নিজস্ব সংবাদদাতা, বনগাঁ: পুরসভায় আস্থাভোটকে কেন্দ্র করে দিনভর অশান্তি চলল বনগাঁয়। কিন্তু, শেষপর্যন্ত জিতল কারা? বিভ্রান্তি চরমে। আস্থাভোটে জিতে পুরসভা দখলে রাখার দাবি করেছে তৃণমূল। এদিকে আবার শাসকদলের বিরুদ্ধে একতরফা আস্থাভোট করানোর অভিযোগ তুলে ফের হাই কোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিজেপি। আস্থাভোটের ফলাফল নিয়ে মুখ খুলতে চাননি বনগাঁ পুরসভার এক্সজিকিউটিভ অফিসার।
বনগাঁ পুরসভায় অচলাবস্থা কাটাতে গত বৃহস্পতিবার অনাস্থা প্রস্তাবের পক্ষে রায় দেয় কলকাতা হাই কোর্ট। সময় দেওয়া হয়েছিল ৭২ ঘণ্টা। আদালতের নির্দেশ মেনে পুরপ্রধান শংকর আঢ্যের বিরুদ্ধে অনাস্থা জানিয়ে বনগাঁর মহকুমা শাসককে চিঠি দেন বিজেপির তিন কাউন্সিলর। আস্থাভোটকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার সকাল থেকেই টানটান উত্তেজনা ছিল বনগাঁ শহরে। পুরসভা চত্বরে ১৪৪ ধারা জারি করেছিল প্রশাসন। কিন্তু তাতেও অশান্তি এড়ানো যায়নি। বিজেপির দাবি, গ্রেপ্তারিতে হাই কোর্টের স্থগিতাদেশ থাকা সত্ত্বেও, অপহরণের মামলায় অভিযুক্ত দলের দুই কাউন্সিলরকে বনগাঁ পুরসভায় ঢুকতে বাধা দেয় পুলিশ। তৃণমূল ও বিজেপি কর্মীদের বচসায় রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় বনগাঁ পুরসভা চত্বর। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হিমশিম খেতে হয় পুলিশকে। এরইমধ্যে পুরসভায় ঢুকে তৃণমূল কংগ্রেস কাউন্সিলররা আস্থাভোট করিয়ে নেন বলে অভিযোগ। খোদ বনগাঁ পুরসভার চেয়ারম্যান শংকর আঢ্য দাবি করেন, নির্দিষ্ট সময়ে পুরসভায় হাজির হতে পারেননি বিজেপি কাউন্সিলররা। আস্থাভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে তৃণমূলই। এদিকে প্রশাসনের বিরুদ্ধে শাসকদলের পক্ষে কাজ করার অভিযোগ তোলে গেরুয়া শিবির। তৃণমূল কাউন্সিলররা বেরিয়ে যাওয়ার পর পুরসভায় ঢোকেন বিজেপি কাউন্সিলররা। পুরসভার এক্সজিকিউটিভ অফিসারের সঙ্গে তাঁরা বৈঠকও করেন বলে জানা গিয়েছে।
মঙ্গলবার বিকেলে দলের এগারোজন কাউন্সিলরকে নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন বিজেপি বারাসত সাংগঠনিক জেলার সভাপতি দেবদাস মণ্ডল। তাঁর দাবি, দলের যে তিনজন কাউন্সিলর অনাস্থা প্রস্তাব এনেছিলেন, তাঁদের বাদ দিয়ে আস্থাভোট করেছে তৃণমূল। ওই প্রক্রিয়ার কোনও বৈধতা নেই। পুরসভার এক্সজিকিউটিভ অফিসারের সঙ্গে বৈঠক করে অনাস্থা প্রস্তাব করিয়ে নিয়েছেন বিজেপির ১১ জন কাউন্সিলর। এখন প্রশাসনকে কাজে লাগিয়ে পুরসভা নিজেদের দখলে রাখতে চাইছে তৃণমূল। গোটা বিষয়টি জানিয়ে ফের হাই কোর্টের দ্বারস্থ হবেন তাঁরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.