অর্ণব আইচ ও কলহার মুখোপাধ্যায়: বিএসএফ (BSF) কমান্ডার সতীশ কুমার এবং বাংলাদেশে গরুপাচার চক্রের (Cattle smuggling Circle) কিংপিন মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা এনামুল হকের সম্পত্তির পরিমাণ যে কত তা নিয়ে রীতিমতো ধন্ধে তদন্তকারীরা। এখনও পর্যন্ত মুর্শিদাবাদে নিজের এলাকায় প্রাসাদোপম বাড়ি ছাড়াও দুবাই, বাংলাদেশ, নেপাল, দিল্লি ও কলকাতার বেনিয়াপুকুরে এনামুলের বিলাসবহুল ফ্ল্যাটের সন্ধান মিলেছে। শোনা যাচ্ছে, এসবই নাকি ভাসমান হিমশৈলের চূড়ামাত্র!
এদিকে সতীশ কুমারও কম যান না। বছর ছয়েক আগে কয়েক কোটি টাকা দিয়ে সল্টলেকে বাড়ি কিনেছিলেন বিএসএফ কর্তা। সেই বাড়ির একতলায় চলত গেস্ট হাউস। তাতে না আছে কোনও রেজিস্টার, না রাখা হয় কোনও রেকর্ড। অথচ প্রতিবেশীদের অভিযোগ, বাইরে থেকে, এমনকী বাংলাদেশ থেকেও বহু লোক এসে থাকত সেই গেস্ট হাউসে।
এই গেস্ট হাউসকে কেন্দ্র করে একাধিকবার প্রশাসনিক জটিলতা তৈরি হয়েছিল। যদিও প্রভাব খাটিয়ে তিনি তা চেপে দেন বলে অভিযোগ। বাংলাদেশ থেকে এখানে কারা এসে থাকত, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন গোয়েন্দারাও।
এদিকে, বিএসএফ কর্তা সতীশ কুমারের সঙ্গে আন্তর্জাতিক গরু পাচার চক্রের মাথা এনামুল হকের যোগাযোগ আরও অনেক স্পষ্ট হচ্ছে। গোয়েন্দাদের কাছে খবর, সতীশ কুমারের মুর্শিদাবাদে একটি বাড়ি আছে, যেটি এনামুল বানিয়ে দিয়েছে। তাঁর ছেলেকে চাকরিও দিয়েছিলেন এনামুল। সঙ্গে দামি গাড়ি উপহার। ফলে নির্বিঘ্নেই চলছিল গরুপাচার। কিন্তু সতীশকে উত্তরবঙ্গে বদলি করার পর থেকেই ধীরে ধীরে রাশ টানা শুরু হয় গরুপাচারের উপর।
বিএসএফের গোয়েন্দাদের দাবি, শোধ তুলতেই পাচারের সময় গরুর গলায় বিস্ফোরক বেঁধে বিএসএফ জওয়ানদের খুনের চেষ্টা করে এনামুল হকের লোকজন। গত বছরের জুলাইয়ের শেষের দিকে মুর্শিদাবাদের হারুডাঙা এলাকায় জলপথে পাচারের সময় গরুর গলায় বিস্ফোরক তথা সকেট বোমা বেঁধে দেয় তারা। যদিও বিস্ফোরণ ঘটানোর আগেই তা বিএসএফ জওয়ানদের চোখে পড়ে যায়। তাঁরা ওই বিস্ফোরক উদ্ধার করে নিষ্ক্রিয় করেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.