নন্দন দত্ত, সিউড়ি: ঘরে ফিরলেন চিনে আটকে থাকা বীরভূমের দুবরাজপুরের মইনুদ্দিন মণ্ডল। শনিবার রাতে দুবরাজপুরের খণ্ডগ্রামে নিজের বাড়িতে ফিরে তিনি যেমন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেন, তেমনই হাঁপ ছেড়ে বাঁচল পরিবারও। চিনে মেডিক্যাল নিয়ে পড়তে যাওয়া মইনুদ্দিনের ফাইনাল সেমিস্টার আগামী মে মাসে। তার কী হবে, সে নিয়ে এখনই কিছু বলতে পারলেন না সদ্য বাড়ি ফেরা ছেলেটি।
২০১৫ সালের ডিসেম্বরে দুবরাজপুরের খণ্ডগ্রাম থেকে চিনের সিংজিয়াং হাসপাতালে চিকিৎসাশাস্ত্র নিয়ে পড়তে যান মইনুদ্দিন। কিছুদিন আগেই দুবরাজপুরে নিজের বাড়িতে ছুটি কাটিয়ে চিনে ফিরেছিলেন। ইচ্ছে ছিল, মে মাসে ফাইনাল সেমিস্টার দিয়ে আবার বাড়ি ফিরবেন। কিন্তু তার মাঝে করোনা ভাইরাসের উদ্বেগে ঘুম উড়ে গিয়েছিল দু’তরফের। খণ্ডগ্রামে বসে চিন্তায় দিন, রাত এক করে ফেলেছিলেন বাবা গিয়াসউদ্দিন মণ্ডল ও মা শামিমা বিবি। গিয়াসউদ্দিন বলছেন, ”মারণ ভাইরাসের কথা শোনার পর থেকেই ছেলেকে নিয়ে উদ্বেগ বাড়তে থাকে। আমরা চাইছিলাম, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ছেলে আমাদের কাছে ফিরুক। ওদিকে হাসপাতালে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা। মইনুদ্দিনের কথায় রীতিমতো ভয় ঢুকে গিয়েছিল আমাদের মধ্যে। এই কয়েকটা দিন আতঙ্কের মধ্যে ছিলাম।”
মইনুদ্দিন জানাচ্ছেন, সিংজিয়াং হাসপাতালে তিনি আসার দিন পর্যন্তও ২০ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী ভরতি ছিল। তিনি বলেন, ”একদিন যদি দশজন তো পরেরদিন সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াচ্ছে ২০ তে।হাসপাতাল হলেও তা যেন রীতিমতো মৃত্যুপুরী হয়ে গিয়েছিল। তাই দেশে ফেরার জন্য উদ্বেগ ছিল। বাড়িতে আব্বু, মা – দু’ জনেই খুব চিন্তায় ছিল।” অবশেষে শুক্রবার চিনের উন্নতি হাওয়াই বন্দরে তাঁদের শারীরিক পরীক্ষার পর বিমানে তোলা হয়। দেশে ফিরেও তাঁদের শারীরিক পরীক্ষা করা হয়। দুবরাজপুরের বাড়িতে ফেরার পর জেলা স্বস্থ্য দপ্তরের একটি দল মইনুদ্দিনকে পরীক্ষা করে যায়।
জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক হিমাদ্রি আড়ি জানিয়েছেন, ”মইনুদ্দিনের উপর নজর রাখা হচ্ছে। যেহেতু উনি নিজেও চিকিৎসক হতে চলেছেন, তাই শারিরীক পরিস্থিতির অবনতি হলেই যেন স্বাস্থ্য দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করেন, সে বিষয়ে বলা হয়েছে।”
ছবি: শান্তনু দাস
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.