স্টাফ রিপোর্টার : টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘বাংলা’ পড়ানোর জন্য আমন্ত্রণ পেলেন পুরুলিয়ার সিধো-কানহো-বিরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক নবগোপাল রায়। এ বছরের পয়লা অক্টোবর টোকিও ইউনিভার্সিটি অফ ফরেন স্টাডিজে বাংলার ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে যোগ দেবেন তিনি। এর আগে পবিত্র সরকার ও শুভা দাশগুপ্তর মতো ব্যক্তিত্বরা টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ে অতিথি বক্তা হিসাবে আমন্ত্রিত হয়েছিলেন। কিন্তু নবগোপালবাবু টানা দু’বছরের জন্য সেখানে বাংলা পড়ানোর ডাক পেয়েছেন। বীরভূমের বোলপুরের প্রত্যন্ত গ্রাম বল্লভপুরের বাসিন্দা নবগোপালবাবু। বাবা প্রাইমারি স্কুলে শিক্ষকতা করতেন। প্রসঙ্গত, বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে স্কুল থেকে স্নাতকোত্তর পর্যন্ত পড়াশোনা করেন তিনি। এশিয়াটিক সোসাইটির ফেলো থাকার পর ২০১২ সালে সিধু-কানহো-বিরসা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলার অধ্যাপক হিসাবে যোগ দেন। ঘরের ছেলের এমন খবরে খুশি বোলপুর।
কিন্তু, কীভাবে এল এই আমন্ত্রণ? নবগোপালবাবু জানান, সাতদিন আগে ইমেলে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করে টোকিও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে এ বিষয়ে আবেদন করেন। বিষয়টি বিবেচনাধীন রয়েছে। যদিও খুব শীঘ্রই অনুমতিপত্র হাতে পাবেন বলে আশা করছেন তিনি। অবশ্য এই প্রথম নয়, এর আগেও নবগোপালবাবু শিকাগো ও অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে অতিথি অধ্যাপক হিসাবে বাংলা পড়ানোর ডাক পেয়েছিলেন। তিনি বলেন, “বিদেশে গিয়ে দেখেছি, সেখানকার পড়ুয়াদের মধ্যে রবীন্দ্রনাথ এবং বাংলা ভাষা নিয়ে খুব আগ্রহ।” একই সুর শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকারেরও। “১৯৭৯ সালে টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা ভাষা তথা ভারতীয় সংস্কৃতি নিয়ে বক্তব্য রাখতে যাই। ‘সেখানকার ছাত্রছাত্রীদের বাংলা ভাষা তথা রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে উন্মাদনায় এখনও শিহরণ হয়। ২০১৫ সালেও ছবিটা এতটুকুও বদলাতে দেখিনি। বরং বাংলা ভাষার পড়ুয়ার সংখ্যা আরও বেড়েছে।”- জানালেন পবিত্রবাবু।
জাপান, চিন, কোরিয়া, সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ায় দীর্ঘদিন বাংলা ভাষা নিয়ে গবেষণা ও চর্চা হচ্ছে। তবে এ বিষয়ে নিঃসন্দেহে এগিয়ে জাপান আর চিন। জাপানে প্রায় ৭০ বছর আগে কাজুয়ো আজুমা রবীন্দ্রপ্রেম থেকে বাংলা ভাষার চর্চা শুরু করেছিলেন। টোকিও ইউনিভার্সিটি অব ফরেন স্টাডিজে বাংলা ভাষা শেখানো শুরু হয়েছে দীর্ঘদিন। বর্তমানে এই বিভাগে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় শতাধিক। সেখানেই স্নাতকোত্তর ও এমফিল বিভাগে শিক্ষকতার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয় নবগোপালবাবুকে। তিনি বলেন, “বাঙালি হিসাবে গর্ববোধ করছি। টানা দু’বছরে বাংলা ভাষা তথা বাংলার কৃষ্টিকে তুলে ধরার সু়যোগ পাব।” প্রসঙ্গত, তাঁর শিক্ষকতার মেয়াদ ২০২১-এর ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। “রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও জাপানের দীর্ঘদিনের সম্পর্ক ছিল। বাংলা ভাষাকে কেন্দ্র করেই দুই দেশের সাংস্কৃতিক আদান-প্রদান আরও দৃঢ় হবে।”–আশা নবগোপালবাবুর।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.