বীরভূমে তৃণমূলের পঞ্চায়েত অফিস ভাঙচুর। নিজস্ব চিত্র।
নন্দন দত্ত, সিউড়ি: তৃণমূলের পঞ্চায়েতে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ উঠল তৃণমূলের গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্যদের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটে সাঁইথিয়া ব্লকের বনগ্রাম পঞ্চায়েতে। যার জেরে কাল বুধবার বিকালে সব সদস্যদের নিয়ে বিশেষ বৈঠক ডাকলেন সাঁইথিয়া বিডিও সুজন কুমার পান্ডে। তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্ধের জেরেই এই ভাঙচুর বলে দুপক্ষই স্বীকার করেছে।
ব্লক সভাপতি সাবের আলি খান জানান, “দলের অন্দরের বিষয় হলে আমরা বসে মিটিয়ে নেব।” যদিও বনগ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তুষার মণ্ডল দাবি করেন, সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর থেকে গুরুত্বপূর্ণ নথি নষ্ট করেছে তাঁরই দলের সদস্যরা। অন্যদিকে তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি অরবিন্দ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, “তুষারের সব সাজানো ঘটনা। দলকে কালিমালিপ্ত করে একনায়কতন্ত্র চালাতে চাইছে তুষার মণ্ডল।”
বনগ্রাম অঞ্চলে তুষার এবং অরবিন্দ ওরফে টমের গোষ্ঠীর লড়াইয়ের জেরে ওই এলাকায় লোকসভা নির্বাচনে বিপুল ভোটে পরাজিত হয়েছে তৃণমূল। দলীয় নির্দেশ থাকলেও তা অমান্য করে নিজের পছন্দের প্রধান করেন তুষার। তার পর থেকে ১৫ সদস্যের বনগ্রাম পঞ্চায়েতে দ্বিধাবিভক্ত তৃণমূল। ১৩ জন বিজয়ী তৃণমূলের মধ্যে একদল তুষারের তো অন্য দল অরবিন্দের অনুগামী। মঙ্গলবার বনগ্রাম পঞ্চায়েতে স্বচ্ছভারত অভিযানের বিষয়ে কথা বলতে ও পঞ্চায়েতের কাজ পরিদর্শনে বিডিওর আসার কথা ছিল। তাতে তুষার তাঁর অনুগামীদের ডাকলেও তাঁর বিপক্ষ দলের কোনও নির্বাচিত সদস্যকে ডাকেনি বলে অভিযোগ।
পঞ্চায়েত সদস্য শানু চট্টোপাধ্যায় জানান, “মঙ্গলবার দুপুরে তৃণমূল পার্টি অফিসে বসে আছি, দেখি আমাদের কয়েকজন সদস্য পঞ্চায়েতে যাচ্ছে। আমরা ততক্ষনাৎ আমাদের অন্য জনপ্রতিনিধি গৌর সাহা, জ্যোৎস্না বায়েন, জ্যোতি দাস, সুকুমার বাগদি সমেত কয়েকজন পঞ্চায়েতে যায়। পঞ্চায়েতের সচিব সঞ্জয় কুমার সেনের কাছে জানতে চায় বিডিও আসার কথা আমাদের জানানো হয়নি কেন? এ নিয়ে আমাদের বচসা হয়। আমরা ফিরে আসি। এসে শুনি তুষার সাজিয়ে চেয়ার উলটে ভাংচুরের মিথ্যা অভিযোগ এনেছে।” উপপ্রধান তুষার মণ্ডল জানান, “পঞ্চায়েতে কিছু অসামাজিক প্রতিনিধি আছে, তারা এসে পঞ্চায়েতে ভাঙচুর চালায়। বিডিও সাহেব শেষ মুহূর্তে পঞ্চায়েতে আসার পরিকল্পনা বাতিল করেন। তারই প্রতিবাদে সরকারি কর্মীদের মারধর, চেয়ার টেবিল ভাঙচুর, মহিলা সদস্যদের গায়ে হাত দেওয়ার মতন ঘটনা ঘটিয়ে চলে যায়।” যদিও সচিব সঞ্জয় কুমার সেন জানান, তাঁকে অন্য সদস্যরা জবাবদিহি করছিল। তবে ভাংচুর হয়েছিল কিনা তিনি দেখেননি। বিডিও সুজন কুমার পান্ডে জানান, “ফোনে অভিযোগ শুনেছি। সন্ধ্যা পর্যন্ত কেউ তা লিখিত আকারে দেয়নি। তবে কেন এমন হচ্ছে জানতে কাল বুধবার বিকালে সব জনপ্রতিনিধিকে ব্লক অফিসে বৈঠকে ডেকেছি।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.