সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিহারে ভোটের ফলাফল এখনও স্পষ্ট নয়। তবে একটা জিনিস কমবেশি স্পষ্ট, সেটা হল প্রত্যাশার তুলনায় ভালো ফল করছে বিজেপি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জনপ্রিয়তা বিহারে বিন্দুমাত্র কমেনি। আর শুধু বিহার কেন? গোটা দেশে যে কটি রাজ্যে উপনির্বাচন হয়েছে, সবেতেই জয়জয়কার বিজেপির। আর তাতেই বাংলা দখলের আশা দেখছে বিজেপি (BJP)।
সকালের দিকে আরজেডি যখন এগিয়ে ছিল, সেসময় বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh) রাজ্যের নির্বাচনে বিহার ভোটের প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা খারিজ করে দিয়েছিলেন। তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছিল, ‘বিহারের রাজনীতি বিহারে, বাংলার রাজনীতি বাংলায়।’ কিন্তু বেলা বাড়তেই সুর বদলে ফেলে বিজেপি। ফলাফলের ট্রেন্ড বদলাতেই বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় (Kailash Vijayvargiya) বলে দিলেন, “বাংলার পরিস্থিতি খুবই খারাপ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শাসনে হিংসা এবং অরাজকতা চরমে উঠেছে। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে মমতা সরকারের টিকে থাকার কোনও সম্ভাবনা নেই।” আসলে বিহার-সহ কয়েকটি রাজ্যের উপনির্বাচনের সাফল্যে বলিয়ান হয়েই এই দাবি করছেন কৈলাস।
কিন্তু সত্যিই কি বিহারের ভোটের ফলের প্রভাব পড়বে বঙ্গে? রাজনৈতিক মহল বলছে, বিহারের এই ফলাফলের ফলে রাতারাতি বঙ্গ রাজনীতির কোনও সমীকরণ বদলে যাবে না। তবে, সামান্য হলেও এর প্রভাব পড়বে। প্রথমত এই ফলাফল বাংলার বিজেপি কর্মীদের আত্মবিশ্বাস অনেকটা বাড়িয়ে দেবে। ইতিমধ্যেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বিজয়োৎসব শুরু করেছে গেরুয়া শিবির। অন্যদিকে, তৃণমূল (TMC) কর্মীদের মধ্যে সংশয়ের বাতাবরণ তৈরি হতে পারে।দ্বিতীয়ত, সীমান্তবর্তী জেলাগুলিতে সামান্য হলেও বিহারে বিজেপির সাফল্যের প্রভাব পড়বে। তাছাড়া লোকসভার নিরিখে এমনিতেই বিহার সীমান্তের এলাকাগুলিতে পিছিয়ে ছিল তৃণমূল। তৃতীয়ত, বিহারে যদি ফের বিজেপি-জেডিইউ সরকার হয়, তাহলে আগামী বছর ভোটের প্রচারে সুবিধা পাবে গেরুয়া শিবির। কারণ, সেক্ষেত্রে বাংলার ভোটের প্রচারে বিহারের মাটিকে ব্যবহার করতে পারবে তারা। তবে, এইসব সুবিধা বিজেপি এতদিনও পেয়ে এসেছে। তাই এটা নতুন করে খুব একটা চিন্তা হয়তো বাড়াবে না এরাজ্যের শাসকদলের।
তবে, উলটোটাও কিন্তু হতে পারে। অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস বাংলার বিজেপি কর্মীদের আত্মতুষ্টির কারণ হতে পারে। তাছাড়া, এই নির্বাচন থেকে শিক্ষা নিতে পারে তৃণমূলও। আসলে নিজে জিততে না পারলেও তেজস্বী যাদব কিন্তু বিজেপিকে কঠিন লড়াই দেওয়ার ফর্মুলা দেখিয়ে দিয়েছেন। জাতপাত, জাতীয়তাবাদ বাদ দিয়ে বেকারত্ব, অর্থনীতি নিয়ে লড়লে যে বিজেপিকেও আটকানো যায়, সেটা বিহারের নির্বাচন দেখিয়ে দিয়েছে। আরও একটা জিনিস এই নির্বাচন দেখিয়ে দিল, সেটা হল বিরোধী শিবির বিভক্ত হলে প্রবল প্রতিষ্ঠান বিরোধিতা সত্বেও শাসকদলের জয়ের সম্ভাবনা থাকে। সেটা কিন্তু এরাজ্যের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। এখন দেখার তৃণমূল এটা দেখে শিক্ষা নেয় কিনা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.