শুভদীপ রায় নন্দী, শিলিগুড়ি: অদ্ভুত স্কুল। তাও আবার সরকারি। উন্নত পরিকাঠামো, ভাল স্কুল ভবন। সবই রয়েছে। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা মাত্র এক। শিক্ষিকার সংখ্যাও এক। ঘটনাটি শিলিগুড়ির দেশবন্ধুপাড়ার ১ নম্বর শিশু বিদ্যালয়ের। অভিযোগ, কয়েকবছর ধরে এভাবেই চলে আসছে এই স্কুলটি। মাঝে একটিও পড়ুয়া ছিল না। কিন্তু এই বছর শিক্ষিকার তৎপরতায় ধরে বেধে একজন ছাত্রীকে ভরতি করা হয়েছে। বিদ্যালয়ের পরিস্থিতির বিষয়ে জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদে একাধিকবার জানালেও কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি।
[আমেরিকার পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হতে পারেন এক হিন্দু মহিলা!]
জানা গিয়েছে, স্কুলের শিক্ষিকা এনাক্ষি বোস আর দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী রিম্পা রায়কে নিয়েই চলছে স্কুলটি। নিয়ম মেনে পালা করে দু’জনেই সকালবেলা স্কুলে আসে আর বিকেল চারটেয় বেড়িয়ে যায়। একজন মাত্র পড়ুয়া থাকায় মিড-ডে মিল রান্নার প্রশ্নই ওঠে না। শিক্ষিকার আনা টিফিনই দু’জনে ভাগ করে খান। জানা গিয়েছে, ওয়ার্ড কমিটি, শিক্ষক সংগঠনের তরফে স্কুলটির বেহাল দশা কাটিয়ে ওঠার জন্য বাংলা মাধ্যম থেকে ইংরেজি মাধ্যমে বদল করার আবেদন জানানো হয়েছে প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের কাছে। কিন্তু আট মাস অতিক্রান্ত হলেও কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।
শিক্ষিকা এনাক্ষি বোস বলেন, “২০১৭ সালে কাজে যোগ দিয়ে জানতে পারি স্কুলটি পড়ুয়াশূন্য। এতদিন ধরে কোনও পড়ুয়া নেই। তারপর অনেক চেষ্টার ফলে কোনওক্রমে কয়েক মাস আগে একজন পড়ুয়াকে জোগাড় করি।” কিন্তু এভাবে আর কতদিন? নিজেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে চলেছেন শিক্ষিকা এনাক্ষিদেবী। অনেকটাই হতাশ তিনিও। ২৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রশান্ত চক্রবর্তী বলেন, “বহু বছর আগে এই স্কুলে দারিদ্র সীমার নিচে বসবাসকারি পরিবার থেকে পড়ুয়ারা পড়তে আসত। কিন্তু এখন অবস্থানগত দিক দিয়ে এলাকার উন্নয়ন ঘটেছে। স্বাভাবিকভাবেই এই স্কুলে পড়ুয়াদের ভিড় কমছে।” পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনের সভাপতি বিভাস সরকার বলেন, “আমরাও সংগঠনভাবে শিক্ষা দপ্তরে স্কুলটির বিষয়ে জানিয়েছি। স্কুলটিতে যাতে পড়ুয়ার সংখ্যা বৃদ্ধি পায় ও ইংরেজি মাধ্যমে বদল করা যায় সেই দাবিও রাখছি।” এই বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান তপনকুমার বসুর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন তোলেননি।
[সিরিয়া ছাড়তে শুরু করল মার্কিন সেনা, হারানো জমি ফিরে পেতে পারে আইএস]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.