হাওড়ার সভায় বক্তব্য রাখছেন মুকুল কানিতকর
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হাওড়ার একটি আলোচনা সভায় যোগ দিয়ে উচ্চশিক্ষায় ভারতীয় ভাষার অন্তর্ভুক্তির স্বপক্ষে জোর সওয়াল করলেন সংঘ নেতা মুকুল কানিতকর। শনিবার হাওড়া এসি মার্কেটের কাছে একটি স্কুলে আয়োজিত সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিষয়টির উত্থাপন করেন ভারতীয় শিক্ষণ মণ্ডল(বিএসএম)-এর অখিল ভারতীয় সম্পাদক (সংগঠন) মুকুল কানিতকর। সেই সঙ্গে ডা. কে. কস্তুরীরঙ্গন কমিটি জাতীয় শিক্ষা নীতি (National Education Policy)-তে ভারতকেন্দ্রিক যে প্রস্তাব দিয়েছে, বিএসএম সেটাকেও দ্ব্যর্থহীন ভাষায় স্বাগত জানাতে প্রস্তুত বলেও জানান।
ব্রিটিশরা ১৫০ বছর রাজত্ব করা সত্ত্বেও ভারতের সবাই ইংরেজি ভাষায় সমান স্বচ্ছন্দ নয়। দেশের বৃহত্তর জনসাধারণ এখনও প্রাদেশিক মাতৃভাষায় কথা বলতে ও সংযোগ গড়ে তুলতে বিশ্বাসী। তাহলে কেন উচ্চশিক্ষায় ইংরেজির পাশাপাশি অন্যান্য ভারতীয় ভাষায় পড়াশোনা করার সুযোগ থাকবে না? এই প্রশ্ন তুলে মুকুল কানিতকর বলেন, ‘আমি বলছি না উচ্চশিক্ষায় ইংরেজির দরকার নেই। ইংরেজির আন্তর্জাতিক গুরুত্ব ক্ষুণ্ণ করার কথাও বলছি না। কিন্তু, ইংরেজির বদলে অন্য প্রাদেশিক ভাষায় উচ্চশিক্ষা স্তরে কেউ পড়াশোনা করতে চাইলে, সে সুযোগ থাকা উচিত।’
জয়েন্ট এন্ট্রান্স স্তরে প্রবেশিকা পরীক্ষা প্রাদেশিক ভাষায় দেওয়ার সুযোগ আছে। সেকথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘ইংরেজিতে পড়ার বাধ্যবাধকতা যদি তুলে দেওয়া যায়। উচ্চশিক্ষায় ভারতীয় ভাষাগুলির গুরুত্ব যদি প্রতিষ্ঠা করা যায়। তাহলে বুনিয়াদি স্তরে অভিভাবকরা সন্তানদের মাতৃভাষায় পড়াতে বেশি উদ্যোগী হবেন।’
‘জাতীয় শিক্ষা নীতি’-তে প্রাথমিক স্তর থেকে উচ্চশিক্ষার একটা নির্দিষ্ট স্তর পর্যন্ত প্রত্যেক ছাত্রছাত্রী যাতে ভারতকেন্দ্রিক ১০০ নম্বরের একটি ‘পেপার’ পড়ে তার সুপারিশ করা হয়েছে। যেখানে শুরুতে আঞ্চলিক ইতিহাস, স্থানীয় সংস্কৃতি ও ভৌগোলিক পরিসরের উপর জোর দেওয়া হবে। তারপর ধাপে ধাপে উচ্চশিক্ষার দিকে ছাত্রছাত্রীরা যত এগিয়ে যাবে, ততই সর্বভারতীয় প্রেক্ষাপট গুরুত্ব পাবে। মুকুল কানিতকর এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘ভারতবোধ জাগ্রত করার এর চেয়ে আদর্শ পন্থা আর নেই।’
রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের শিক্ষক সংগঠন বিএসএম বহুদিন থেকেই শিক্ষায় আমলাতন্ত্রের প্রভাব ও প্রসার লঘু করার পক্ষে। এদিন মুকুল কানিতকর তাই বলতে ভুললেন না যে ইংল্যান্ড থেকে ভারতীয়রা আমলাতন্ত্রের পাঠ নিয়েছে। অথচ ইদানীং ইংল্যান্ডের শিক্ষানীতিতেই আমলাতন্ত্রের প্রভাব সংকুচিত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। অদূর ভবিষ্যতে এই দেশেও সেই মডেল চালু হয়ে যাওয়া উচিত। শিক্ষানীতি নির্ধারণ ও পরিচালনায় শিক্ষাবিদদের পরামর্শ অনেক বেশি কার্যকর, কারণ তাঁরা বিশেষজ্ঞ। ফলে সহজেই সিস্টেমের ভালমন্দ বিশ্লেষণ করতে পারেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.