Advertisement
Advertisement

দেবী পালাতে পারেন, এই আশঙ্কায় ভক্তদের ‘নজরবন্দি’তে মা কালী

সাঁইথিয়ার বাগডোলায় মায়ের চ্যালা সব ধর্মের প্রতিনিধি।

Bizarre ritual in Birbhum Kali temple will leave you baffled
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:October 16, 2017 3:35 pm
  • Updated:October 16, 2017 3:37 pm  

নন্দন দত্ত, সিউড়ি: এই মা সবার। যাঁর চ্যালারা হিন্দু, মুসলমান সব সম্প্রদায়ের। যাঁরা কখনই দেবীকে কাছ ছাড়া করতে চান না। এর জন্য একসময় মাকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখতে হত মন্দিরে। এমনকী বিসর্জনের পর যাতে গ্রাম ছেড়ে মা চলে না যান, তার জন্য দিন-রাত পুকুর পাড়ে পাহারা দেন ভক্তরা। এমনই সর্বধর্ম সমন্বয়কারী কালীমাকে দেখতে ভিড় জমে বীরভূমের সাঁইথিয়ার বাঘডোলা গ্রামে।

[জঙ্গিপুরে মহাকাল ভৈরবের সঙ্গে পূজা পান ৫০০ দেবদেবী]

Advertisement

এখানে মায়ের মূর্তি বলতে শুধু গলা থেকে মুখটুকু। ৩ খণ্ড নিমকাঠ দিয়ে বংশ পরম্পরায় যা তৈরি করেন সাঁইথিয়ার পাথাই গ্রামের সূত্রধরেরা। মন্দিরের পিছনে ‘কালী’ গড়ে  বিসর্জন দেওয়া হয় মূর্তি। সেখানেই দড়ি দিয়ে, শিকলে বেঁধে পুকুরের জলের ভিতর মাকে বেঁধে ডুবিয়ে রাখাই নিয়ম। মায়ের বর্তমান পূজারি দেবাংশীরা বলেন, পরের দিন পুকুর থেকে মায়ের অবয়ব না তোলা পর্যন্ত শান্তি থাকে না। কেন যেন সবাই মনে করেন মাকে বেঁধে না রাখলে তিনি হয়তো চলে যেতে পারেন। গ্রামবাসীরা জানান, আগে সারা বছর মা কালীকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হত। চার পুরুষ আগে মায়ের পুজো পদ্ধতির পরিবর্তনের পর আর মাকে শিকল দিয়ে বাঁধা হয় না, ভক্তির বন্ধনে তিনি বাঁধা পড়েন।

[মুসলিম বধূর হাতেই দেবীর আরাধনা, সম্প্রীতির কালীপুজো হবিবপুরে]

গ্রামবাসীদের দাবি অন্ত্যজ শ্রেণির প্রতিনিধি কালু বাগদি স্বপ্নাদেশে মায়ের পুজো শুরু করেন। মনিকর্ণিকা কাঁদরের জলে ভেসে এসেছিল নিমের কাঠ। সেটিকে তুলে তিনি  গলা থেকে মুখের আদলে মূর্তি তৈরি করেন। প্রায় সাড়ে তিনশো বছর আগে কালুই ছিলেন মায়ের প্রথম দেবাংশী। তখন মাকে চামুণ্ডা রূপে পুজো করা হত। কিন্তু বেশ কয়েক বছর পর ভক্তরা বুঝতে পারেন পূজারি দেবাংশীদের বংশ লোপ পাচ্ছে। তখন বদলে যায় পুজো পদ্ধতি। সেই থেকে দক্ষিণাকালী রূপে পুজো পান মা। বর্তমান পূজারীরা জানান, পুজোর পদ্ধতি বদলের পর মাকে আর শিকলে বাঁধা হয় না। তবে  চোখে চোখে রাখা হয়। মাকে সারা বছর পাহারা দেন তাঁর চ্যালারা। তাঁরা মুসলমান, হিন্দু এবং অন্যান্য সম্প্রদায়ের। বছরভর পুজো হয়। ১২জন দেবাংশীর পরিবার মায়ের সেবা করেন। মন্দিরের পিছনেই রয়েছে মীর সাহেবের আস্তানা। একই অঙ্গনে আছেন সন্ন্যাসী গোঁসাই আর এই প্রজন্মের উপেন্দ্রনাথ দেবাংশীর আস্তানা। তাঁরা স্বেচ্ছায় মায়ের  চ্যালা হয়েছেন। বাঘডোলা গ্রামের বাসিন্দারা বলেন, মা আছেন বলেই সকলে মিলেমিশে শান্তিতে রয়েছেন।

ছবি: সুশান্ত পাল

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement