টিটুন মল্লিক, বাঁকুড়া: প্রবাদ আছে, ‘‘যিনি তলোয়ার দিয়ে রাবণ কাটেন, তাঁর বংশ লোপ পায়। রাবণ কাটার পর দেহের মাটি বাড়িতে রাখলে গৃহস্থের মঙ্গল হয়।’’ প্রচলিত বিশ্বাসে আজও বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরে অনুষ্ঠিত হয় রাম রাবণের যুদ্ধ ও যুদ্ধ শেষে রাবণ বধ। যার পোষাকি নাম ‘রাবণ-কাটা’।
মল্লরাজাদের হাতে শুরু হওয়া দুর্লভ এই লোক নৃত্য ‘রাবণ-কাটা’ আজও বিষ্ণুপুরের প্রাচীন এই ঐতিহ্য বয়ে নিয়ে চলেছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। শিল্পীদের আক্ষেপ, একসময়ে রাজবাড়ির আনুকূল্যে ধুমধাম করে এই উৎসব পালন করা হত। এখন রাজা আর নেই। সরকারি সাহায্যও তেমন মেলে না। অবলুপ্তি পথে এতিহ্যবাহী ‘রাবণ-কাটা‘ লোকনৃত্য। বিষ্ণুপুরের বিধায়ক তুষার ভট্টাচার্যের বক্তব্য, “যে কোনও উপায়ে বাংলার এই সংস্কৃতি বাঁচিয়ে রাখা হবে।”
[সরকারি নির্দেশকে বুড়ো আঙুল, শহরে দেদার বিকোচ্ছে নীলকণ্ঠ পাখি]
দুর্গা পুজোর শেষ অর্থাৎ বিজয়া দশমীর দিন থেকে শ্রীশ্রী রঘুনাথ জিউয়ের অভিষেকের মধ্যে দিয়ে মন্দিরের সামনে রাবণের ভাই কুম্ভকর্ণকে বধ করে সূচনা হত বাংলার দশেরা। কিন্তু সেসব আজ অতীত। বর্তমানে একমাত্র দ্বাদশীর দিন সকাল থেকে নাচ গানের পর ‘যুদ্ধংদেহী’ রাবণের মূর্তি সাজানো হয়৷ রাম,সীতা ও লক্ষণের মূর্তির সামনেই রঘুনাথ জিউ কাছ থেকে রাবণ পর্যন্ত ২১ বার যাতায়াতের পর সুগ্রীব আর জাম্বুবানের নাচের মধ্যেই রাবণের গলায় হনুমান কোপ বসায়৷ বিষ্ণুপুরের নিমতলায় অবস্থিত রঘুনাথ জিউয়ের রাম, সীতা, লক্ষণ বিগ্রহ প্রতিষ্ঠিত হয়ে পূজিত হয় সুদূর অতীত থেকে। মুখোশ শিল্পী সুকুমার বারিক বলেন, ‘‘এই রাবণ কাটার মুখোশ তাঁরা তৈরি চল রয়েছে প্রায় ২০০ বছর ধরে। গামার কাঠের তৈরি এই মুখোশগুলি।’’ শিল্পীরা জানিয়েছেন, ‘‘এই নাচের দুটো ভাগ, প্রথমত দেব চাল, দ্বিতীয়ত রাক্ষস চাল। প্রথমটিতে আছে লালিত্য, আর পরেরটিতে আছে বলিষ্ঠতা।
[বনবস্তির বাসিন্দাকে পিটিয়ে খুন, কাঠগড়ায় বনদপ্তর]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.