নিজস্ব সংবাদদাতা, বনগাঁ: পুলিশি অত্যাচারের প্রতিবাদে বিজেপির ডাকা ১০ ঘণ্টার বনধ বানচাল করতে সকাল থেকেই বনগাঁর রাস্তায় নামল স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। সকাল থেকেই মতিগঞ্জ এলাকায় গিয়ে বনগাঁর পুরপ্রধান শংকর আঢ্য-সহ তৃণমূল নেতা, কর্মীরা দোকানপাট খোলা রাখার আবেদন জানিয়েছেন। তাঁদের আবেদন মেনে দোকান খুলেছেন অনেকেই। যানবাহনও চলছে স্বাভাবিক গতিতেই। বিজেপির তরফে অবশ্য বনধ সফল করতে কাউকে সেভাবে পথে নামতে দেখা যায়নি।
ঘটনার সূত্রপাত সেই মঙ্গলবার বিকেলে। পুলিশের বিরুদ্ধে বিজেপি কাউন্সিলর ও কর্মীদের মারধর করে দলীয় কার্যালয় বন্ধ করার অভিযোগ ঘিরে সেদিন থেকেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বনগাঁ পুরসভার ১৯ নং ওয়ার্ড এলাকা। পল্লিশ্রী নিউ বাটার মোড়ে স্থানীয় কাউন্সিলর শুভেন্দু মিস্ত্রির যে পার্টি অফিস রয়েছে, সেটি রেলের জায়গা বলে দাবি স্থানীয়দের। শুভেন্দুবাবু তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদানের পর তৃণমূলের তরফে অভিযোগ ওঠে, রেলের জায়গা দখল করে দলীয় কার্যালয়ে তৈরি করে, সেখানে নানা অনৈতিক কার্যকলাপ চালাচ্ছেন। এই অভিযোগ পেয়ে অভিযানে নামে পুলিশ। মঙ্গলবার পার্টি অফিসটি পুলিশ দখলমুক্ত করতে যায়। সেখানে বিজেপি সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি চলে। পুলিশের লাঠিচার্জে মহিলা সমর্থকরাও জখম হন বলে অভিযোগ বিজেপির। পুলিশের বক্তব্য, রেলপুলিশ লোকাল পুলিশের সাহায্য নিয়ে কার্যালয়টি দখলমুক্ত করতে গেলে বিজেপির লোকেরা পুলিশের কাজে বাধা দেয়।
এর প্রতিবাদে বুধবার বিকেলে বনগাঁ শহরে এক মিছিল করে স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব। শ্রীপল্লির নিউ বাটা মোড় থেকে গোটা বনগাঁ পরিক্রম করে মতিগঞ্জে শেষ হয় মিছিল। সেখান থেকেই বৃহস্পতিবার বনগাঁয় ১০ ঘণ্টা বনধের ডাক দিয়ে বারাসাত সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি দেবদাস মন্ডল বলেন, “পুলিশ ও তৃণমূলের সন্ত্রাসের প্রতিবাদে আমরা প্রতিবাদ মিছিল করলাম। আগামিকাল সকাল ৬টা থেকে বিকাল ৪টে পর্যন্ত বনগাঁ শহর বনধের ডাক দিয়েছি।”
সেইমতো আজ সকাল থেকে দোকানপাট বন্ধ ছিল। তবে বনধে শহর যাতে স্তব্ধ হয়ে না যায়, সেই কারণে দিনের শুরুতেই পথে নেমেছে তৃণমূল। বিভিন্ন জায়গা ঘুরে দোকানিদের বোঝান যাতে তাঁরা দোকানপাট খোলা রাখেন। তাতে আংশিক সাড়া পড়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও বনগাঁ পৌরসভার চেয়ারম্যান শংকর আঢ্য বলেন, “বনধ সম্পূর্ণ ব্যর্থ। বাজারহাট খোলা রয়েছে, যানবাহন চলছে। অনৈতিক বনধ বনগাঁর মানুষ সমর্থন করেন না।” তবে বনগাঁ উত্তর কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক বিশ্বজিত দাসের পালটা বলেন, “বনধ স্বতঃস্ফূর্ত। আমাদের ছেলেরা কেউ বনধ সফল করতে রাস্তায় নামেনি। যদি স্বতঃস্ফূর্ত বনধ না হতো, তাহল তৃণমূলকে পথে নামতে হতো না। পুরসভার চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে হুমকি দিয়ে জোর করে দোকান খোলানো হয়েছে। ওরা বলেছে যে আজ দোকান না খুললে, আর কখনও খুলতে দেবে না, ব্যবসাও করতে দেবে না।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.