সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: লকডাউনে আটকে পড়া বাংলার একুশ জেলার প্রায় দেড় হাজার শ্রমিককে ঘরে ফেরাল রাজ্য সরকার। মঙ্গলবার রাত আড়াইটে নাগাদ বেঙ্গালুরু থেকে ওই বিপুল সংখ্যক পরিযায়ী শ্রমিককে নিয়ে পুরুলিয়া স্টেশনে পৌঁছয় শ্রমিক স্পেশ্যাল। এই ট্রেনটি নিউ জলপাইগুড়িতে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পরবর্তীকালে রেল রুট বদলে পুরুলিয়ায় নিয়ে আসে।
মধ্য রাতেই পুরুলিয়া স্টেশনে নামা ওই পরিযায়ী শ্রমিকদেরকে কার্যত ‘বরণ’ করে নেন পুরুলিয়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সঙ্গে ছিলেন বান্দোয়ানের বিধায়ক রাজীবলোচন সোরেনও। পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন ও পুরুলিয়া জেলা পরিষদ থেকে তাঁদের হাতে খাবারও তুলে দেওয়া হয়। এদিন ওই ট্রেনে রাজ্যের একুশ জেলার শ্রমিকরা ছাড়াও বিহার এবং ঝাড়খণ্ডেরও একজন করে দু’জন শ্রমিক ছিলেন। শ্রমিকরা পুরুলিয়া স্টেশনে পা রাখতেই তাঁদের স্বাস্থ্যপরীক্ষা করে প্রায় ৫২টি বাসে সংশ্লিষ্ট জেলায় পৌঁছে দেওয়া হয়। তবে বিহার ও ঝাড়খণ্ডের দুই শ্রমিককে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। এই কাজ শেষ করতে এদিন সকাল হয়ে যায়।
সভাধিপতি বলেন, “বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদেরকে ঘরে ফেরাতে পুরুলিয়াকে ‘ট্রানজিট সেন্টার’ করা হয়েছে। তাই এখান থেকেই রাজ্যের অন্যান্য জেলার শ্রমিককে বাড়ি পাঠানোর ব্যবস্থা করা হল। তবে এক্ষেত্রে স্বাস্থ্য পরীক্ষার রিপোর্টের উপর নির্ভর করেই প্রয়োজন মতো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।”
রাজ্যের একুশটি জেলার ১৪৩৪ শ্রমিকের মধ্যে উত্তর দিনাজপুরের ১৩৪, মালদার ২৩৩, জলপাইগুড়ির ১১, দার্জিলিংয়ের ৬, আলিপুরদুয়ারের ১৪, কোচবিহারের ৭, দক্ষিণ দিনাজপুরের ১৩, নদিয়ার ২৪৯, বাঁকুড়ার ৫০, বীরভূমের ৩৭, মুর্শিদাবাদের ১১৪, হাওড়ার ১০, হুগলির ১২, পূর্ব বর্ধমানের ২, পশ্চিম বর্ধমানের ৮, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার ৮, উত্তর চব্বিশ পরগনার ৯, পশ্চিম মেদিনীপুরের ২৪, পূর্ব মেদিনীপুরের ৯, ঝাড়গ্রামের ১ ও পুরুলিয়ার ৪৮৩ জন ছিলেন। তাঁদের মধ্যে অনেকেই পরিবার নিয়েও বেঙ্গালুরুতে কাজ করছিলেন। কেউ নির্মাণ শ্রমিক, কেউ রাজমিস্ত্রি, কেউ আবার কাঠের কাজ করে পেট চালাতেন। দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার সুন্দরবনের সুজয় গায়েন ও পুরুলিয়ার কোটশিলার নমিতা কুমার বলেন, “রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর জন্যই ঘরে ফিরতে পারলাম। লকডাউনের এক একটা দিন যে কীভাবে কাটছিল বলে বোঝাতে পারব না।” স্বস্তিতে বাংলায় ফিরতে পারা শ্রমিক এবং তাঁদের পরিজনেরা।
দেখুন ভিডিও:
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.