নন্দন দত্ত, সিউড়ি: বন্ধুর জন্য বন্ধু কখনও প্রাণ দিতে পারে, আবার কখনও বন্ধুই হয়ে ওঠে হত্যাকারী। দুই পরস্পরবিরোধী বন্ধুত্বের সাক্ষী থাকল বীরভূম (Birbhum)। গত সপ্তাহে এখানে বন্ধুকে ডেকে খুনের অভিযোগ উঠেছিল বন্ধুরই বিরুদ্ধে। আর এবারের ঘটনা অন্যরকম। বন্ধু আত্মঘাতী হয়েছে শুনে নিজেকে শেষ করে দিল আরেক অভিন্নহৃদয় বন্ধু। ঘটনাটি ঘটেছে মহম্মদবাজারের দেউচা এলাকায়। জোড়া মৃত্যুর তদন্তে নেমেছে পুলিশ।
দেউচার বাসিন্দা বছর ষোলোর কিশোর স্টিফেন হেমব্রম। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, স্টিফেন বাবার কাছে একটি মোটর বাইক চেয়েছিল। কিন্তু ছেলের সেই আবদার মেটায়নি বাবা। বাইক না পেয়ে আত্মঘাতী হয় স্টিফেন। সোমবার দুপুরে স্টিফেনের আত্মঘাতী (Suicide) হওয়ার খবর পায় তার বন্ধু চ্যাম্পিয়ন মুর্মু। তা শুনে সে নিজেকে আর ঠিক রাখতে পারেনি। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, চ্যাম্পিয়ন হতাশার সুরে বারবার বলছিল, প্রিয় বন্ধুই যখন নেই, তখন আর বেঁচে থেকে কী করবে! বন্ধুর মতো সেও নিজেকে শেষ করে দেবে। প্রসঙ্গত চ্যাম্পিয়ন কিন্তু দেউচার বাসিন্দা ছিল না। তার আসল বাড়ি কুরমিথায়। কিন্তু মায়ের মৃত্যুর পর সে দেউচায় মামার বাড়িতেই থাকত। সেই পাড়ারই বন্ধু ছিল স্টিফেন।
চ্যাম্পিয়নকে একটি গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পাওয়া যায়, সোমবার রাতে এই খবর পাওয়া যায়। সকলে ছুটে যান ঘটনাস্থলে। দেখতে পান, একটি গাছে গলায় দড়ি দেয় সে। দেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা চ্যাম্পিয়নকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এত কম সময়ের মধ্যে সমবয়সি দুই বন্ধুর আত্মহত্যার ঘটনা নাড়িয়ে দিয়েছে গোটা গ্রামকে। এলাকার বাসিন্দা শিবলাল সোরেনের কথায়, ”স্টিফেনের মৃত্যুর পর থেকেই বারবার চ্যাম্পিয়ন বলছিল, আমার আর বেঁচে থেকে কী হবে! আমিও মরে যাব। ওকে অনেকবার বোঝানোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু কোনও লাভ হল না।” গ্রামবাসীদের আরেকাংশের অবশ্য দাবি, বন্ধুর শোকে আত্মঘাতী নয়, মামার বকুনি খেয়েছিল চ্যাম্পিয়ন। সেই দুঃখে আত্মহত্যা করেছে। জোড়া মৃত্যুর তদন্তে নেমেছে মহম্মদবাজার থানার পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.