ছবি: প্রতীকী
সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: ভোট পরবর্তী হিংসা ছড়াল পুরুলিয়াতেও। বিজেপির বিজয় মিছিল শেষেই তৃণমূল কর্মীর বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল বিজেপির বিরুদ্ধে। গত মঙ্গলবার বিকালে পুরুলিয়ার মানবাজার এক নম্বর ব্লকের গোপালনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের কেশরগড়িয়ার তৃণমূল কর্মী দিলদর মাহালীর বাড়িতে বিজেপি কর্মীরা অগ্নিসংযোগ করে বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় ওই তৃণমূল কর্মীর রান্নাঘর ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছে। চাল-ডাল সহ গেরস্থালির জিনিসপত্র মিলিয়ে প্রায় আশি হাজার টাকা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে অভিযোগ। ওইদিন রাতেই তৃণমূল কর্মী দিলদর মাহালী ওই এলাকার চার বিজেপি কর্মীর নামে মানবাজার থানায় অভিযোগ করেন। মানবাজার থানার পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে। তবে ওই চার বিজেপি কর্মী পলাতক। তাদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।
ওই ঘটনার পর বুধবার বিকালে কেশরগড়িয়া গ্রামে ওই তৃণমূলকর্মীর বাড়িতে গিয়ে তার পরিবারকে অভয় দেন মানবাজার এক নম্বর ব্লক তৃণমূলের আদিবাসী শিক্ষক নেতা তথা পুরুলিয়া জেলা পরিষদের সদস্য গুরুপদ টুডু ও গোপালনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান কিশোর মাহাতো। এদিন গুরুপদ টুডু বলেন, “পুরুলিয়া আসন জিতেই বিজেপি সন্ত্রাস শুরু করে দিল। সাধারণ মানুষ এরপর বুঝবেন বিজেপি কত বড় বিপদ।” পুরুলিয়া লোকসভা কেন্দ্রটি বিজেপি জিতলেও এই মানবাজার বিধানসভায় তৃণমূলের দশ হাজার লিড রয়েছে। জেলার ন’টি বিধানসভার মধ্যে এই বিধানসভাতেই শাসকদলের লিড আছে। তবুও পুরুলিয়া আসন জয়লাভ করায় মঙ্গলবার এই এলাকায় বিজয় মিছিল করে বিজেপি। দুপুর আড়াইটে নাগাদ সেই বিজয় মিছিল শেষ হওয়ার ঘন্টাখানেক পরেই বিকাল সাড়ে তিনটা নাগাদ ওই এলাকার চার বিজেপি কর্মী দিলদর মাহালী নামে ওই তৃণমূল কর্মীর বাড়িতে আসে বলে অভিযোগ। সেখানে বিজেপির দলীয় পতাকা লাগানোর চেষ্টা করলে ওই তৃণমূলকর্মী বাধা দেন। তখনই ঝামেলা শুরু হয়ে যায়। ওই চার বিজেপি কর্মী সেখানেই শব্দবাজি ফাটাতে উদ্যত হয়।
কেশরগড়িয়া বুথের তৃণমূল সভাপতি তথা গোপালনগর অঞ্চল তৃণমূল কংগ্রেসের সদস্য সুবোধ মাহাতো বলেন, “আমরা তৃণমূল কর্মী। আমাদের বাড়ির সামনে অন্য রাজনৈতিক দলের পতাকা লাগাতে কেন দেব? তাই আমাদের কর্মী বাধা দেন। তখন তারা শব্দবাজি ফাটানোর কথা বলে। হুমকি দেয় বাড়ি আগুন লাগিয়ে দেবে। তারপরই বাড়িতে কেরোসিন ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হয়।” যে ঘরে বিজেপি কর্মীরা আগুন লাগায় বলে অভিযোগ সেটি ওই তৃণমূলকর্মীর রান্নাঘর। সেইসময় ওই রান্নাঘরে কেউ না থাকায় হতাহত হয়নি। খড়ের ঘরে যখন দাউদাউ করে আগুন জ্বলতে থাকে তখন অভিযুক্ত বিজেপি কর্মীরা পালিয়ে যায় বলে অভিযোগ। ওই তৃণমূল কর্মী সহ স্থানীয় বাসিন্দারা আশপাশ থেকে জল এনে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করেন। কিছুক্ষনের মধ্যেই দমকল ও পুলিশ আসে। দমকলের একটি ইঞ্জিন আগুন নিয়ন্ত্রনে আনে। বিজেপির পুরুলিয়া জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী বলেন, “বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিচ্ছি।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.