অভ্রবরণ চট্টোপাধ্যায়, শিলিগুড়ি: নতুন করে ‘গোর্খাল্যান্ড’-এর মতো বিচ্ছিন্নতাবাদীকে সামনে নিয়ে আসা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই বিজেপির টিকিটে দার্জিলিং থেকে নির্বাচিত বিধায়ক নীরজ জিম্বা গোর্খাল্যান্ড অথবা পাহাড়কে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ঘোষণা করার দাবি করেন। আর এবার সুযোগ বুঝে গোর্খাল্যান্ড ইস্যুতে দিল্লির উপর চাপ বাড়াতে শুরু করলেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা সুপ্রিমো বিমল গুরুং। এ ব্যাপারে তিনি সময়সীমাও বেঁধে দিলেন।
বৃহস্পতিবার গুরুং সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে গুরুং ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেন, ‘‘দিল্লি ডেকে নিয়ে শুধু ছবি তুললেই হবে না। পাহাড় সমস্যার স্থায়ী সমাধান করতে হবে। সেটা হল পৃথক রাজ্য গোর্খাল্যান্ড। বিজেপিকে করে দেখাতে হবে।’’ পঞ্চায়েত নির্বাচন শেষ হতে এভাবে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে গুরুংকে সুর চড়াতে দেখে পাহাড়ের রাজনৈতিক মহলে শোরগোল পড়েছে। বিজেপি নেতৃত্ব অবশ্য গুরুংকে আশ্বস্ত করতে ভোলেননি। বিজেপির পাহাড়ের সভাপতি কল্যাণ দেওয়ান বলেন, “আমাদের সাংসদ প্রচুর কাজ করেছেন পাহাড়ে। বিজেপি যা বলে তাই করে। একটু ধৈর্য রাখতে হবে।”
গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা সুপ্রিমো বিমল গুরুং এদিন রীতিমতো একহাত নিয়ে বসেন বিজেপিকে। তিনি খোলাখুলি অভিযোগ করেন, ‘‘এত বছর ধরে পাহাড়ে বিজেপি আছে কিন্তু তাদের প্রতিশ্রুতি পালন করেনি।’’ এরপরই ছিল তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘‘এবার সময় এসেছে। আশা করছি স্বাধীনতা দিবসের দিন গোর্খাদের জন্য বড় কিছু ঘোষণা করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।’’
উল্লেখ্য, পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপির সঙ্গে জোট করে বিমলের মোর্চা। যদিও নির্বাচন শেষ হতে সেই জোট ভেঙেও যায়। গুরুং এদিন অভিযোগ করেন, ‘‘২০০৯, ২০১৪ এবং ২০১৯ সালে পরপর তিনটি লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি জয়লাভ করে। তাদের ইস্তাহারেও ছিল পাহাড় সমস্যার স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধানের আশ্বাস। সাংসদ রাজু বিস্তা বলেছিলেন, ২০ জুলাইয়ের মধ্যে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হবে। কিন্তু কোথায় কী!’’
বিমল বলেন, ‘‘উত্তরবঙ্গে পাহাড়ে প্রথম পদ্মফুল ফুটেছিল। অনেক আশা নিয়ে বাসিন্দারা ভোট দিয়েছিলেন। কিন্তু বিজেপি কিছুই করল না।’’ প্রসঙ্গত, ইতিমধ্যেই দিল্লিতে অনুষ্ঠিত এনডিএ বৈঠকে জিএনএলএফ-কে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল বিজেপি। তারপরেই পাহাড়কে বাংলা থেকে বিচ্ছিন্ন করার ব্যাপারে আওয়াজ তুলেছেন নীরজ জিম্বা। গোর্খাল্যান্ড দাবির বিষয়টিতে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতেই বিমল গুরুং দিল্লির ওপর চাপ তৈরির কৌশল নিয়েছেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.