সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: “বাংলায় আইনশৃঙ্খলা বলে কিছুই নেই। বাংলা জুড়ে ঘরে-ঘরে মজুত রয়েছে বোমা, পিস্তল। যেন দ্বিতীয় পাকিস্তান।” দক্ষিণ ২৪ পরগণার বিষ্ণুপুরের রঘুদেবপুরে স্থানীয় বিজেপির মহিলা মোর্চার নেত্রী রাধারাণী নস্করের গুলিবিদ্ধ হওয়ার প্রতিবাদে মঙ্গলবার থানা ঘেরাও কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে একথা বলেন সাংসদ অর্জুন সিং (Arjun Singh)। মহিলা মোর্চার রাজ্য সভানেত্রী অগ্নিমিত্রা পাল (Agnimitra Paul) মুখ্যমন্ত্রীকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বলেন, “ধর্ষণ আর খুনের রাজনীতি করে ভয়ের আবহ যতই বাংলায় তৈরি করা হবে, বিজেপি ততই ২০২১-এর ভোটে সিংহাসনের দিকে এগিয়ে যাবে”। প্রসঙ্গত, গুলিচালানোর ঘটনায় ইতিমধ্যেই ৬ অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। যদিও মূল অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারের দাবিতেই এদিন আন্দোলনে নামে বিজেপি। দীর্ঘক্ষণ অবরোধ করে রাখা হয় ১১৭ নম্বর জাতীয় সড়কও।
সোমবার সকালে নিজের বাড়িতেই গুলিবিদ্ধ হয়ে এখনও এসএসকেএম হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন বিষ্ণুপুর বিধানসভার চার নম্বর মণ্ডলের বিজেপির মহিলা মোর্চার কোষাধ্যক্ষ রাধারাণী নস্কর। এদিন, ধৃত ছ’জনকে আলিপুর আদালতে পাঠানো হয়। আদালত তাদের পুলিশ হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে। এদিকে ঘটনায় মূল অভিযুক্ত পঞ্চানন নস্করের গ্রেপ্তারের দাবিতে এদিন বিষ্ণুপুর থানা ঘেরাও করে অবস্থান বিক্ষোভ করে স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব। নেতৃত্ব দেন ডায়মন্ডহারবার সাংগঠনিক জেলার বিজেপি সভাপতি উমেশ দাস ও সহ-সভাপতি সুফল ঘাঁটু। থানার সামনে ১১৭ নম্বর জাতীয় সড়ক (ডায়মন্ডহারবার রোড) ঘন্টা খানেকেরও বেশি সময় অবরোধ করে রাখেন বিজেপি কর্মীরা। রাজ্য বিজেপির সহ সভাপতি ও সাংসদ অর্জুন সিং, জেনারেল সেক্রেটারি ও জোনাল অবজার্ভার সঞ্জয় সিং, রাজ্য মহিলা মোর্চার সভানেত্রী অগ্নিমিত্রা পাল, বিজেপি নেতা গৌতম চৌধুরি-সহ জেলা ও রাজ্য বিজেপির অন্যান্য নেতৃত্ব এদিন এই আন্দোলনে অংশ নেন।
বিজেপি কর্মীদের আন্দোলনে অংশ নিয়ে সাংসদ অর্জুন সিং বলেন, “বাংলা যেন দ্বিতীয় পাকিস্তান হয়ে গিয়েছে। পাকিস্তানের মত ঘরে-ঘরে বানানো হচ্ছে বোমা, আগ্নেয়াস্ত্র। সারা বাংলা জুড়েই মজুত রয়েছে সেসব। আইনশৃঙ্খলা বলে আর কিছুই নেই এই বাংলায়।” সাংসদ আরও বলেন, “পিসি-ভাইপোর কাছ থেকে ১৮টা আসন নিয়ে নিয়েছি। আগামী দিনে মানুষের আশীর্বাদ নিয়েই গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে বাংলা দখল করবই।” এদিন রাজ্য মহিলা মোর্চার সভানেত্রী অগ্নিমিত্রা পাল সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেন। বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মনে করেন এ রাজ্যে বিজেপি করা পাপ। তাই বিধানসভার ভোট যতই এগিয়ে আসছে, বিজেপি কর্মীদের উপর আক্রমণ বাড়ছে। আমাদের কার্যকর্তাদের মিথ্যে মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে। না পারলে খুন কিংবা খুনের চেষ্টা করে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করা হচ্ছে। রাজ্যে ধর্ষণ, খুন এখন জলভাত। এইভাবে ভয় পাইয়ে বিজেপিকে রোখা যাবে না।”
এদিকে এদিন গুলিবিদ্ধ রাধারাণীদেবীর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) সুব্রত চট্টোপাধ্যায়। আহত বিজেপি নেত্রীর বাড়িতে গিয়ে পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন অগ্নিমিত্রা পালও। জেলা বিজেপির প্রতিনিধিদল বিষ্ণুপুর থানায় কাছে ডেপুটেশন জমা দেন।এলাকা জুড়ে বোমা, পিস্তলের দাপাদাপি বন্ধ করার দাবি তোলা হয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.