Advertisement
Advertisement

বাঙালির রসনাতৃপ্তির ইতিহাসকে মুঠোবন্দি করতে মেনু কার্ডের সংগ্রহশালা

হাজার তিনেক মেনুকার্ড সংগ্রহ করেছেন আসানসোলের ভাস্কর চক্রবর্তী।

Bengali food history in menu card

ছবিতে সংগ্রহের মেনু কার্ড দেখাচ্ছেন ভাস্কর চক্রবর্তী, ছবি : মৈনাক চক্রবর্তী।

Published by: Shammi Ara Huda
  • Posted:August 21, 2018 12:43 pm
  • Updated:August 21, 2018 1:22 pm  

চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল:  বাঙালির আভিজাত্যের দেখা মেলে অনুষ্ঠান বাড়ির মেনুতে। মেনুকার্ডের বৈচিত্র্যও কম নয়। রুচিশীল বাঙালির সাহিত্য, কবিতা, উপহার এমনকী, সমসাময়িক বিষয়ও উঠে আসে মেনু কার্ডের ডিজাইনে। আধার কার্ড থেকে ফেসবুক পেজ,  দু’হাজার টাকার নোট থেকে সংবাদপত্রের প্রথম পাতার আঙ্গিকে তৈরি হচ্ছে মেনু কার্ড। বাঙালির বিবর্তনের খাদ্য তালিকা ও পরিবর্তিত মেনু কার্ডের রকমারি সংগ্রহশালার খোঁজ মিলল আসানসোলে।

[নারী পাচার রুখতে ডুয়ার্সে ‘গার্লস ক্লাব’, সমস্যা মেটাতে নয়া উদ্যোগ]

আসানসোলের কল্যাণপুরের বাসিন্দা ভাস্কর চক্রবর্তী মেনু কার্ড সংগ্রহ করে রাখেন। তিনি চাকরি করেন সালানপুরে মাইথন অ্যালয়েজের পার্সোনেল ম্যানেজমেন্ট দপ্তরে। মেনু কার্ড সংগ্রহ করে রাখা তাঁর অন্যতম শখ। এই মূহূর্তে তিন হাজার রকমের মেনু কার্ড রয়েছে ভাস্করবাবুর সংগ্রহে। মেনুকার্ড সংগ্রাহক ভাস্কর চক্রবর্তী জানালেন, ‘ম্যারাপ বেঁধে খাসির মাংস, লুচি, ছোলার ডাল রান্না বা কোমরে গামছা বেঁধে পরিবেশন আজ ইতিহাস। এমনকী বাঙালির অনুষ্ঠান বাড়িতে ক্যাটারারকেও ছাপিয়ে নামীদামি শেফদের তৈরি কন্টিনেন্টাল বা প্রাদেশিক খাবার এখন স্থান পায় খাদ্যতালিকায় । তাই অভিনবত্বের ছোঁয়া লেগেছে মেনু কার্ডেও।’  তবে আমজনতা যখন জানত না মেনু কার্ড খায় না মাথায় দেয়, সেই সময়কার অভিজাত বাঙালি পরিবারের বিয়ে বাড়িতেও মেনু কার্ডের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দ,  বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনে যখন উত্তাল বাংলা তখন শোভাবাজার রাজবাড়িতে মেনু কার্ড তৈরি হয়েছিল। ১১২ বছর আগের সেই মেনু কার্ডে ৩৬ রকম খাবারের তালিকা ছিল। সেই পরম্পরা আজও অব্যাহত। ডিজিটাল ইন্ডিয়ার যুগে মেনু ও মেনু কার্ডেও এসেছে অভিনবত্ব। একসময় ডাকটিকিট সংগ্রহের নেশা ছিল। এরপর বছর পাঁচেক হল এই মেনু কার্ড সংগ্রহ শুরু  করতে শুরু করেছেন ভাস্করবাবু। অনুষ্ঠান বাড়িতে যান বা না যান,  মেনুকার্ডটি ঠিকই সংগ্রহ করে রাখেন। স্ত্রী শাশ্বতী,  ছেলে অভিনব তো বটেই, আসানসোলের ভাস্কর চক্রবর্তীকে  মেনুকার্ড এনে দেন পরিচিতিরাও।  এভাবেই সংগ্রহের সংখ্যা বাড়ছে দিনদিন। নোটবন্দির সময় পাঁচশো ও হাজার টাকার নোট বাতিল হল,  তখন বাতিল নোটের আদলে মেনুকার্ড তৈরি করেছিলেন অনেকেই। আবার আধার কার্ড নিয়ে যখন হইচই চলছে, তখন মেনুকার্ডেও দেখা গিয়েছে আধার কার্ডের আদল। বাদ যায়নি সিডি-ডিভিডিও, এমনকী মোবাইলের কভারও। সবই সযত্নে সংগ্রহ করে রেখেছেন ভাস্করবাবু।

Advertisement

[কুপ্রস্তাবে ফিরিয়ে দেওয়ায় গৃহবধূর বাড়িতে ঢুকে তাণ্ডব প্রতিবেশী যুবকের]

শুধু মেনকার্ডই নয়, বদলেছে বাঙালির খাদ্যাভ্যাসও।  ভাস্কর চক্রবর্তী বলেন  ‘আরও একটা ব্যাপার লক্ষ্যণীয় বছর পাঁচেক আগে যে খাদ্যতালিকা দেখেছি,  তারও বদল হয়ে গিয়েছে। মানুষের খাদ্যাভ্যাসও পাল্টাচ্ছে। এইসব মেনু কার্ডে আমি ওই পরিবর্তনটা দেখতে পাই। শ্রাদ্ধ, বাসিশ্রাদ্ধ এমনকী, চড়ুইভাতির মেনু কার্ডও আমার সংগ্রহে রয়েছে। অনেকে এই আজব নেশা বা শখে হাসাহাসি করেন। আবার অনেকে উৎসাহও দেন।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement