Advertisement
Advertisement

Breaking News

Bishnupur

‘ন্যাচারাল হানি’কে ব্র্যান্ড বানাতে চান, চাকভাঙা মধুই সুখ মহম্মদের সুখের ঘরের চাবিকাঠি

৫০ থেকে ৬০ জন এখন তাঁর সঙ্গে মধু সংগ্রহের কাজ করেন।

Bishnupur man wants to make natural honey a huge brand

গাছ থেকে মধু পাড়ছেন সুখ মহম্মদ। নিজস্ব চিত্র

Published by: Suhrid Das
  • Posted:February 26, 2025 1:27 pm
  • Updated:February 26, 2025 1:27 pm  

স্টাফ রিপোর্টার, বিষ্ণুপুর: আঠারো বছর ধরে সবাইকে মৌমাছির মধুর মিষ্টতার আস্বাদ দিয়ে আসছেন তিনি। সবাইকে মধু খাইয়ে নিজের জীবনে সুখের ঠিকানা খুজে নিয়েছেন সুখ মহম্মদ।

অথচ অভাবের সংসারে পরিবারের মুখে খাবার জোটাতে কম পরিশ্রম করতে হয়নি তাঁকে। কিন্তু পরিশ্রম করেও মিলছিল না সিদ্ধি। তাই রুজির টানে আঠারো বছর আগে ওন্দা থানার চিঙ্গানী গ্রামের বাসিন্দা সুখ মহম্মদ বেছে নিয়েছিলেন মৌমাছিদের। যেখানে বেশিরভাগ যুবক দশটা-পাচটার চাকরি খোঁজন, সেখানে তিনি মৌমাছিদেরই যেন জীবনের ধ্রুবতারা বানিয়ে ফেলেছেন।

Advertisement

এতে শুধু নিজেই প্রতিষ্ঠা পাননি, ওন্দার সুখ মহম্মদের হাত ধরে আজ অন্তত শ’খানেক মানুষ তাঁদের পরিবারে রোজগারের পথ পেয়েছেন। অথচ কম কাঠখড় পোড়াতে হয়নি তাঁকে। চরম দারিদ্র্য থেকে বাঁচার পথ খুঁজতে গিয়ে সুখ মহম্মদ বিভিন্ন জঙ্গলে ঘুরে ঘুরে লক্ষ্য রাখতেন কোন, কোন গাছে মৌচাক ধরেছে। শহরের বড়, বড় বাড়িগুলিতেও অনেক সময় মৌমাছিরা বাসা বেঁধে থাকে। সুখ মহম্মদ একদিন সাহস করে সেই মৌচাক ভাঙতে শুরু করেন। ভাঙা মৌচাক থেকে বের করে আনেন খাঁটি মধু। হাটেবাজারে ওই মধু বিক্রি করে যৎসামান্য উপার্জন করে সংসার চালাচ্ছিলেন। সেই শুরু। এরপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে।

মৌচাক ভাঙতে গিয়ে কামড় খেয়েছেন অজস্র মৌমাছির। প্রথমদিকে মৌমাছির কামড়ে জ্বর চলে আসত। সুখ মহম্মদ বলেন, “মৌমাছির কামড় খেতে খেতে তাঁর শরীরে নাকি অ‌্যান্টিবডি তৈরি হয়ে গিয়েছে। তাই এখন আর হাজার কামড়েও কিছু হয় না। এভাবেই শুরু হয় আরও মৌচাক ভেঙে মধু সংগ্রহ করার কাজ।” ধীরে ধীরে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের মাধ্যমে হাটে, মেলায় নিয়ে গিয়ে সেই মধু বিক্রি করতে শুরু করে দেন ওই ব‌্যক্তি। প্রথম দিকে বিনা লেবেলে শুধু কাচের শিশিতে ভরে মধু বিক্রি করতেন। এরপর কিছুটা চাহিদা বাড়তেই নিজের সংগ্রহ করা মধুর নাম দিয়ে দেন ‘ন্যাচারাল হানি’। ওই নামে ছাপানো হয় লেবেল। বর্তমানে এই ন‌্যাচারাল হানির এক কেজি শিশির দাম ৩৩৫ টাকা।

সুখ মহম্মদের মৌমাছির চাক থেকে মধু সংগ্রহ দেখলে অবাক হতে হয়। চাকের মৌমাছিদের জামার পকেটে রেখে মৌচাক থেকে মধু সংগ্রহ করেন। আবার মৌমাছিদের চাকের মধ্যে ফিরিয়ে দেওয়ার এক অনন্য কায়দা রপ্ত করেছেন তিনি। তাঁর এই নজিরবিহীন মধু সংগ্রহ ইতিমধ্যেই ইউটিউবের মাধ্যমে দেশে-বিদেশে ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। সুখ মহম্মদ-সহ পঞ্চাশ থেকে ষাটজন এখন গভীর জঙ্গলে মধু সংগ্রহ করেন। সুখ মহম্মদের কথায়, ‘‘মৌমাছিদের প্রতি ভালবাসা আমার জীবনকে সুখের মুখ দেখিয়েছে।’’

এই সাফল্যকে এখানেই থামিয়ে দিতে চান না ওই ব‌্যক্তি। সুখ মহম্মদ বলছেন, ‘‘এই মৌচাক ভাঙা খাঁটি মধু নিয়ে আমি বিশ্ববাজারে সুনাম কিনতে চাই। এখন বাজারে যত বড় সংস্থার ব্র‌্যান্ডের মধু হোক না কেন সবেতেই কিছু রাসায়নিক মেশানো থাকে। সেটাই আমি বিশ্বের মানুষকে যাচাই করে দেখিয়ে দিতে চাই। আমার মধুতে কোনও রাসায়নিক থাকে না।’’

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement