দিব্যেন্দু মজুমদার, হুগলি: ভয়াবহ দুর্ঘটনা কেড়েছে সন্তানের প্রাণ। তাঁরা জানেন, কোনওভাবেই আর সন্তান ফিরে আসবে না। তবু কঠিন বাস্তবকে মেনে নিতে পারছেন না। পরিবর্তে একটা একটা করে দিন কাটলেও, খুদেকে হারানোর যন্ত্রণা যেন কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে বাবা-মাকে। সন্তানশোকে নাওয়া খাওয়া ভুলেছেন পোলবা দুর্ঘটনায় নিহত ঋষভের অভিভাবকরা। এই পরিস্থিতিতে ফোন করে সন্তানহারা বাবা-মাকে সান্ত্বনা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)।
১৪ ফেব্রুয়ারি স্কুল যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল ছোট্ট ঋষভ। আর হেঁটে সুস্থ অবস্থায় বাড়ি থেকে ফেরা সম্ভব হয়নি তার। আটদিন পর বাড়ি ফিরেছে ঋষভ। তবে ততক্ষণে জীবনযুদ্ধে হার মেনেছে সে। শববাহী গাড়িতে চড়ে বাড়ি ফেরে পরিবারের খুদে সদস্য। কোলের সন্তানের দেহ দেখেই জ্ঞান হারিয়েছিলেন ঋষভের বাবা-মা। তারপর থেকেই মানসিকভাবে বিপর্যস্ত দু’জনেই। কিছুতেই ভুলতে পারছেন না সন্তান হারানোর যন্ত্রণা। পরিজনদের সকলের অবস্থাও প্রায় একইরকম। খাওয়াদাওয়াও ভুলেছেন প্রায় সকলেই।
ঋষভের শেষযাত্রায় হাজির ছিলেন শ্রীরামপুরের বহু মানুষ। ঋষভের বাবা সন্তোষ সিং কাউন্সিলর হওয়ায় রাজনৈতিক নেতৃত্বেরও ভিড় ছিল যথেষ্ট। তবে ব্যস্ততার মাঝে সেদিন ঋষভের পরিজনদের সঙ্গে দেখা করা সম্ভব হয়নি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তাই সোমবার ফোন করে ছোট্ট ঋষভের বাবার সঙ্গে কথা বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সন্তোষ কুমার সিংকে ফোন করে বেশ কিছুক্ষণ খোঁজখবর নেন তিনি। বলেন, “বাবা আমি তো দেখা করতে পারিনি। তুই বাবা কিছু মনে করিস না।” সন্তোষ কুমার সিং বলেন, “দিদি আমার এবং আমার পরিবারের খোঁজ নেন। আমার বড় ছেলেরও খোঁজ নেন। ছেলেমেয়েদের স্কুলে নিয়ে যাওয়ার সময় শ্রীরামপুরে মাঝরাস্তায় যে গাড়ি পরিবর্তন করত তা নিয়ে অভিযোগ দায়ের করার পরামর্শ দেন মুখ্যমন্ত্রী। উনি মায়ের মতো আমাদের সবার খোঁজখবর নেন। চেষ্টার কোনও ত্রুটি রাখেননি। তিনি সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলে কীভাবে মামলা করা যায় তা নিয়ে চিন্তাভাবনা করছি। তবে মুখ্যমন্ত্রীর ফোন পেয়ে অনেকটাই সাহস পেয়েছি।” মুখ্যমন্ত্রী পরে আবারও ফোন করে খোঁজখবর নেবেন বলে জানিয়েছেন সন্তোষ সিং।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.