অর্ণব আইচ: ভুয়ো বার্থ সার্টিফিকেট বা নকল জন্মের শংসাপত্রের আঁতুড়ঘর বিহার। আর বিহারে তৈরি এই ভুয়ো জন্ম শংসাপত্র বা বার্থ সার্টিফিকেট ব্যবহার করেই এই রাজ্যে চলছে কুকীর্তি। এর পিছনে রয়েছে ভুয়ো পাসপোর্ট চক্র। এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দাদের হাতে। তারই উপর ভিত্তি করে তদন্তের পর এবার বিহারের দু’টি জেলা গোয়েন্দা পুলিশের নজরে। ওই দু’টি জেলায় তল্লাশি চালাতে পারেন কলকাতার গোয়েন্দারা।
এদিকে, সম্প্রতি পাসপোর্ট যাচাই করতে গিয়েই কলকাতা পুলিশের সিকিউরিটি কন্ট্রোল অর্গানিইজেশন বা এসসিও-র নজরে আসে যে, ভুয়ো শংসাপত্র দিয়ে পাসপের্টের আবেদন জানানো হয়েছে। হাওড়া, দক্ষিণ ২৪ পরগনা-সহ কলকাতার আশপাশে অন্তত পাঁচটি জায়গা থেকে ভুয়ো জন্ম শংসাপত্র জমা দিয়ে পাসপোর্টের আবেদন জানানো হয়েছে, এমনই দাবি কলকাতার গোয়েন্দাদের। ওই পাঁচজনের জন্ম শংসাপত্রগুলি দেখে গোয়েন্দা পুলিশের সন্দেহ হয়। ওই শংসাপত্রগুলি বিহার থেকেই তৈরি করানো হয়েছিল, এমন সম্ভাবনা পুলিশ উড়িয়ে দিচ্ছে না। এই ব্যাপারে নিশ্চিত হতেই কলকাতা পুলিশের টিম বিহারে গিয়ে তল্লাশি চালানোর পরিকল্পনা করেছে।
পুলিশের সূত্র জানিয়েছে, কিছুদিন আগেই জাল পাসপোর্ট চক্রের সন্ধানে নেমে গোয়েন্দারা লক্ষ্মণ ভারতী নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেন। ওই ব্যক্তিটি কলকাতার জন্ম শংসাপত্র জমা দিয়েছিল। প্রমাণ করার চেষ্টা করেছিল যে, সে আসলে কলকাতার বাসিন্দা। কিন্তু নথি যাচাইয়ের সময় পুলিশের সন্দেহ হয়। পুলিশ আধিকারিকরা তদন্ত করে জানতে পারেন যে, লক্ষ্মণের আসল বাড়ি বিহারে। লক্ষ্মণ আসলে বিহার থেকে কলকাতার ভুয়ো জন্ম শংসাপত্র জোগার করেছিল। তার এক আত্মীয় সেই শংসাপত্র জোগার করে দিয়েছিল বলে জানায়। গোয়েন্দারা জানতে পারেন যে, বিহারে জাল জন্ম শংসাপত্র থেকে শুরু করে অন্যান্য বেশ কিছু ভুয়ো শংসাপত্রের চক্র খুবই সক্রিয়। তারাই দু’টি জেলা থেকে জাল শংসাপত্র তৈরি করে। সেই ক্ষেত্রে কলকাতা ও এই রাজ্যে যে ভুয়ো চক্রটি রয়েছে, সেই চক্রটি যোগাযোগ রাখে বিহারের চক্রের সঙ্গে। তারাই হোয়াটস অ্যাপে কোনও ব্যক্তির নাম ও অন্য বিবরণ পাঠিয়ে দেয়। সেইমতো তৈরি হয় ভুয়ো শংসাপত্র। তা ক্যুরিয়রে পাঠিয়ে দেওয়া হয় চক্রের মাথাদের কাছে।
এর আগেও এক আফগান যুবক ভুয়ো শংসাপত্র দেখিয়ে নিজেকে কলকাতার বাসিন্দা বলে প্রমাণ করে। এর পর ওই ভুয়ো শংসাপত্র দেখিয়ে আফগান যুবক কলকাতা থেকেই পাসপোর্ট তৈরির চেষ্টা করে। ওই আফগান যুবক হাতে লেখা নথি দেখিয়ে কলকাতা পুরসভার নামে জাল শংসাপত্র সংগ্রহ করেছিল। ওই ভুয়া শংসাপত্রও বিহারে তৈরি কি না, তা জানার চেষ্টা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.