স্টাফ রিপোর্টার: দেশের মধ্যে সব থেকে বেশি জলাধার রয়েছে পশ্চিমবঙ্গে (West Bengal)। সংখ্যার নিরিখে ৭ লক্ষ ৪৭ হাজার ৪৮০টি। তাতেই দেখা যাচ্ছে বিজেপির (BJP) ‘মডেল’ রাজ্য উত্তরপ্রদেশ বাংলার থেকে সংখ্যার হিসাবে পিছিয়ে ৫ লক্ষ। জলাধার (Reservoir) সংরক্ষণ নিয়ে কেন্দ্রের এই রিপোর্টকে সামনে এনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) ‘জল ধরো জল ভরো’ প্রকল্পের জন্য তাঁকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বিজেপিকে তুলোধোনা করল তৃণমূল কংগ্রেস (TMC)।
শুক্রবারই রিপোর্ট সামনে আসে। তার একদিন আগেই রাজ্যের বিরোধী দলনেতা অভিযোগ তুলে বলেছিলেন এ রাজ্যে পুরসভাগুলি গত কয়েক বছরে ৩০ শতাংশ বৃক্ষ নিধন করেছে। তার সঙ্গে কয়েক হাজার জলাধার বুজিয়ে ফেলা হয়েছে। কেন্দ্রের রিপোর্ট সামনে রেখেই তার জবাব দিতে গিয়ে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে তোপ দেগেছে তৃণমূল। দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের কথায়, “বিরোধী দলনেতা একটি আকাট গাধা। তাঁর জানা উচিত ছিল, কেন্দ্রের জলসম্পদের সেনসাস রিপোর্ট বেরিয়েছে। তাতে পশ্চিমবঙ্গ সারা দেশে এক নম্বর। মুখ্যমন্ত্রী দূরদর্শী বলেই ২০১১ সালে জল ধরো জল ভরো প্রকল্প ঘোষণা করেন। সেই প্রকল্প যে কতটা সফল সেটা প্রমাণ হয়ে গিয়েছে।”
কেন্দ্রের রিপোর্ট অনুযায়ী পশ্চিমবঙ্গে যেখানে ৭ লক্ষ ৪৭ হাজার ৪৮০টি জলাশয়, সেখানে ৫ লক্ষ সংখ্যা পিছিয়ে রয়েছে উত্তরপ্রদেশ। সে রাজে্য জলাধার রয়েছে ২ লক্ষ ৪৫ হাজার ৮৭টি। তার পর অন্ধ্রপ্রদেশ, ওড়িশা, অসম, ঝাড়খণ্ড, তামিলনাড়ু। আর তালিকায় সবার নিচে রয়েছে সিকিম, চণ্ডীগড়, দিল্লি, অরুণাচলপ্রদেশ। এই তথ্য তুলে ধরেই কুণালের বক্তব্য, “প্রবল গরমে যে সংকট অতীতে হত সেটা ততটা হচ্ছে না। এর কারণ মুখ্যমন্ত্রীর জল ধরো জল ভরো প্রকল্প। প্রবল গ্রীষ্মে জল ধরে রাখার জন্য এটা হয়েছে।” শুভেন্দুকে এর পরই কুণালের কটাক্ষ, “বিরোধী দলনেতা না, উনি দল ন্যাতা। যে তথ্য না জেনেই কথা বলছেন। ওনার কথা ধরেই প্রশ্ন ওঠে তাহলে দিল্লিতে গরম কেন? গুজরাতে, রাজস্থান বা মধ্যপ্রদেশে গরম কেন?”
পাশাপাশি দেশজুড়ে জলাধার দখল করার তালিকাও সামনে এসেছে সেই রিপোর্টে।
দেখা যাচ্ছে তাতে আবার বিজেপি শাসিত রাজ্য উত্তরপ্রদেশ প্রথম। সে রাজ্যে ১৫ হাজার ৩০১টি জলাধার দখলের রিপোর্ট রয়েছে। তার পরই রয়েছে তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশের মতো রাজ্যের নাম। সেই তালিকা তুলে ধরেই শুভেন্দুকে কুণালের তোপ, “শুভেন্দু অধিকারীর নূ্যনতম তালজ্ঞান নেই। একটা বেইমান, কুলাঙ্গার। ভাগ্য ভাল ও বলেনি এত গরম পড়ছে কেন, তার জন্যও তৃণমূল দায়ী।” বিজেপি শাসিত রাজ্যে এভাবে জলাধার দখল কেন সেই প্রশ্নও তুলেছেন তৃণমূল মুখপাত্র। এ রাজে্য একটি গাছ পড়ে গেলে বা প্রয়োজনে কেটে ফেলা হলে তার বদলে পাঁচটি গাছের চারা বসানো হয়। সে কথা উল্লেখ করেই কুণালের বক্তব্য, “ওদের রাজ্যগুলো এই তালিকায় পিছিয়ে কেন? এখানে সভ্যতার নিয়মে কিছু উন্নয়নের জন্য গাছে হাতও পড়ে, তার জন্য গাছ লাগানোর নীতি রয়েছে। শহরেও সবুজায়ন প্রকল্প চলছে।” শুভেন্দুকে তাঁর তোপ, “বিরোধী দলনেতা বড় বড় কথা বলছেন কী করে? ওঁর গোটা পরিবার, গোটা গুষ্টি তো এই দলে ছিলেন। তখন বলেননি কেন?”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.