নন্দন দত্ত, সিউড়ি: লাদাখ থেকে ফিরেই বিয়ে করার কথা ছিল রাজেশ ওরাওয়ের। বাড়িতে শুরু হয়ে গিয়েছিল বিয়ের প্রস্তুতিও। কিন্তু আচমকাই দুঃসংবাদ। চিন-ভারতের যুদ্ধে সীমান্তে শহিদ হয়েছেন রাজেশ। মুহূর্তে বিয়ে বাড়ির জৌলুস ফিকে। গোটা বাড়িতে শোকের আবহ। ছেলের শোকে মূর্ছা যাচ্ছেন মা। চোখে জল স্থানীয়দেরও।
বীরভূমের বেলগড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা রাজেও ওরাও। ছোট থেকেই বেশ সাহসী সে। শেওড়াকুড়ি বংশীধর উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশোনা শেষ করে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন তিনি। সে প্রায় বছর তিনেক আগের ঘটনা। গ্রামের ছেলে সেনাবাহিনীতে যাওয়ায় গর্বে বুক ভরে উঠেছিল মানুষের। তার উপর রাজেশ ছিলেন গ্রামের প্রথম যুবক যিনি সেনায় যোগ দিয়েছিলেন। ফলে গর্ব ছিল অনেকগুণ বেশি। বাবা সুভাষ ওরাও পেশায় দিনমজুর। মা মমতা গৃহবধূ। রাজেশের সংসারে বাবা ও মা ছাড়াও রয়েছেন দুই বোন। রাজেশ সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার পর সংসারে হাল ফেরে। তিন বছরে অনেকটাই স্বচ্ছ্বলতা ফেরে। তাই এ বছর ছেলের বিয়ে দিবেন বলে স্থির করেন বাবা-মা। মেয়ে দেখাও হয়। কথা ছিল লাদাখ থেকে ফিরেই বিয়ের পিঁড়িতে বসবেন রাজেশ। কিন্তু ছেলের বদলে বীরভূমের বাড়িতে এসে পৌঁছল ছেলের মৃত্যুর সংবাদ।
লাদাখে চিন ও ভারতের মধ্যে সংঘর্ষে শহিদ হয়েছেন রাজেশ ওরাও। এই খবর শোনা মাত্রই মূর্ছা যান মা মমতা। শোকে পাথর হয়ে যান বাবা সুভাষ ওরাও। দুই বোন ক্রমাগত কেঁদেই চলেছেন। দু’দিন আগেও যাঁর সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন তাঁরা, বাড়ির সেই ছেলে আজ আর নেই। শোকের বাতাবরণ গোটা গ্রামে। শোকস্তব্ধ রাজেশের শ্বশুরবাড়িও। হবু জামাইয়ের শহিদ হওয়ার খবর শুনে সেখানেও কান্নার রোল। যদিও রাজেশের মৃত্যুর খবর এখনও প্রশাসনিকভাবে জানানো হয়নি। জেলা পুলিশ সুপার শ্যাম সিং জানান, তাঁদের কাছে এই সম্পর্কিত কোনও তথ্য নেই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.