সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কেউ লরির মাথায় চেপে নিজের বাড়িতে ফিরেছিলেন। কেউ বা দীর্ঘপথ পেরিয়েছিলেন পায়ে হেঁটে। অনেকে স্রেফ সাইকেল চালিয়ে কয়েকশো কিলোমিটার পেরিয়ে এসেছেন। পরিবারের সঙ্গে দেখা তো হয়েছিল। কিন্তু সেই অভাব-অনটনের মধ্যে আবার করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন তাঁরা। ভেবেছিলেন এখানেই বোধহয় জীবন শেষ। কিন্তু সেই মারণরোগই যে জীবনকে এক নতুন দিশা দেখাবে, তা বোধহয় স্বপ্নেও ভাবেননি বাংলায় ফেরা পরিযায়ী শ্রমিকরা (Migrant Workers)। অথচ তাঁদের নিয়ে কোভিড ওয়ারিয়র্স ক্লাব (Covid Warrior’s Club) গড়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Bannerjee)। তাঁর এই প্রচেষ্টাকে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে অনুসরণ করা হচ্ছে।
কী এই কোভিড ওয়ারিয়ার্স ক্লাব? যাঁরা করোনাকে (Corona Virus) হারিয়ে ফিরে এসেছেন, তাঁদের নিয়ে তৈরি হচ্ছে এই ক্লাব। কোভিডজয়ীরা বিভিন্ন হাসপাতালে করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসায় নানাভাবে সাহায্য করছে। বদলে মিলছে বেতন, থাকা ও খাওয়া। প্রায় সব জেলায় গড়ে উঠেছে এই ক্লাব। করোনাজয়ীরা নিজে থেকে এই ক্লাবে নাম লেখাচ্ছেন। বর্তমানে বিভিন্ন জেলার করোনাজয়ী পরিযায়ী শ্রমিকরা কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ, রাজারহাটের কোভিড কেয়ার সেন্টার-সহ একাধিক হাসপাতালে কাজ করছেন। সেখানে কী কাজ করেন তাঁরা?
মুর্শিদাবাদের পরিযায়ী শ্রমিক দুলাল সেইখ জানান, “আক্রান্তদের প্রয়োজন মতো ওঁদের সঙ্গে থাকি। বাড়ির লোকজনকে ওঁদের স্বাস্থ্য নিয়ে খবর দিই। ফোনে কথা বলিয়ে দিই।” সরকারি আধিকারিকরা বলছেন, কাজে যোগ দেওয়ার আগে তাঁদের এক সপ্তাহের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। সেখানে অক্সিজেন সিলিন্ডার বদল করা, রোগীর রক্তচাপ মাপার মতো কাজগুলো কীভাবে করতে হয়, তা শেখানো হয়। তবে কোভিড ওয়ার্ডে রোগীদের মানসিকভাবে চাঙ্গা রাখাই তাঁদের মূল কাজ। সূত্রের খবর, এক একজন কোভিড যোদ্ধা মাসে প্রায় ১৫ হাজার টাকা আয় করছে।
এ প্রসঙ্গে রাজ্যে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দপ্তরের কমিশনার মহুয়া বন্দোপাধ্যায় বলেন, “এখন প্রায় সমস্ত জেলাতেই কোভিড-ক্লাব গঠন করা হয়েছে। তাঁরা সচেতনতা প্রচার করে মানুষের মনে সাহস জোগাচ্ছেন।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.