বিপ্লব দত্ত, কৃষ্ণনগর: মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার আর মাত্র চার দিন বাকি। অথচ এখনও পর্যন্ত নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জ বিধানসভা উপনির্বাচনে বিজেপি তাদের প্রার্থীর নামই ঘোষণা করতে পারেনি। তৃণমূল কংগ্রেস, সিপিএম, কংগ্রেস ইতিমধ্যেই তাদের প্রার্থী ঘোষণা করে প্রচার অনেকটাই এগিয়ে নিয়ে গিয়েছে। বিজেপি এখনও পর্যন্ত এই বিধানসভা উপনির্বাচনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করতে না পারায় কর্মীদের মধ্যে একরাশ হতাশা চেপে বসেছে। শুধু হতাশাই নয়, কর্মীরা অনেকেই এই বিষয় নিয়ে ক্ষুব্ধ। তাঁদের প্রশ্ন, কেন এখনও পর্যন্ত এই বিধানসভা উপনির্বাচনে দল প্রার্থী ঘোষণা করতে পারল না?
[ আরও পড়ুন: অশ্বত্থে পরিণত হয়েছে সদ্যোজাত শিশু! ‘স্বপ্নাদেশ’ পেয়ে গাছে জল ঢালার ধুম ]
তাঁদের আরও প্রশ্ন, লোকসভা নির্বাচন নিয়ে মেতে থাকার জন্য কি কৃষ্ণগঞ্জ বিধানসভা উপনির্বাচনের কথা কার্যত ভুলেই গিয়েছে বিজেপি নেতৃত্ব? অন্যরা যখন প্রার্থী ঘোষণা করে প্রচারে অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে, তখন এখনও পর্যন্ত বিজেপি তাঁদের প্রার্থী ঘোষণা করতে না পারায় এই উপনির্বাচনে কী তাঁরা পিছিয়ে পড়বে না? যদিও এই বিষয়ে বিজেপির নদিয়া দক্ষিণ জেলার সাংগঠনিক সভাপতি জগন্নাথ সরকার জানিয়েছেন, “বিজেপি দল একটি আদর্শ নিয়ে চলে। দলের কর্মীরা আদর্শের উপর ভিত্তি করে কাজ করেন। দলের প্রতীক নিয়ে কাজ করেন। সারা ভারতের মানুষ নরেন্দ্র মোদির হাতকে শক্ত করতে পদ্মফুলে ভোট দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন। প্রার্থী যখনই ঘোষণা হোক, অসুবিধা কিছু হবে না। যে কোনও মুহূর্তেই প্রার্থী ঘোষণা হলে আমরা প্রচারে নেমে পড়তে তৈরি আছি। সংগঠন কাজ করে চলেছে। প্রার্থী ঘোষণা হলেই প্রচার শুরু হয়ে যাবে। এই উপনির্বাচনে বিজেপি ৩০ হাজারেরও বেশি ভোটে জিতবে।” তবে বিজেপি কর্মীরা কিন্তু নিজেদের ক্ষোভ গোপন রাখতে পারছেন না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দু’জন বিজেপি কর্মী জানালেন, “২ তারিখ থেকে এই বিধানসভা উপনির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমা নেওয়ার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। ৯ তারিখ অবধি মনোনয়নপত্র জমা নেওয়া হবে। অথচ এখনও পর্যন্ত দল প্রার্থীর নাম ঘোষণা করতে পারল না। অন্য রাজনৈতিক দলগুলি তাদের প্রার্থী ঘোষণা করে রীতিমতো প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। সে ক্ষেত্রে কবে দল প্রার্থী ঘোষণা করবে, কবেই বা আমরা প্রচারে নামতে পারব, তা আমরা বুঝে উঠতে পারছি না। আর কেন এখনও পর্যন্ত দল প্রার্থীর নাম ঘোষণা করতে পারল না, সেটাই আমরা বুঝতে পারছি না।”
[ আরও পড়ুন: ভোট না দিলে হবে? গণতন্ত্রের উৎসবে শামিল হতে চায় শহিদ সুদীপ বিশ্বাসের পরিবার ]
কৃষ্ণগঞ্জ বিধানসভার বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাস খুনের পর এবার লোকসভা ভোটের সঙ্গে এই কেন্দ্রে বিধানসভা উপনির্বাচন হচ্ছে। ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণার পরেই তৃণমূল কংগ্রেস এই কেন্দ্র থেকে প্রমথনাথ বসুকে প্রার্থী ঘোষণা করে। তৃণমূল কংগ্রেসের পর সিপিএমও তাদের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে। সিপিএম এবার মৃণাল বিশ্বাসকে এই কেন্দ্র থেকে তাদের প্রার্থী করেছে। ওই বিধানসভা কেন্দ্রের বগুলাতে বাড়ি মৃণাল বিশ্বাসের। বগুলা শ্রীকৃষ্ণ কলেজে ছাত্র রাজনীতির মধ্য দিয়ে উঠে আসেন মৃণাল বিশ্বাস। তিনি সিপিএমের বগুলা এলাকায় কমিটির সম্পাদক হন। বর্তমানে তিনি নদিয়া জেলা কমিটির সদস্য। গত বিধানসভা নির্বাচনে সিপিএম মৃণাল বিশ্বাসকে এই কেন্দ্র থেকে প্রার্থী করেছিল। কয়েকদিন আগে কংগ্রেস বিজয় বিশ্বাস নামে একজনকে এই কেন্দ্র থেকে প্রার্থী করেছে। ৪৩ বছর বয়সি বিজয় বিশ্বাসের বাড়ি এই কেন্দ্রের চাপড়ি গ্রামে। বিজয় বিশ্বাস পেশায় পার্ক স্ট্রিটের একটি হোটেলের ম্যানেজার। যদিও নিজেই জানিয়েছেন, “রাজনীতির জন্য আমি চাকরি ছেড়ে দিতেও রাজি আছি।”
৯ এপ্রিল মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। অথচ শুক্রবার দুপুর অবধি কৃষ্ণগঞ্জ বিধানসভা উপনির্বাচনে বিজেপি তাদের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করতে পারেনি। যদিও বিজেপির কর্মী-সমর্থকরা দলের প্রতীক এঁকে প্রার্থীর নামের জায়গা ফাঁকা রেখে তাদের কাজ কিছুটা এগিয়ে রেখেছেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত প্রার্থীর নাম ঘোষণা না হওয়ায় তাঁরা অনেকেই মুষড়ে পড়েছেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.