Advertisement
Advertisement

Breaking News

ভাতের থালায় ফোঁটা ফোঁটা রক্ত, ময়ূরেশ্বরে যুবক খুনে রহস্য জটিল

দু’বোনের বক্তব্যে অসঙ্গতি, সন্দেহ বাড়ছে পুলিশের।

Birbhum murder mystery deepens
Published by: Shammi Ara Huda
  • Posted:September 4, 2018 5:43 pm
  • Updated:September 4, 2018 5:46 pm  

নন্দন দত্ত, সিউড়ি: রান্নাঘরে দু’টো আধখাওয়া ভাতের থালা। দেখলে মনে হবে, দাদা এখনই এসে পুরোটা খাবেন। কিন্তু দাদার শেষ খাওয়াটা আর সম্পূর্ণ হল না। থালার পাশে ফোঁটা ফোঁটা রক্তবিন্দু। সোজা চলে গিয়েছে দাদার ঘর পর্যন্ত। এই দৃশ্যই এখন পুলিশকে ভাবাচ্ছে। বিয়ে নিয়ে বাবা-দাদার সঙ্গে তরজা এতটাই তেতো হয়েছিল যে দু’বোনই খুন করল দাদাকে? বীরভূমের ময়ুরেশ্বরের ব্রাক্ষ্মণবহড়া গ্রামের শিক্ষক বৃন্দাবন মণ্ডল খুনে এই অনুমানটাই না সত্যি হয়, ভাবাচ্ছে তদন্তকারী পুলিশ আধিকারিককে। ছড়াচ্ছে রহস্যের জাল।

অবিবাহিত দু’বোনর অভিযোগ ছিল, বয়স ২৬-২৭ পেরিয়ে গেলেও বাবা-দাদা তাদের বিয়ের উদ্যোগ নিচ্ছেন না। যৌবনে এবার ভাটা পড়ছে। নিজেরাই লজ্জার মাথা খেয়ে বেশ কিছুদিন ধরে শিক্ষক দাদাকে বিয়ে দেওয়ার কথা বলছিলেন। কিন্তু দাদা-বাবাদের মাথায় কোনও কথাই ঢুকছিল না। দাদা দু’বোনকে ছাদনাতলায় পাঠানোর কোনওরকম উদ্যোগ নিচ্ছিলেন না। সেই আক্রোশ থেকেই দাদাকে প্রথমে শ্বাসরোধ করে আগুন লাগিয়ে খুন করেছিল,  না কি এর পিছনে তৃতীয় কোনও ব্যক্তির হাত রয়েছে!

Advertisement

রান্নাঘরে সাজানো খাবারের থালার পাশ থেকে রক্তের দাগ দাদার ঘর পর্যন্ত চলে যাওয়ায় সন্দেহ করছে পুলিশ। জেরার মুখে মৃতের বাবা প্রভাত মণ্ডলের বয়ানেও অসঙ্গতি ধরা পড়েছে। জেরায় কখনও তিনি জানিয়েছেন, ঘটনার সময় বাড়িতেই ছিলেন। আবার কখনও বলেছেন,  পাড়ায় জন্মাষ্টমীর কীর্তন শুনতে গিয়েছিলেন। পুলিশি তদন্তে জানা গিয়েছে,  বছর খানেক ধরে মৃত বৃন্দাবনের দু’বোনের বিয়ের সম্বন্ধ ঠিক হলেও তা বারবার ভেঙে যাচ্ছিল। কে বা কারা সেই সম্বন্ধ ভেঙে দিচ্ছিল পুলিশ সে ব্যাপারে প্রভাতবাবুকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। বৃন্দাবনের খুনের সঙ্গে বিয়ে ভাঙার কোনও সম্পর্ক রয়েছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

[ডাকঘরে মিলছে না গঙ্গাজল, বিশ্বকর্মা পুজোর আগে আসানসোলে হাহাকার]

ঘটনার পর সোমবার রাতে বীরভূমের ময়ূরেশ্বরের বৃন্দাবন মণ্ডলের বাড়ি যায় পুলিশ। তদন্তে পুলিশ দেখতে পায়, বাড়ির রান্নাঘরে তিনটি খাবারের থালা রয়েছে। তার মধ্যে দু’টি থালা আধ খাওয়া অবস্থায় পড়ে রয়েছে। আরেকটিতে ভাত, তরি-তরকারি সাজানো। দু’টি আধ খাওয়া থালাতে মাছের কাঁটা পড়ে রয়েছে। এরপর পুলিশ দেখতে পায় রান্নাঘরে ভাতের থালার পাশে বিন্দু বিন্দু রক্ত যা সিঁড়ি দিয়ে সোজা বৃন্দাবনের ঘরের সেই খাট পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছে। পুলিশের সন্দেহ,  আগেই কি বৃন্দাবনকে খুন করে দেহ ঘরের মধ্যে নিয়ে গিয়ে তাতে আগুন লাগানো হয়েছিল। রান্নাঘরে কি বৃন্দাবনকে প্রথমে ধারালো কোনও অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে?  না কি এর পেছনে তৃতীয় কোনও ব্যক্তি রয়েছে। ইতিমধ্যেই পুলিশ বৃন্দাবনের বোন বাণেশ্বরী মণ্ডল ও পিঙ্কি মণ্ডলের আচরণে কিছু পরিবর্তন লক্ষ্য করেছে। তাদের এই বদলে যাওয়া আচরণ সন্দেহ বাড়িয়ে দিয়েছে।

আপাতত সিউড়ি হাসপাতালে দু’বোনের চিকিৎসা চলছে। তারা হাতের শিরা কেটে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিল। পুলিশি পাহারাতেই রয়েছে। সোমবারই ঘটনাস্থলে তদন্তে যান রামপুরহাট মহকুমা পুলিশ আধিকারিক অভিষেক রায়। কিন্তু তদন্তের বিষয়ে প্রকাশ্যে কিছুই বলেননি তিনি। মুখে কুলুপ জেলা পুলিশ সুপার কুণাল আগরওয়ালেরও। মঙ্গলবার সকাল থেকে থমথমে রয়েছে ময়ূরেশ্বরের ব্রাহ্মণবহড়া গ্রাম। ঘটনার পর থেকে বৃন্দাবন মণ্ডলের ঘরটি বন্ধই রয়েছে।

[নাটকের মঞ্চে জাঁদরেল পুলিশ কর্তা, সাড়া পড়ল বালুরঘাটে]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement