শ্রীষিতা ঘোষ: নলেনের পর কাসুন্দি। ‘টিউব’ রেলে সওয়ার হয়ে বাজারে আসতে চলেছে বাঙালির আরও এক চিরন্তন ঐতিহ্য। লাইনে অপেক্ষা করছে মনভোলানো বাংলার মধুও।
বাঙালির সারা বছরের রসনাতৃপ্তির জোগান দিতে আগেই বাজার কাঁপিয়েছিল টিউবের নলেনগুড়। সেই সাফল্যের খতিয়ান ধরে এবার মা-ঠাকুমার হাতে তৈরি চিরাচরিত কাসুন্দিও টিউববন্দি করার পরিকল্পনা নিল পশ্চিমবঙ্গ খাদি ও গ্রামীণ শিল্প পর্ষদ। একইসঙ্গে খাঁটি ও প্রাকৃতিক গুণসম্পন্ন মধুও টিউবজাত করে নতুনরূপে বাজারে নিয়ে আসতে চলেছে পর্ষদ। পর্ষদের তরফে জানানো হয়েছে, নলেন গুড়ের মতো কাসুন্দি ও মধুর টিউবগুলিও অবিকল টুথপেস্টের মতো আকারের হবে। এতে যতটা প্রয়োজন, ঠিক ততটাই বের করে ব্যবহার করা যাবে। ফলে অপচয়ের কোনও প্রশ্ন নেই। অন্যদিকে গুণগত মানও হবে উন্নত। সব মিলিয়ে বেশ সস্তাতেই একশো শতাংশ খাঁটি কাসুন্দি ও মধু চলে আসবে মধ্যবিত্তের নাগালে। দু’বছর আগে নলেন গুড় টিউবে নিয়ে এসে সাড়া ফেলে দিয়েছিল খাদি। এবার কাসুন্দি আর মধুর প্যাকেজিংয়ের দায়িত্ব রয়েছে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ প্যাকেজিং (আইআইপি)-র উপর।
[শিলিগুড়িতে খুলছে পাসপোর্ট পরিষেবা কেন্দ্র, খুশির হাওয়া উত্তরবঙ্গে]
খাদি ও গ্রামীণ শিল্প পর্ষদের চেয়ারম্যান গৌরীশংকর দত্ত বলেন, “গুণগত মান বজায় রাখতে নলেন গুড়ের মতোই অত্যাধুনিক প্রক্রিয়ায় এরও প্যাকেজিং করা হবে। আইআইপি মূল দায়িত্বে। পাশাপাশি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, বায়োকেমিস্টদের সঙ্গেও আলোচনা চলছে।” পর্ষদের এক আধিকারিকের কথায়, নদিয়া কিষাণগঞ্জ এলাকায় খাদির পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই একটি টিউব গুড় উৎপাদন কেন্দ্র তৈরি হয়েছে। আমেদাবাদ থেকে অত্যাধুনিক মেশিন নিয়ে এসে এখানে এক মিনিটে ৩০টি নলেন গুড়ভর্তি টিউব প্রস্তুত করা হয়। গত ডিসেম্বর থেকে মেশিনটি কাজ করছে। মেশিন-সহ উৎপাদনকেন্দ্রটি গড়ে তুলতে খরচ হয়েছে প্রায় আড়াই কোটি টাকা। তাঁর কথায়, বছরে মাত্র চার মাস নলেন গুড় পাওয়া যায়। ওই সময়ে গোটা বছরের জন্য গুড় টিউবে ভরা হয়। বাকি সময়টা ওই মেশিনের কাজ বিশেষ থাকে না বললেই চলে। তাই বছরের বাকি সময়ে ওই মেশিনেই কাসুন্দি আর মধু টিউবজাত করে বিক্রির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
আইআইপি সূত্রে খবর, ইতিমধ্যে খাদির সঙ্গে তারা এ বিষয়ে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। চুক্তিপত্রে সইও হয়ে গিয়েছে। কিছুদিনের মধ্যে কাসুন্দি ও মধু টিউবজাত করার কাজ শুরু হয়ে যাবে। বিশ্ববাংলা ও খাদির বিভিন্ন আউটলেট, স্টলে ১০০ গ্রামের নলেন গুড়ের টিউব পাওয়া যায়। সেখানে এবার মিলবে কাসুন্দি, মধুও। রাজ্য তথা দেশের গন্ডি ছাড়িয়ে টিউববন্দি গুড়ের চাহিদা বিদেশের বাজারেও তুঙ্গে। খাদি কর্তৃপক্ষ মনে করছে, নলেনগুড়ের মতোই বাংলার কাসুন্দি আর মধু প্রবাসী বাঙালিদের কাছে বিশেষ জনপ্রিয়তা পাবে। উপকৃত হবেন মধু সংগ্রাহক ও কাসুন্দি প্রস্তুতকারকরাও। সরকারের কাছে এই প্রকল্পে মধু ও কাসুন্দি বিক্রি করে সঠিক দাম পেতে পারবেন তাঁরা।
[সাইবার ক্রাইম আসছে পাঠ্যসূচিতে, নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.