ছবি: প্রতীকী।
ধীমান রায়, কাটোয়া: ওঝার কাছে ঝাড়ফুঁক করে যথেষ্ট সময় অপচয় করা হয়েছিল। শেষে নিয়ে আসা হয় হাসপাতালে। সাপে কামড়ানো মুমুর্ষ রোগীকে তড়িঘড়ি চিকিৎসা করে তার প্রাণরক্ষা করল পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার গ্রামীণ হাসপাতাল। হাতে সময় ছিল কম। তাই ওই রোগীকে বর্ধমান জেলা হাসপাতালে পাঠানোর ঝুঁকি নিতে চাননি চিকিৎসকরা। বর্তমানে বিজয় হাঁসদা (১৬) নামে ওই রোগীর অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। তাকে ভাতার হাসপাতালে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
মঙ্গলকোট থানার শীতলগ্রামের বাসিন্দা বিজয় হাঁসদা। পরিবার সূত্রে জানা যায়, বুধবার সকালে বাড়ির উঠানে খেতে বসেছিল ওই কিশোর। সেসময় একটি গোখরো সাপ একটি ব্যাঙকে তাড়া করে ধরার চেষ্টা করছিল। ব্যাঙটি লাফিয়ে সরে যেতেই গোখরো সাপটি ছোবল মারে ওই কিশোরের পায়ে। এতটাই দ্রত ঘটনাটি ঘটে যায় যে সরে যাওয়ার সময় পায়নি বিজয়। তার বাবা মা জনমজুরি করেন। সাপে কামড়ানোর পরেই ওই কিশোরকে গ্রামের এক ওঝার কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। জানা গিয়েছে বেশ কিছুক্ষণ ঝাড়ফুঁক করা হয়। ওই কিশোরের বাবা গ্রামের এক কৃষক দেবু ঘোষের কাছে কাজ করেন।
দেবু বাবু জানান, প্রায় ঘন্টাখানেক ঝাড়ফুঁক করে ওঝা দাবি করে বিষ নেমে গিয়েছে। বাড়ি নিয়ে চলে যেতে বলে। এরপর বাড়িতে আনার কিছুক্ষণের মধ্যেই ওই কিশোরের অবস্থার অবনতি হয়। দেবু ঘোষ তার পরিচিত ভাতার বাজারের বাসিন্দা সমাজকর্মী ধীমান ভট্টাচার্যের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি বলেন। ধীমানবাবু তৎক্ষণাৎ রোগীকে ভাতার গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে আসার জন্য বলেন। প্রায় সাড়ে এগারোটা নাগাদ বিজয়কে ভাতার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তখন ওই কিশোর নেতিয়ে পড়েছে। তড়িঘড়ি চিকিৎসা শুরু হয়।
ভাতার হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক সুমন্ত দত্ত বলেন,”আমাদের হাসপাতালে পর্যাপ্ত অ্যান্টিভেনাম মজুত আছে। রোগীর উপসর্গ দেখেই বোঝা যায় তাকে কোবরা জাতীয় সাপে কামড়েছে। দ্রুত চিকিৎসা শুরু হয়।” জানা গিয়েছে, এদিন বিকেল পর্যন্ত রোগীর অবস্থা স্থিতিশীল। দীর্ঘদিন সাপ নিয়ে গবেষণা করছেন ভাতারের বাসিন্দা ধীমান ভট্টাচার্য। তিনি বলেন,” এখনও সমাজের একাংশের মানুষ ঝাড়ফুঁক বিশ্বাস করেন। এটা দুর্ভাগ্যজনক। আমরা তা নিয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন করে আসছি।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.