নন্দন দত্ত, সিউড়ি: ফের বীরভূম। ফের হিসাব বহির্ভূত আয়ের অভিযোগ। এবার পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার পুলিশই। ‘কোটিপতি’ কনস্টেবলকে গ্রেপ্তার করল রাজ্য পুলিশের দুর্নীতি দমন শাখা। ধৃতের নাম মনোজিৎ বাগীস। তাঁর বিরুদ্ধে আয়-বহির্ভূত সম্পত্তির হদিস পান রাজ্য পুলিশের দুর্নীতি দমন শাখার আধিকারিকরা।
পেশায় সামান্য কনস্টেবল। তাঁর একাধিক অ্যাকাউন্টে বহু লক্ষ টাকা। ভরি ভরি স্বর্ণালঙ্কার। বিপুল সম্পত্তিও। হিসাব বহির্ভূত আয়ের অভিযোগে রাজ্য পুলিশের সেই কনস্টেবলকে গ্রেপ্তার করল রাজ্য পুলিশের দুর্নীতি দমন শাখা। আগে হাওড়া গ্রামীণ এলাকায় কর্মরত ছিলেন ওই কনস্টেবল। তার আগে তিনি ছিলেন হাওড়া সিটি পুলিশ এবং রাজ্য এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চে। হাওড়ার বিভিন্ন ব্যাঙ্কে তাঁর কয়েকটি অ্যাকাউন্টের হদিশ মেলে। এরপর শুক্রবার রাতে রামপুরহাটের থানা এলাকা থেকে মনোজিৎকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানা যায়। বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুর এলাকায়। খোদ কনস্টেবলের গ্রেফতারির ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে জেলা জুড়ে।
পুলিশ সূত্রে খবর, ২০১২ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০১৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ওই কনস্টেবলের মোট আয় হওয়ার কথা ১০ লক্ষ ২৩ হাজার টাকা। কিন্তু তাঁর বিপুল সম্পত্তির খবর মেলার পরে গত বছর তদন্তে নেমে গোয়েন্দারা জানতে পারেন, তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ ছিল ৪৩ লক্ষ ৬০ হাজার ৬০৪ টাকা। রয়েছে অনেক সোনার অলঙ্কারও। হাওড়ার বিভিন্ন ব্যাঙ্কে তাঁর কয়েকটি অ্যাকাউন্টের হদিস মেলে। তারপরেই তাঁর বিরুদ্ধে রাজ্য দুর্নীতি দমন শাখায় মামলা রুজু করার নির্দেশ দেন নবান্নের স্বরাষ্ট্রদপ্তরের কর্তারা। বিভিন্ন ব্যাঙ্কে তাঁর ফিক্সড ডিপোজ়িট, গাড়ি-সহ প্রচুর সম্পত্তির খতিয়ান পান দুর্নীতি দমন শাখার তদন্তকারীরা। বিভিন্ন আর্থিক দুর্নীতি থেকে শুরু করে আয়ের বহির্ভূত সম্পত্তি থাকায় বেশ কয়েক বছর আগে থেকেই গোয়েন্দাদের স্ক্যানারে ছিলেন ওই কনস্টেবল।
ভবানী ভবন সূত্রের খবর, তাঁকে বীরভূমের রামপুরহাট থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি একাধিক জেলায় কর্মরত ছিলেন। বর্তমানে তিনি রামপুরহাট থানায় কনস্টেবল হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ওই কনস্টেবল এর কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে একটি বিলাসবহুল গাড়ি-সহ কয়েক কোটি টাকা। বিভিন্ন আর্থিক দুর্নীতি থেকে শুরু করে আয়ের বহির্ভূত সম্পত্তি থাকায় বেশ কয়েক বছর আগে থেকেই গোয়েন্দাদের স্ক্যানারে ছিলেন ওই কনস্টেবল।
জেলা প্রশাসন বা পুলিস সূত্রে তেমন কোনও প্রতিক্রিয়া না পাওয়া গেলেও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শীর্ষস্থানীয় পুলিস আধিকারিকের মতে,দুর্নীতির বীজ বপন হয়েছে প্রায় ২০১০ সাল থেকে। একজন পুলিশ কনস্টেবলের পক্ষে এত বড় আর্থিক দুর্নীতি একা করা কার্যত অসম্ভব। এর আগেও পুলিশের দুর্নীতি দমন শাখার কলকাতার বিচার ভবনের বিশেষ আদালতে তাঁর বিরুদ্ধেই দায় হয়েছিল মামলা। নেপথ্যে আসলে কে রয়েছেন, তা জানতেও মনোজিৎকে আরও জেরা করা প্রয়োজন বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.