডলের সভাপতি পরিবর্তন করায় ক্ষোভ আরও বাড়ে।
জানা গিয়েছে, অশোকনগরের চারটি মণ্ডল, বিধাননগর তিনটি মন্ডল, নিউটাউনের একটি, মধ্যমগ্রাম দুটি, হাবড়ার একটি, বারাসতের একটি সহ আরও কয়েকটি মন্ডলের সভাপতি পরিবর্তন প্রথমে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে এবং পরবর্তীতে নবনির্বাচিত সভাপতিরা অন্যান্যদের জানালে ক্ষোভ দানা বাঁধে। এরপরই জেলার বিভিন্ন প্রান্তের বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা সংঘবদ্ধ হয়ে বুধবার সন্ধেয় বারাসত হেলাবটতলার জেলা পার্টি অফিসে বিক্ষোভ দেখাতে আসে। আগেভাগেই এই খবর জেনে জেলা সভাপতি দলীয় কার্যালয়ে ছিলেন না বলেই জানা গিয়েছে। কিন্তু জেলা মহিলা মোর্চার এদিন বৈঠক থাকায় তারা দলীয় কার্যালয় ছিল।
উপস্থিত সেই নেত্রীদের কাছে বিক্ষুব্ধরা সভাপতি পরিবর্তনের কারণ জানতে চাইলে দুপক্ষের মধ্যে শুরু হয় বচসা। দুপক্ষের এই গণ্ডগোলের রেশ এসে পরে রাস্তায়। এই নিয়ে উত্তেজনা বাড়লে প্রথমে বিজেপির মহিলা কর্মীরা নিজেদের মধ্যে হাতাহাতিতে জড়ায়। তারপর বাকিরাও সংঘর্ষে জড়ালে এক কর্মী রক্ত ঝরে। খবর পেয়ে বারাসত থানার পুলিশ দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। যদিও ততক্ষণে পার্টি অফিসে তালা মেরে দেয় বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠী।
মহিলা মোর্চার বৈঠকে উপস্থিত সদস্যা সৌমিতা রাহা বলেন, “যে সমস্ত পঞ্চায়েতে বিজেপি ভালো ফল করেছে অথবা জিতেছে বেছে বেছে সেখানকার মণ্ডল সভাপতিকে পরিবর্তন করা হয়েছে। জেলার সাধারণ সম্পাদিকা ভাস্বতী সোম এদিন পার্টি অফিসে উপস্থিত ছিলেন। তার কাছেই সবাই ক্ষোভ উগড়ে দেয়। তখনই রাজ্য কমিটির সদস্যা সোনালি দের উপর ভাস্বতী সোম চড়াও হন। এই কারণেই বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছে।” বিক্ষোভকারী বিধান নগর মণ্ডল ৪ সহ সভাপতি শ্রীকান্ত সুর রায় বলেন, “কাউকে না জানিয়ে হঠাৎই কমবেশি ১৭টি মণ্ডলের সভাপতির পরিবর্তন করা হয়েছে। জেলা নেতৃত্ব তৃণমূলের সঙ্গে গোপন আঁতাত করে বিজেপির সক্রিয় কর্মীদের বসিয়ে দেওয়ার জন্যই এই কাজ করেছে।” এবিষয়ে জেলা সভাপতি তরুণ কান্তি ঘোষের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাঁকে পাওয়া যায়নি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.