ব্রতীন দাস, শিলিগুড়ি: বিমল গুরুংদের দুর্নীতির হাঁড়ি হাটে ভেঙে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিলেন বিনয় তামাং। জানিয়ে দিলেন গুরুং এবং রোশন গিরির কত বেনামি সম্পত্তি রয়েছে তা নিয়ে শীঘ্রই মুখ খুলবেন। বহিষ্কৃত মোর্চার নেতার আশঙ্কা মদন তামাংয়ের মতো তিনিও খুন হয়ে যেতে পারেন। নেপাল থেকে ভাড়াটে দুষ্কৃতীদের এনে তাঁকে হত্যার ছক কষা হয়েছে।
[জেলের দেওয়ালের সঙ্গেই কথা বলছে ধর্ষক বাবা!]
রবিবার দার্জিলিংয়ে বহিষ্কৃত মোর্চা নেতা জানিয়েছেন, গুরুংদের যাবতীয় দুর্নীতির নথি তিনি প্রকাশ্যে আনবেন। গুরুংদের নাম না করে বিনয়ের বক্তব্য, ফ্লোরিডা, লন্ডনে মোর্চা শীর্ষ নেতাদের সম্পত্তি রয়েছে। বিনয়ের বক্তব্য, এতদিন তিনি রামভক্ত হনুমানের মতো ছিলেন। কিন্তু তাঁর নামে অপপ্রচার হওয়ার পর আর থামবেন না। বহিষ্কারের পর দলের দুই শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণে নেমেছেন বিনয়। তাঁর অভিযোগ গুরুংদের নেপালে হোটেল আছে। শিলিগুড়িতেও আছে তাঁদের সম্পত্তি। তবে তাঁর আশঙ্কা, মদন তামাংয়ের মতো তিনিও খুন হয়ে যেতে পারেন। ২০১০-এর পুনরাবৃত্তি হতে পারে পাহাড়ে।
বিনয়ের দাবি, ভাড়াটে খুনি দিয়ে সপরিবারে তাঁকে খুনের চক্রান্ত করা হচ্ছে। নেপাল থেকে ভাড়াটে দুষ্কৃতী আনার জন্য বরাত দেওয়া হয়েছে। বহিষ্কৃত মোর্চা নেতার বক্তব্য, গোর্খা জাতির জন্য তিনি সামনে চলে আসায় দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেওয়ার ছক কষা হয়েছে। পাহাড়ে যে ট্র্যাডিশন সুবাস ঘিসিংয়ের সময় থেকে হয়ে আসছে। গুরুংয়ের বিরুদ্ধে দ্বিচারিতার অভিযোগ তুলেছেন বিনয়। তাঁর সাফ কথা, সামনে থেকে আন্দোলন নয়, লুকিয়ে বেড়াচ্ছেন গুরুং। একবারও অনশনে বসেননি। ২০১৩ সালে বিনয় তামাং জেলে গিয়েছেন। অথচ গুরুং জিটিএ চিফ হয়ে সরকারি সুবিধা নিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন।
[গুরুং-অভিযানে রাজ্য পুলিশের সঙ্গে সংঘাতে সিকিম পুলিশ]
৮০ দিন বনধের পর পাহাড়ের মানুষ কী পেল তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অপসারিত মোর্চা নেতা। বিনয় রেয়াত করেননি রোশন গিরিকেও। বিনয়ের চোখে মূল ষড়যন্ত্রী মোর্চার সাধারণ সম্পাদক। রোশনের উদ্দেশে তাঁর কটাক্ষ, তিন তারা হোটেলে বসে রাজনীতি করা যায় না। মাসের পর মাস রোশন গিরি দিল্লিতে থেকে কী করেছেন তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিনয়। আগামী ১২ সেপ্টম্বর রাজ্যের ডাকা বৈঠকে তিনি যে যেতে রাজি তাও বিনয় তামাং বুঝিয়ে দিয়েছেন।
[জানেন, প্রসেনজিতের বতর্মান বান্ধবী টলিউডের কোন স্টার?]
এদিকে, রাজ্য পুলিশের বিরুদ্ধে সিকিম পুলিশের যুক্তি ধোপে টিকল না। পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ রীতিমতো তথ্য দিয়ে দেখিয়েছে গুরুংকে ধরতে যাওয়ার সময় সিকিম পুলিশকে নিয়মমাফিক জানানো হয়েছিল। রাজ্য পুলিশের দাবি, অভিযুক্তদের পালিয়ে যেতে সাহায্য করে সিকিম পুলিশ। এমনকী, নামচিতে অভিযানের সময় ধৃত ১৩ জনকে আনার সময় নানাভাবে এরাজ্যের পুলিশকে হয়রানি করা হয়। গুরুং অনুগামীদের ধরে আনার সময় সিকিম-বাংলা সীমানা লাগোয়া রংপো চেকপোস্টের গেট ফেলে দেয় প্রতিবেশী রাজ্যের পুলিশ। সিআইডি সূত্রের খবর, সেভেন হুইল নামে যে রিসর্টে গুরুং ছিলেন, সেখানে মোর্চা সুপ্রিমোর জন্য সিকিম পুলিশের বেশ কয়েকজন কর্মী সাদা পোশাকে পাহারা দেয়। পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে গুরুংয়ের বৈঠকে নাকি পবন চামলিংয়ের বড় ছেলে বিজয় চামলিং উপস্থিত ছিলেন। যে রিসর্টে বসে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ছক কষেন গুরুং। মোর্চা সভাপতির ওই আস্তানা নাকি সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী পবন চামলিংয়ের এক নিকট আত্মীয়র। পাহাড়ে ফের বিস্ফোরণের ঘটনা শনিবার রাতে। দার্জিলিংয়ের রংলি রংলিয়ত থানা এলাকার পুলিশ আউটপোস্টে বিস্ফোরণ হয়। তাতে আইইডি ব্যবহার হয়েছিল পুলিশ জানিয়েছে। সপলিনটার মিলেছে। একমাস আগে ওই আউটপোস্টটি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.