সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: কলকাতার পর এবার দূর্গাপুর। রাতের অন্ধকারে বাইক ও গাড়িতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে শিল্পনগরীতে। এমনকী, সাইকেল আগুন ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, গত এক বছর ধরে বাড়ির চৌহদ্দিতে রাখা গাড়ি ও বাইকে কেউ বা কারা আগুন লাগিয়ে দিচ্ছে। এখনও পর্যন্ত দুর্গাপুরে ১৬টি গাড়ি ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছে বলে জানা দিয়েছে। পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলেছেন শহরবাসী।
দুর্গাপুর শহরের এডিসন রোডে থাকেন চিকিৎসক অরুণকুমার অধিকারী। তাঁর আবাসনের সিঁড়ির নিচে দুটি বাইক ও একটি সাইকেল রাখা ছিল। বৃহস্পতিবার রাতে সেই বাইক ও সাইকেলে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। ওই চিকিৎসকের দাবি, রাতে বিকট শব্দ শুনে যখন বাড়ির বাইরে বেরোতে যান, তখন দরজাটি রীতিমতো গরম হয়ে গিয়েছে। দরজা খুলতে না পেরে শেষপর্যন্ত পাশের ফ্ল্যাটের বারান্দা দিয়ে নিচে নামেন। দেখেন, সিঁড়ির নিচে রাখা বাইক ও সাইকেল দাউদাউ করে জ্বলছে! আগুন এতটাই তীব্র ছিল যে, দমকলকে খবর দিতে হয়। দমকলের একটি ইঞ্জিনের চেষ্টায় আধঘণ্টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। ততক্ষণে অবশ্য দুটি বাইক ও একটি সাইকেল পুড়ে ছাই গিয়েছে। এদিকে এই ঘটনার কয়েক ঘণ্টার পর এডিসন রোডেই অন্য একটি আবাসনে হানা দেয় দুষ্কৃতীরা। ওই আবাসনের বাসিন্দাদের দাবি, আবাসনের নিচে একটি গাড়ি ও বাইক রাখা ছিল। গাড়িটিকে অক্ষত থাকলেও, বাইকে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। শুক্রবার ভোরে পোড়া গন্ধ পেয়ে বাইরে বেরিয়ে আসেন আবাসনের বাসিন্দারা। তবে এবার আর দমকলকে ডাকতে হয়নি, স্থানীয় বাসিন্দারাই আগুন নিভিয়ে ফেলেন। তবে যথারীতি বাইকটি ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছে।
কিন্তু রাতের অন্ধকারে দুর্গাপুরে বিভিন্ন আবাসনে ঢুকে বাইক ও সাইকেল কারা আগুন লাগিয়ে দিচ্ছে? তা নিয়ে দানা বেঁধেছে রহস্য। আতঙ্কে শহরবাসী। তাঁদের বক্তব্য, দীর্ঘদিন ধরেই রাতের অন্ধকারে তাণ্ডব চলছে দুর্গাপুরে। কিন্তু পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না। আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেটের ডিসি-১ (পূর্ব) অভিষেক গুপ্তা জানিয়েছেন, ‘মানসিক ব্যাধিগ্রস্ত কেউ এমন ঘটনা ঘটাচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে এই ঘটনার নেপথ্যে ব্যক্তিগত শক্রতা আছে কিনা, তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।’
স্রেফ দুর্গাপুরেই নয়, কয়েক মাস আগে রাতের অন্ধকারে বাইক ও গাড়িতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছিল খাস কলকাতাতেও। উত্তর কলকাতায় একটি বড় সমস্যায়। ফলে রাতে অনেক সময়ই বাইক, এমনকী দামি গাড়িও রাস্তায় রেখে দিতে হয়। অভিযোগ, রাতে একটু বাড়লেই রাস্তায় দাঁড়িয়ে বাইক ও গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দিচ্ছিল দুষ্কৃতীরা। কিন্তু কেন? সেই রহস্যের আর কিনারা করতে পারেনি পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.