রাজকুমার, আলিপুরদুয়ার: কখনও মাঠে পড়ে থাকছে মৃত প্যাঁচা, কখনও মারা যাচ্ছে টিয়াপাখি। কখনও মাঠে পড়ে থাকছে ইঁদুর, এমনকী, শিয়ালের মৃতদেহ। আলিপুরদুয়ার জেলার ফালাকাটা ব্লকের দেওগাঁও গ্রাম পঞ্চায়েতের বিভিন্ন এলাকার শস্যখেতে প্রায়ই মিলছে এমনই মৃত পাখি, শেয়াল, ইঁদুর।
[গঙ্গাবক্ষে কন্যাসন্তান প্রসব তীর্থযাত্রীর, নাম রাখলেন জাহ্নবী]
পরিবেশপ্রেমীদের আশঙ্কা, ফসলের খেতে মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহারের ফলেই এভাবে বেঘোরে মৃত্যু হচ্ছে পশুপাখির। এতে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। আলিপুরদুয়ার নেচার ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা অমল দত্ত বলেন, “এখানে বাবুই, দোয়েল, শালিক আর এখন আগের মতো দেখা যায় না। এভাবে ফসলের খেতে লাগাতার পশুপাখির মৃত্যু ভয়ঙ্কর ভবিষ্যতের ইঙ্গিত দিচ্ছে।” এলাকাবাসীর অনেকেরই সন্দেহ, ফসলের খেতে ব্যবহৃত কীটনাশকের প্রভাবেই মারা যাচ্ছে পশুপাখি। এমনকি খয়েরবাড়ি বনাঞ্চল থেকে আসা পাখি, শেয়াল থেকে শুরু করে মেঠো ইঁদুর পর্যন্ত মারা যাচ্ছে। জেলা কৃষি দপ্তরের ডেপুটি ডিরেক্টর হরিশ চন্দ্র রায় বলেন, “আমরা মূলত নীল ও সবুজ প্রকারের কীটনাশক ব্যবহারের জন্য কৃষকদের বলি। তাঁরা সাধারণত ওই ধরনের কীটনাশকই ব্যবহার করেন। তা সত্ত্বেও কেন এমন হচ্ছে, বুঝতে পারছি না। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।”
৩০ নভেম্বর ফালাকাটা ব্লকের দক্ষিণ দেওগাঁওয়ের ভাঙারপাড়ে সকালে একটি প্যাঁচার মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের সন্দেহ, বিষক্রিয়ায় মৃত্যু হয়েছে প্যাঁচাটির। জানা গিয়েছে, আলুচাষের জন্য জমি প্রস্তুত করতে প্রচুর পরিমাণে সার ও কীটনাশক ব্যবহার করছেন কৃষকরা। ফলে মৃত্যু হচ্ছে ইঁদুর-সহ বিভিন্ন পোকামাকড়ের। এ ধরনের মৃত কোনও প্রাণীকে খেয়েই প্যাঁচাটির মৃত্যু হতে পারে বলে সন্দেহ এলাকাবাসীর। গত ২০ ডিসেম্বর নিজেদের সুপারি বাগানে একটি অসুস্থ টিয়াপাখি দেখতে পেয়ে শুশ্রূষা করে সেটিকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন ঝাড়বেলতলির বাসিন্দা নীহারেন্দু বর্মন। তবে পরদিন সেটি মারা যায়। নীহারেন্দুবাবুর সন্দেহ, কীটনাশক ব্যবহার করার পর কোনও শস্য খেয়েই অসুস্থ হয়ে মারা যায় পাখিটি। ফালাকাটার বাসিন্দা তথা পরিবেশকর্মী সোমনাথ গোস্বামী বলেন, “বর্তমানে অতিরিক্ত লাভের আশায় অনেক কৃষকই মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক ও সার ব্যবহার করে থাকেন । প্যাকেটে ব্যবহার বিধি, মাত্রা লেখা থাকলেও অনেকেই তা মানেন না। অনেকে পড়তেও জানেন না। কীটনাশক স্প্রে করার পর ওই ফসল পশু পাখি খেলে মৃত্যু হতে পারে। সচেতনতা বৃদ্ধি না হলে সমস্যা বেড়েই চলবে।”
[‘এমন কাণ্ড অনেক ঘটিয়েছি’, কুকরছানা নিধনকে সমর্থন চিকিৎসকের]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.