ব্রতীন দাস, শিলিগুড়ি: পুলিশের সাঁড়াশি অভিযানে প্রবল চাপের মুখে এবার ‘সাবধানী’ গুরুং! গায়ে চড়ালেন বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট। শিরুবাড়ির ঘটনার পর থেকেই বিমল গুরুং বুলেট প্রুফ জ্যাকেট পরতে শুরু করেছেন বলে সূত্র মারফত খবর এসেছে পুলিশ ও গোয়েন্দাদের কাছে।
[ফের একই লাইনে দুটি ট্রেন, পাঁশকুড়া লোকালে ধাক্কা বালিচক লোকালের]
ইউএপিএ মামলায় অভিযুক্ত মোর্চা সুপ্রিমোকে ধরতে এবার ছক বদলে অলআউট অভিযানে নামছে পুলিশ। গোটা পাহাড়ে পুলিশ সাজানো হয়েছে। সাদা পোশাকেও প্রচুর পুলিশ মোতায়েন রয়েছে পাহাড়ের বিভিন্ন এলাকায়। তারা বিমল অনুগামী বলে পরিচিত মোর্চা নেতাদের গতিবিধির উপর নজর রাখছে। পুলিশ যেভাবে চারদিক থেকে ঘিরে অভিযান চালাচ্ছে, তাতে এভাবে আর বেশিদিন দুর্গম পাহাড়, জঙ্গলে থাকা অসম্ভব। একথা বুঝেই গুরুং বুলেট প্রুফ জ্যাকেট পরতে শুরু করেছেন বলে মনে করা হচ্ছে। কিন্তু নিজেকে ‘আয়রন ম্যান’ বলে দাবি করা গুরুং হঠাৎ কেন বুলেট প্রুফ জ্যাকেট পরলেন, তা নিয়েও বিমল ঘনিষ্ঠ মহলে চর্চা চলছে। যদিও গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, আচমকা অভিযানে যদি শিরুবাড়ির জঙ্গলের মতো ফের পুলিশের সঙ্গে গুলির লড়াই হয়, সেই আশঙ্কা থেকেই গুরুং বুলেট প্রুফ জ্যাকেট পরছেন। গোয়েন্দাদের কাছে খবর, শিরুবাড়ির ঘটনার পর চার-পাঁচটি ‘লোকাল মেড’ বুলেট প্রুফ জ্যাকেট পৌঁছেছে গুরুংয়ের কাছে। সাধারণ আয়রন প্লেট বসিয়ে তৈরি করা হয়েছে সেগুলি। পুলিশের বুলেট প্রুফ জ্যাকেটের তুলনায় ভারী। জ্যাকেটের উৎস জানার চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ। সেনাবাহিনীর মতো জলপাই রঙের পোশাক পরেই গুরুং জঙ্গলে রয়েছে বলে খবর।
[গুরুংবাহিনীর সঙ্গে মোকাবিলায় এবার পুলিশের হাতে অত্যাধুনিক বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট]
পরিস্থিতি যা তাতে ক্রমে গুরুংয়ের উপর চাপ বাড়ছে। সেক্ষেত্রে নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে হলে গুরুংকে পাহাড়ে ফিরতে হবে। কিন্তু তা কীভাবে সম্ভব, সেই পথই এখন খুঁজে বেড়াচ্ছেন লুকআউট নোটিস জারি হওয়া পাহাড়ের একসময়ের মুকুটহীন সম্রাট। জিএলপি বাহিনী ছাড়াও জঙ্গলে বিমলকে যারা ঘিরে রেখেছে, তাদের মধ্যে উত্তরপূর্বের জঙ্গি গোষ্ঠীর কোনও সদস্য কিংবা নেপালের মাওবাদীদের কেউ থাকতে পারে বলেও মনে করছে পুলিশের একাংশ। গুরুং বাহিনীকে অস্ত্র সরবরাহের ঘটনায় আগেই নাম জড়িয়েছিল ন্যাশনাল সোশালিস্ট কাউন্সিল অফ নাগাল্যান্ড (খাপলাং) গোষ্ঠীর। এবার এনএসসিএন (আইএম) মুইভা গোষ্ঠীর সঙ্গেও গুরুংয়ের অস্ত্র-যোগের হদিশ পেল পুলিশ। ওই জঙ্গিগোষ্ঠীর সদস্যরাও দার্জিলিংয়ে এসে গুরুংয়ের ডেরায় অস্ত্র প্রশিক্ষণ দিয়ে গিয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। এর আগে মায়ানমারের জঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গেও বিমল বাহিনীর যোগ স্পষ্ট হয়েছে। মায়ানমার থেকেই গুরুংরা অত্যাধুনিক অস্ত্র কেনে বলে জানতে পেরেছেন গোয়েন্দারা। একে-৪৭ রাইফেল, গ্রেনেড, আইইডি ছাড়াও বিমলের পাহারায় থাকা বাহিনীর কাছে প্রচুর খুকরি ও বিষাক্ত তির রয়েছে বলে জানতে পেরেছেন গোয়েন্দারা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.