নন্দন দত্ত, সিউড়ি: রেলের পাস পাওয়ার জন্য কম ঝক্কি পোহাতে হয়নি। তিনমাস ধরে ঘুরোঘুরি করেছেন। রেলের তরফে কার্যত জানিয়েই দেওয়া হয়েছিল, দালাল না ধরলে পাস পাওয়া যাবে। সেই খবর সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হতেই হইচই পড়ে যায়। অবশেষে রেলের পাস পেলেন সিউড়ির কড়িধ্যা গ্রামের যুবক উত্তম দাস। রেলের আসানসোল বিভাগের জনসংযোগ আধিকারিক স্পষ্টই জানিয়েছেন, রেলের পাস কিছুটা সময় লাগে। কিন্তু, ঘটনাটি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ পাওয়ার পরই ওই যুবককে ডেকে পাঠানো হয়।
[মহানন্দা ক্যানেলে পড়ল ডাম্পার, নিখোঁজ চালক-সহ ৩ জন]
জন্ম থেকে দেখতে পান না উত্তম দাস। দুই ভাই বোনের সংসারে তিনি মেজো। কিন্তু, দৃষ্টিহীন হলেও উচ্চমাধ্যমিক পাস করেছেন উত্তম। এখন চাকরির জন্য বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি। ফলে কলকাতা-সহ বিভিন্ন জায়গায় যাতায়াত করতে হয়। সরকারি বাসে বিনামূল্য ভ্রমণের পাস পেয়েছেন একশো শতাংশ প্রতিবন্ধী ওই যুবক। উত্তম দাসের দাবি, প্রতিবন্ধীদের জন্য টিকিটে ছাড় দেয় রেলও। সেই ছাড়ের আবেদন জানিয়ে সিউড়ি স্টেশনের রেলকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। তাঁকে আসানসোলে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। উত্তমের কাকা গোপালনাথ দাসের দাবি, ‘আমরা আসানসোলে চিঠি পাঠালে তা ফেরত চলে আসে। সিউড়ি স্টেশনে গেলে ফর্মে চিকিৎসকের রেজিস্ট্রেশন নম্বর নেই বলে দাবি করা হয়। ফের সিউড়ি হাসপাতাল থেকে চিকিৎসকের নম্বর নিয়ে গেলে, নতুন ফর্মে তা পূরণ করে আনতে বলা হয়। এভাবে গত তিনমাস ঘুরিয়ে রেলের এক কর্মচারি জানান, দালাল না ধরলে রেলে কোনও কাজই হবে না।‘
একেবারেই ছাপোষা পরিবার। প্রতিবন্ধী ছেলেকে নিয়ে দিনভর ব্যস্ত থাকতে হয় বাড়ির লোকেদের। তাই রেলের পাসের জন্য দালালকে টাকা দিতে হবে জেনে হতাশ হয়ে পড়েছিলেন তাঁরা। বস্তুত, টাকাটা যে কাকে দিতে হবে, তাও জানতেন না উত্তম দাসের পরিবারের লোকেরা। তাঁদের দাবি, উত্তমকে রেলের পাস পাইয়ে দিয়েছেন তাঁর বন্ধুরাই। এদিকে উত্তম দাসের রেলের পাস না পাওয়ার খবরটি প্রকাশিত হয় সংবাদমাধ্যমেও। দিন কয়েক আগে উত্তম দাসের কাকাকে ডেকে পাঠিয়ে পাস দিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ।
ছবি: বাসুদেব ঘোষ
[ বিজেপির দলীয় কার্যালয়ে হামলা, অভিযোগের তির তৃণমূলের দিকে]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.