রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: খুচরো টাকার সংকট পান রফতানির ক্ষেত্রে তীব্র সমস্যায় পড়েছেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পান ব্যবসায়ীরা৷ পান উৎপাদনে জেলার লক্ষাধিক মানুষ নির্ভরশীল৷ কিন্তু দেশজুড়ে ৫০০-১০০০ টাকা বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে আচমকাই খুচরো টাকার আকাল দেখা দেওয়ায় পান রফতানি প্রায় বন্ধের মুখে৷ পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় প্রায় ৬০০০ হেক্টর জমিতে পান চাষ হয়৷ দৈনিক এই জেলা থেকে প্রায় ৫৫ লক্ষ টাকার পান রাজ্যের পাশাপাশি মুম্বই, চেন্নাই, আমেদাবাদ, হায়দরাবাদ, অসম, মেঘালয়, মণিপুর শহরে রফতানি হয়৷
সেই সঙ্গে জেলার পান বেনারসেও রফতানি হয়ে থাকে৷ কিন্তু খুচরো সংকটে তমলুক ও রামনগরে পান বাজারে নেমে এসেছে বিপর্যয়৷ জেলায় প্রায় ২৫টি পানের আড়ত রয়েছে৷ রামনগর বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি নিতাই সার জানান, রামনগর তথা পূর্ব মেদিনীপুর জেলা থেকে মোটা অঙ্কের টাকার পান রাজ্যের বাইরে রফতানি হয়ে তাকে৷ খুচরো সমস্যা দেখা দেওয়ায় পান বাজারে বিক্রি করার ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি হয়েছে৷ পান বাজারে বিক্রি না হওয়ায় রফতানির ক্ষেত্রেও সংকটজনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে৷ ফলে জেলা জুড়েই পান ব্যবসা মুখ থুবড়ে পড়েছে৷
রামনগর এলাকা থেকে প্রত্যেক সপ্তাহে প্রায় পাঁচ-সাত কোটি টাকার পান বেনারস-সহ বিদেশে রফতানি হয়৷ আন্তর্জাতিক বাজারে রামনগর এলাকার পানের চাহিদাও রয়েছে প্রচুর৷ ইতিমধ্যে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নন্দীগ্রামের সরকারি অনুষ্ঠান থেকে রামনগরের পান বিক্রয় কেন্দ্রের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করে গিয়েছেন৷ তাই ব্যবসায়ীদের এখন ভরসা রাজ্য সরকারের তৈরি করা পানমাণ্ডি৷ এদিকে পানের বাজার পড়ে যাওয়ায় পানমাণ্ডিতে মজুত পানের সংখ্যাও ক্রমাগত বেড়ে চলেছে৷ ফলে পানমাণ্ডিতে পান রাখার জায়গার সংকট দেখা দিয়েছে৷ সে কারণেই মাথায় হাত পড়েছে পান ব্যবসায়ীদের৷
উল্লেখ্য, রামনগর এলাকায় প্রায় আট হাজার হেক্টর জমিতে রয়েছে পানের বরোজ৷ ফলে কয়েক লক্ষ মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে পান ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছেন৷ রামনগরের পাশাপাশি পটাশপুর, ভগবানপুর, মুকুন্দপুর, তমলুক, হলদিয়া, নন্দীগ্রাম, এগরা, ময়না, পাঁশকুড়া এলাকায়ও প্রচুর পান উৎপাদন হয়৷ ফলে জেলা জুড়ে প্রত্যেকদিন কয়েক লক্ষ কুইণ্টাল পান উৎপাদিত হয়ে থাকে৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.