জিনাতকে বনদপ্তরের গাড়িতে তোলা হচ্ছে। রবিবার। নিজস্ব চিত্র
অমিতলাল সিংদেও, মানবাজার: বাংলার শুটারের ঘুমপাড়ানি গুলিতেই বন্দি হল জিনাত ওরফে গঙ্গা। একটানা ৯ দিনের পরিশ্রমের পর এই সাফল্যে চওড়া হাসি সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের ওই বিশেষ দলের সদস্যদের। ওড়িশার সিমলিপাল ব্যাঘ্র প্রকল্প থেকে পালিয়ে ঝাড়খণ্ড। তারপর বাংলার জঙ্গল মহলে প্রবেশ করে গঙ্গা। বাঘিনীর গলায় রেডিওকলার ধরে ট্র্যাক করে এই বনমহল ওড়িশার দল পৌঁছালেও তাকে বাগে আনা যায়নি। দিনের পর দিন বাঘিনীর অবস্থান বদল ঘটেছে। ফলে ডাক পড়ে সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের একটি দলের।
গত ২০ ডিসেম্বর পাঁচ প্রতিনিধির ওই দল সাড়ে তিনশো কিমি সড়ক পথে দুটি রাইফেল ও একটি পিস্তল নিয়ে ঝাড়গ্রাম পৌঁছান। ওই দলে ছিলেন সজনেখালি বিট আধিকারিক মৃত্যুঞ্জয় বিশ্বাস, বনরক্ষী রাজীব নস্কর, অরণ্য সাথী কালীপদ গায়েন, শম্ভু দাস ছাড়াও চিকিৎসক শঙ্কর বিশ্বাস। ওই দল ঝাড়গ্রামের কাঁকরাঝোরে বাঘিনীর একদিন গতিবিধি দেখার পড়ে গত ২২ ডিসেম্বর বাঘিনীর অবস্থান জেনে প্রবেশ করে পুরুলিয়ার বান্দোয়ানে। বাঘিনীকে ধরতে খাঁচা পাতা থেকে শুরু করে জাল দিয়ে জঙ্গল গ্রাম ঘেরা সব কাজই নিজে হাতে করে চলেছিল ওই দলের প্রতিনিধিরা। আর এরপরেই ২৭ তারিখ জঙ্গল বদল করে মানবাজার ২ বলের ঝাঁটিপাহাড়ির জঙ্গলে ঢুকে পড়ে গঙ্গা।
ওইদিনই প্রথম খাঁচা পাতা, নেট দিয়ে জঙ্গল ঘেড়ার পাশাপশি বাঘিনীকে গুলি করতে পৃথক পৃথক গাছে উঠে বসেন মৃত্যুঞ্জয় বিশ্বাস ও রাজিব নস্কর। কিন্তু অতি চতুর ওই বাঘিনী জাল সরিয়ে পালিয়ে। পরের দিন পৌঁছায় বাঁকুড়ার রানিবাঁধের গোঁসাইডি। ফের সেখানেও একই পদ্ধতিতে ছোট্ট ওই জঙ্গলটি নেট দিয়ে ঘিরে শুরু হয় অপারেশন। বিকেলে দুটি গাছে তিনটি বন্দুক বসে পজিসন নিয়ে বসেন ওই দুজন। ওইদিনই রাতে ওই দুই বনকর্মী দুবার ঘুম পাড়ানি গুলি করেন। লক্ষ্য ঠিক থাকলেও ওই দু’টি ডার্ট দাঁত দিয়ে তুলে ফেলে দেয় বাঘিনী। তবে রবিবার বিকেলে মৃত্যুঞ্জয়বাবুর গুলি খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। এর পর তারেই নেতৃত্বে ওই বাঘিনীকে ডুলিতে করে উদ্ধার করা হয়। মৃত্যুঞ্জয়বাবু বলেন, “এই বাঘিনীটি ভীষণ চালাক এবং লাজুকও বটে। বাঘিনীটিকে উদ্ধার করতে পেরে খুশি আমরা।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.