Advertisement
Advertisement

বাউলমেলা, ছৌ, ডোকরা নিয়ে সাংস্কৃতিক পর্যটন বাংলায়

প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে রাজ্যে হস্তশিল্প পর্যটন ও সাংস্কৃতিক পর্যটনের দিগন্তকে উন্মুক্ত করতে৷

Bengal's Handicrafts and Their Origin To Be Added in Tourism Map
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:July 12, 2016 9:50 am
  • Updated:July 12, 2016 9:50 am  

সুদীপ রায়চৌধুরি: নয়াগ্রামের পটচিত্র৷ কুশমণ্ডির কাঠের মুখোশ৷ পাঁচমুড়ার টেরাকোটা৷ চড়িদার ছৌ-মুখোশ৷
কিংবা কেন্দুলিতে হিমমাখা অজয় নদের চরে রাতজাগানিয়া বাউলমেলা৷ রাজ্যে পর্যটক টানার লক্ষ্যে নজরে এবার বাংলার দুনিয়াবিখ্যাত হস্তশিল্প ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য৷ নিসর্গ ও ঐতিহাসিক স্থাপত্যের এই কপিবুক-যুগলবন্দিতে এতদিন গড়গড়িয়ে এগিয়েছে বাংলার পর্যটন৷ সেই মানচিত্রকে আরও বৈচিত্র্যময় করতে এবার বাংলার বিখ্যাত হস্তশিল্প ও ঐতিহ্যময় সংস্কৃতির পরম্পরাকে ব্যবহার করতে কোমর বেঁধেছে রাজ্য পর্যটন দফতর৷ এজন্য বেশ কিছু স্বেচ্ছাসেবি সংস্থারও সাহায্য নেওয়া হচ্ছে৷

porjoton1_web
রাজ্যের পর্যটন সচিব অজিত বর্ধন জানাচ্ছেন, ডুয়ার্সের জঙ্গল বা তাজপুর-উদয়পুরের সমুদ্র সৈকতকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলার কাজ চলছেই৷ তার সঙ্গে এবার প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে রাজ্যে হস্তশিল্প পর্যটন ও সাংস্কৃতিক পর্যটনের দিগন্তকে উন্মুক্ত করতে৷ “প্রতিবছর কেন্দুলির জয়দেব মেলায় বাউল গানের টানে বহু বিদেশি পর্যটক ভিড় জমান৷ দীর্ঘদিন ধরেই৷ কিন্তু ওই মেলা প্রাঙ্গণে আজও পর্যটক বান্ধব পরিবেশ বা সুযোগ-সুবিধা সেভাবে তৈরি হয়নি৷ সেই পরিকাঠামো গড়ে তুলে যদি ঠিক ভাবে প্রচার করা যায়, তবে আগামিদিনে দেশের পর্যটন মানচিত্রে রাজস্থানের মরু উৎসব, গুজরাতের কচ্ছ উপকূলের রান উৎসব, কেরলের ওনাম বা বাইচ উৎসবের পাশাপাশি বাংলার বাউল মেলাতেও দেশি-বিদেশি পর্যটকদের ঢল নামবে৷”

Advertisement

porjoton2_web
দফতর সূত্রে খবর, কেন্দুলির মেলা প্রাঙ্গণ ঘিরে আন্তর্জাতিক মানের পর্যটন পরিকাঠামো গড়ে তোলা নিয়ে ভাবনা চিন্তা অনেকটাই এগিয়েছে৷ গোটা প্রকল্পের নীল নকশা তৈরির আগে নিজের চোখে এলাকা সরেজমিনে দেখতে খুব শীঘ্রই কেন্দুলি যাচ্ছেন পর্যটনসচিব, অধিকর্তা-সহ শীর্ষ আধিকারিকদের একটি দল৷

porjoton3_web
দুনিয়ার বিভিন্ন দেশে সেখানকার শিল্প-সংস্কৃতি-লোকাচারকে তুলে ধরে পর্যটন শিল্পকে আকর্ষণীয় করে তোলার চেষ্টা চলে৷ এর মধ্যে বেশ কিছু প্রকল্প তো রীতিমতো হিট৷ গ্রীষ্মকালে স্কটল্যান্ডের এডিনবার্গ উৎসব পৃথিবীর পর্যটন মানচিত্রে উজ্জ্বল নাম৷ মরক্কোয় অ্যাটলাস পাহাড়ের পাদদেশে সুপ্রাচীন ‘ক্যারাভান রুট’ ধরে সাংস্কৃতিক পর্যটনের টানে ঢল নামে ভ্রমণার্থীদের৷ ১৪ দিনের এই যাত্রাপথে রাজধানী মারাকেশ থেকে পর্যটকদের নিয়ে যাওয়া হয় জিপসি গ্রাম ও স্থানীয় জনজাতিদের তাঁবু শহরগুলিতে৷ প্রাচীন ভূমধ্যসাগরীয় লোকসংস্কৃতির সঙ্গে পরিচয় করানো হয়৷ উজবেকিস্তানে সমরখন্দ ও অন্য ঐতিহাসিক শহর ভ্রমণের পাশাপাশি সে দেশের দুনিয়া বিখ্যাত ‘ব্লু সেরামিক’ তৈরির প্রক্রিয়াও দেখানো হয় পর্যটকদের৷ একইভাবে পেরু বা মেক্সিকোয় পর্যটকদের জন্য রয়েছে ইনকা সংস্কৃতির স্বাদ নেওয়ার সুযোগ৷

porjoton4_web
সেই একই পথে রাজ্যের পর্যটন মানচিত্রে নিয়ে আসা হচ্ছে বাংলার ঐতিহ্যময় সাংস্কৃতিক পরম্পরাকে৷ যেমন বিষ্ণুপুরের টেরাকোটা মন্দিরের টানে ছুটে আসা পর্যটকদের নিয়ে যাওয়া হবে ওই জেলারই বিকনা বা পাশের বর্ধমানের দরিয়াপুরের মতো ডোকরা শিল্পীদের গ্রামে, ছৌ নাচের মুখোশ তৈরির জন্য বিখ্যাত পুরুলিয়ার চড়িদা গ্রামে৷ এক্ষেত্রে শান্তিনিকেতন-জয়দেব মেলা-বিষ্ণুপুর-শুশুনিয়া ও অযোধ্যা পাহাড়-গড়পঞ্চকোটকে নিয়ে একটা টুরিস্ট সার্কিট করাও যেতে পারে৷ একইভাবে পর্যটন মানচিত্রে তুলে আনা যেতে পারে দক্ষিণ দিনাজপুরের কাঠের মুখোশ তৈরির গ্রাম কুশমণ্ডি, মাটির পুতুল তৈরির গ্রাম নদিয়ার ঘূর্ণি, বিষ্ণুপুরের বালুচরী, বর্ধমানের ধাত্রীগ্রাম-সমুদ্রগড়ের টাঙ্গাইল, কোচবিহারের শীতলপাটি৷

porjoton5_web
এই প্রকল্পকে দিনের আলো দেখানোর জন্য স্বেচ্ছাসেবি সংস্থা ‘বাংলানাটক ডট কম’-এর সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন পর্যটন সচিব৷ বাংলার দেশজ সংস্কৃতি ও শিল্পীদের নিয়ে দীর্ঘদিন ধারে কাজ করছে এই সংস্থা৷ এজন্য রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের বেশ কিছু দফতর চুক্তিবদ্ধও হয়েছে তাদের সঙ্গে৷ ইতিমধ্যেই পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলার নয়াগ্রামে পটশিল্পের প্রসারে উল্লেখযোগ্য সাফল্য দেখিয়েছে ‘বাংলানাটক ডট কম’৷ পর্যটক বান্ধব প্রকল্প ও পরিকাঠামোর সুযোগ নিয়ে নয়াগ্রামের জোড়াপট পাড়ি জমাচ্ছে দেশবিদেশে৷ সেই উদাহরণই রাজ্যে সাংস্কৃতিক পর্যটনের ভবিষ্যত্‍ নিয়ে আশার আলো জাগিয়েছে বলে পর্যটন দফতর সূত্রে খবর৷

২০২৪ এর পূজা সংক্রান্ত সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের দেবীপক্ষ -এর পাতায়।

চোখ রাখুন
Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement